আরও একবার!
লিগ কাপে টটেনহাম, চ্যাম্পিয়নস লিগে স্পোর্তিং লিসবন আর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে বোর্নমাউথের পর এবার ব্রাইটন—৩০ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বরের মধ্যে টানা চতুর্থ হার দেখে ফেলল ম্যানচেস্টার সিটি।
পেপ গার্দিওলা জমানায় তো বটেই, গত দেড় যুগে সিটি সমর্থকেরা এমন কিছু দেখেননি। এমনকি গার্দিওলা নিজেও তাঁর ১৭ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে কখনো এমন কিছুর মুখোমুখি হননি। দুর্গতির এখানেই শেষ নয়। তেতো স্বাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে আর্লিং হলান্ডকেও। প্রিমিয়ার লিগ পয়েন্ট তালিকায় চোখ রাখলে সিটি সমর্থকদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ তো পড়ারই কথা।
ম্যানচেস্টার সিটির এমন বাজে অবস্থার মূলে দলে চোটের মিছিল। এ বছরের ব্যালন ডি’অরজয়ী রদ্রি এসিএল চোটে লম্বা সময়ের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে গেছেন। গার্দিওলার দলের সেরা চার সেন্টার ব্যাক—রুবেন দিয়াজ, জন স্টোনস, মানুয়েল আকাঞ্জি ও নাথান আকেরাও দলে নেই। আর মাঝমাঠের অন্যতম প্রাণ কেভিন ডি ব্রুইনা চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরলেও খুব একটা স্বচ্ছন্দ্য মনে হচ্ছে না।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই টটেনহাম, বোর্নমাউথ ও লিসবনের কাছে হারের স্বাদ নিয়ে গতকাল ব্রাইটনের মাঠে নেমেছিল সিটি। ম্যাচে প্রথম গোলটি করেছে সিটিই, দলকে এগিয়ে দেন হলান্ড। প্রিমিয়ার লিগ ক্যারিয়ারে এর আগে কখনো গোল করে হারের হতাশায় মাঠ ছাড়তে হয়নি এই নরওয়েজিয়ানকে। এবার হলো। কারণ ৭৮ মিনিটে জোয়াও পেদ্রো আর ৮৩ মিনিটে ম্যাট ও’রাইলি গোল করে ব্রাইটনকে জেতান ২-১ গোলে।
২০০৬ সালের পর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা চার হার সিটি সমর্থকেরা দেখলেন এই প্রথম। বর্তমান মালিকপক্ষ সিটির মালিকানায় এসেছে এর ২ বছর পর, আর গার্দিওলার পা পড়েছে ১০ বছর পর। আবার গার্দিওলা নিজেও কখনো এভাবে টানা হারেননি। ২০০৭ থেকে কোচিং করিয়ে আসা এই স্প্যানিশের জন্যও এমন কিছু এই প্রথম। কাছাকাছি অভিজ্ঞতা আছে ২০১৪-১৫ মৌসুমে, যখন বায়ার্ন মিউনিখে টানা তিন হারের পর জার্মান কাপে পেনাল্টিতে হার দেখেছিলেন। ওই তিন হারের দুটি ছিল আবার বুন্দেসলিগায় ট্রফি নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর, যে কারণে খুব একটা গায়েও লাগেনি।
সেই গার্দিওলা সিটিকে টানা চারটি প্রিমিয়ার লিগ জেতানোর পর এখন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। ম্যাচ শেষে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো, এমন ফলের মাধ্যমে তাঁর দাপুটে রাজত্বের একটা যুগের অবসান হলো কি না? জবাবে বার্সেলোনা ও বায়ার্নের এই সাবেক কোচ বলেন, ‘মানুষ তো এটাই চায়, নাকি? এটা স্বাভাবিক। আমরা অনেক জিতেছি। আমি শুধু পুরো স্কোয়াডকে খেলার জন্য প্রস্তুত পেতে চাই।’
তবে সহসাই গার্দিওলা সেটা পাচ্ছেন না। অন্তত রদ্রির ফেরার সম্ভাবনা আপাতত নেই বললেই চলে। তবে সামনের ম্যাচগুলোতে সিটির ফল আরও কত খারাপ হতে পারে, এ নিয়ে বিচলিত নন গার্দিওলা, ‘যখন আমরা খারাপ খেলি, আমিই সবার আগে বলি ভালো হয়নি। কিন্তু আমার এখন সেই অনুভূতি হচ্ছে না।’
ব্রাইটনের কাছে সিটির হারের পর লিভারপুল নিজেদের মাঠে অ্যাস্টন ভিলাকে হারিয়েছে ২-০ ব্যবধানে। তাতে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুটি স্থানে অবশ্য পরিবর্তন আসেনি, শুধু ব্যবধানই বেড়েছে। শীর্ষে থাকা লিভারপুলের পয়েন্ট ১১ ম্যাচে ২৮। সিটি ৫ পয়েন্ট পিছিয়ে ২৩-এ। নটিংহাম ফরেস্ট ও ব্রাইটনের পয়েন্ট ১৯ করে, তবে নটিংহাম ১ ম্যাচ কম খেলেছে।