বার্সেলোনা কোচ জাভি হার্নান্দেজ
বার্সেলোনা কোচ জাভি হার্নান্দেজ

মেসিকে না পেয়ে ১০ নম্বরের খোঁজে জাভি

লিওনেল মেসিকে ফিরিয়ে দলের প্লে মেকিংয়ের শূন্যতা পূরণ করতে চেয়েছিলেন জাভি হার্নান্দেজ। গত জানুয়ারি থেকেই মেসির বার্সায় ফেরার গুঞ্জন বেশ গতি পেয়েছিল। শেষ পর্যন্ত মেসিকে ফেরানোর সেই মিশন আলোর মুখ দেখেনি। তিনি পাড়ি জমিয়েছেন ইন্টার মায়ামিতে।

এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে মেসির অভিষেককে ঘিরে চলছে নানা প্রস্তুতি। আর্জেন্টাইন মহাতারকা যখন নতুন শুরুর অপেক্ষায়, তখন স্পেনে হয়তো কিছুটা দুশ্চিন্তা নিয়েই সময় কাটাচ্ছেন জাভি।

বার্সা কোচের চাওয়া ছিল মেসিকে ফিরিয়ে প্লে মেকিংয়ে বৈচিত্র্য আনা। আর মেসির সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়াও ছিল দারুণ। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর এখন বিকল্প খুঁজতে হচ্ছে জাভিকে।

এরই মধ্যে সম্ভাব্য দুটি নাম হিসেবে শোনা যাচ্ছে বের্নার্দো সিলভা ও জিওভানি লো সেলসোর নাম। এই মুহূর্তে সিলভাকে দলে টানা অবশ্য একরকম অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে। ম্যানচেস্টার সিটির এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারকে আনতে হলে বার্সাকে আর্থিক জটিলতা মেটাতে হবে। এর আগেও সিলভাকে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল বার্সা, যদিও তা সফল হয়নি।

সিটিতে প্রতি মৌসুমে পারফরম্যান্সের ধার বেড়েছে সিলভার। যে কারণে সিটিও প্রতিবার মরিয়া হয়ে ধরে রেখেছে তাঁকে। গত মৌসুমেও সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৫ ম্যাচ খেলে ৭ গোল এবং ৮টি অ্যাসিস্ট করেছেন সিলভা।

তবে পরিসংখ্যান দিয়ে মাঠে তাঁর প্রভাব বোঝা কঠিন। পাশাপাশি দলের প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দারুণভাবে জ্বলে উঠতে পারেন এই পর্তুগিজ। গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের পথে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে দ্বিতীয় লেগে তাঁর জোড়া গোলই ফাইনালের পথে এগিয়ে দিয়েছিল সিটিকে। সব মিলিয়ে সিটির কাছ থেকে সিলভাকে নিয়ে আসা বার্সার জন্য মোটেও সহজ হবে না।

বার্সার সামনে থাকা অন্য বিকল্পটি হলেন লো সেলসো। তাঁকে পেতেও অবশ্য বার্সাকে লড়তে হতে পারে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে। তবে টটেনহামের কাছ থেকে তাঁকে নিয়ে আসা একেবারে অসম্ভবও নয়। স্পারদের সঙ্গে বার্সার সম্পর্ক বেশ ভালো, যার সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে কাতালান ক্লাবটি। পাশাপাশি সিলভার চেয়ে লো সেলসোর বাজারদরও কম হবে। সব মিলিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে সিলভার চেয়ে লো সেলসোকে আনা বার্সেলোনার জন্য সব দিক থেকে সহজ সমাধান হতে পারে।

নতুন প্লে মেকার আনার কাজটা যতই কঠিন হোক না কেন, বার্সার সামনে সেটি সফলভাবে সম্পন্ন করার কোনো বিকল্প নেই। গত মৌসুমে বার্সার খেলায় সৃষ্টিশীলতা ও বৈচিত্র্যের অভাব ছিল স্পষ্ট। মৌসুমজুড়ে দলের মিডফিল্ডাররা মাত্র ২১ গোলে অ্যাসিস্ট করেছেন। যেখানে সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের ভূমিকায় খেলা পেদ্রির অ্যাসিস্ট ছিল মাত্র ১টি। অন্যদিকে আরেক মিডফিল্ডার গাভির অ্যাসিস্ট ছিল ৭টি। এ ছাড়া বাকিদের মধ্যে সের্হিও বুসকেতস ও ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং ৪টি করে গোলে সহায়তা করেছেন।

প্রাক্‌–মৌসুম প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছেন জাভি

বার্সায় বর্তমানে ১০ নম্বর জার্সি পরেন আনসু ফাতি। দারুণ সম্ভাবনা নিয়ে এই লেফট উইঙ্গারের আগমন ঘটলেও নিজেকে এখনো সেভাবে চেনাতে পারেননি। চোট এবং খুব বেশি ম্যাচ–টাইম না পাওয়ায় নিজেকে মেলে ধরার ক্ষেত্রে বেশ ভুগিয়েছে তাঁকে। গত মৌসুমে ৫১ ম্যাচ খেললেও সব মিলিয়ে ফাতি ম্যাচ–টাইম পেয়েছেন ১,৮২৪ মিনিট। মাঠে নেমে মৌসুমে সব মিলিয়ে ১০ গোল করার পাশাপাশি সহায়তা করেছেন আরও ৪ গোলে। এর মধ্যে কয়েক দিন আগে তাঁর দলবদলের প্রসঙ্গও সামনে এসেছে। তবে শেষ পর্যন্ত বার্সায় থেকে গেলেও জাভির পূর্ণ আস্থা অর্জন করার কাজটা ফাতির জন্য সহজ হবে না।

এদিকে আগামী মৌসুমে বিপজ্জনক পরিস্থিতি এড়াতে এখন থেকেই মিডফিল্ড ও ফরোয়ার্ড লাইন শক্তিশালী করায় নজর দিচ্ছেন বার্সা কোচ জাভি। গত মৌসুমে বার্সার পাওয়া সাফল্যের ভিত ছিল তাদের ডিফেন্সিভ দৃঢ়তা। যে কারণে এবার সব দিক থেকেই একটি শক্তিশালী দল গড়তে চান এই স্প্যানিশ কিংবদন্তি। পাশাপাশি মিডফিল্ডে সৃষ্টিশীলতা ও বৈচিত্র্য বাড়াতে হলেও জাভির তেমন কাউকে দরকার।

ম্যানচেস্টার সিটি ছেড়ে বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছেন ইলকাই গুন্দোয়ান

দলবদলের শুরুতে গুন্দোয়ানের আগমন নিশ্চিতভাবেই শক্তি বাড়াবে মিডফিল্ডে। একই সঙ্গে গোল করার এবং গোল করানোর সামর্থ্য আছে গুন্দোয়ানের। তবে শুধু গুন্দোয়ানের ওপর নির্ভর করেও সৃষ্টিশীলতা ও বৈচিত্র্যে খুব বেশি পার্থক্য তৈরির সুযাগ নেই। ফলে নতুন কারও দিকেই হাত বাড়াতে হতে পারে জাভিকে।