এক বছর আগে ঠিক এই সময়টাতে অন্য রকম এক অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলেন আর্জেন্টিনা ফুটবল দল ও তাদের সমর্থকেরা। কাতার বিশ্বকাপে সৌদি আরবের কাছে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হারের পর ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল দলটি। পরে টানা ছয় ম্যাচ জিতে ৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ শিরোপা পুনরুদ্ধার করে। লিওনেল মেসিও নিজের ট্রফি ক্যাবিনেট সম্পূর্ণ করেন।
বিশ্বকাপ জেতার আগে ক্লাব পর্যায়ে ও ব্যক্তিগত অর্জনে সবকিছু জিতেছিলেন মেসি। অপেক্ষা ছিল শুধু বিশ্বকাপ শিরোপাটা উঁচিয়ে ধরার। কাতারে এক বছর আগে সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেন মেসি। সম্প্রতি আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয় নিয়ে বানানো এক প্রামাণ্যচিত্রে মেসি বলেছেন, বিশ্বকাপ জিতে তাঁর সব আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়েছে। তিনি এমন একজন, যিনি সবকিছু জিতেছেন।
বিশ্বকাপ জেতাটা কতটা আনন্দের ছিল, সেটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মেসি বলেছেন, ‘এটা সবারই আকাঙ্ক্ষার বিষয়। সবাই বড় স্বপ্ন দেখে এবং জাতীয় দলের হয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া সবচেয়ে বড় ব্যাপার। আমি সৌভাগ্যবান যে আমি ক্লাব পর্যায়ে বার্সেলোনার হয়ে এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে সবকিছু জিততে পেরেছি। শুধু এটাই (বিশ্বকাপ) আমার অধরা ছিল। খুব কমসংখ্যক মানুষ আছে, যারা বলতে পারে যে তারা সবকিছু জিতেছে। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ যে আমি তাদের একজন।’
পরিশ্রম ও একাগ্রতা দিয়ে কাজ করে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছানো সম্ভব বলেও মনে করেন মেসি, ‘আপনি যদি চেষ্টা, আত্মত্যাগ, কাজ ও বিনয়ী হয়ে কিছু চান, তাহলে শেষ পর্যন্ত আপনি নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন। পথটা কঠিন হতে পারে, কিন্তু নিজের স্বপ্নপূরণে আপনাকে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। আমি সব সময় ফুটবল খেলাটা ভালোবেসেছি। জাতীয় দলের হয়ে খেলাও ভালোবেসেছি।’
একসময় জাতীয় দলের হয়ে টানা ব্যর্থতার কারণে আর্জেন্টাইনদের কাছে ‘খলনায়কে’ পরিণত হয়েছিলেন মেসি। এমনকি ব্যর্থতার দায় নিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায়ও বলে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে মেসিই আর্জেন্টিনাকে জিতিয়েছেন বিশ্বকাপ।
নিজের খারাপ সময়কে মেসি মনে করেছেন এভাবে, ‘আমার খারাপ সময় গেছে। আমার পরিবার এবং যেসব মানুষ আমাকে ভালোবাসে তারাও এর মধ্য দিয়ে গেছে। (আর্জেন্টিনায় সমালোচকেরা) এ প্রজন্মের খেলোয়াড়দের প্রতি খুবই অন্যায্য আচরণ করেছিল। তারা আমাকে নিয়েও অনেক বাজে কথা বলেছে। তবে আমি বিদ্বেষী নই।’
এক বছর আগে বিশ্বকাপ জয় পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে বলেও মনে করেন মেসি, ‘আমি অনুভব করি যে এ জয় আমার জন্য পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে। আমি আর্জেন্টিনার সব মানুষের হৃদয় জিততে পেরেছি। আজ আর্জেন্টিনার ৯৫ কিংবা ১০০ ভাগ মানুষ আমাকে ভালোবাসে। এই অনুভূতি দুর্দান্ত।’