বসুন্ধরা কিংসের কোচ অস্কার ব্রুজোন
বসুন্ধরা কিংসের কোচ অস্কার ব্রুজোন

লড়তে পেরেই খুশি ব্রুজোন

অস্কার ব্রুজোন তাঁর শিষ্যদের কাছ থেকে লড়াই চেয়েছিলেন। তাঁর চাওয়া ছিল একটা ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের চ্যালেঞ্জটা নিক তাঁর দল। সামর্থ্যের চেয়েও বেশি দিক তাঁরা। গতকাল শারজা এফসির বিপক্ষে লড়াইটা মন্দ করেনি তাঁর দল বসুন্ধরা কিংস। ২-০ গোলে হেরে প্রিলিমিনারি রাউন্ড থেকে বিদায় নিলেও এশিয়ান ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ স্তরে নিজেদের শুরুটা মোটামুটি স্মরণীয় করে রাখতে পেরেছে কিংস।

শারজা এফসিতে খেলেছেন সাবেক বার্সেলোনা তারকা মিরালেম পিয়ানিচ ও পাকো আলকাসার। এই দুজনের বাইরেও শারজা দলে ছিলেন উঁচু মানের আরও কয়েকজন ফুটবলার। কাল বসুন্ধরা কিংস হেরেছে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার লুয়ানজিনিও পাহেইরার জোড়া গোলে। পিয়ানিচ-আলকাসারদের বিপক্ষে ম্যাচটা অনেকটাই শেখার ছিল তপু বর্মণ, বিশ্বনাথ, আনিসুর রহমানদের। সেই অভিজ্ঞতাটা যে তাদের দারুণ, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। শারজার শক্তি আর অভিজ্ঞতার কাছে হারলেও এ ম্যাচের অভিজ্ঞতা এশীয় স্তরে ভবিষ্যতে ভালোই কাজে লাগবে কিংসের।

কিংসের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোনের অধীনেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে টানা চারবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কিংস। দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিজেদের প্রমাণের আর কিছু বাকি নেই। এশীয় পর্যায়ে তাই দুই মৌসুম ধরেই কিছু একটা করার স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নরা। এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের চ্যালেঞ্জটা কঠিন হবে, এটা জানা ছিলই। এমনকি শঙ্কা ছিল বড় ব্যবধানে হারেরও। কিন্তু শঙ্কা সত্যি হয়নি। বরং সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারলে শারজার বিপক্ষেই ম্যাচটা অন্য রকম হলেও হতে পারত।

শারজা এফসির বিপক্ষে লড়াইটা মন্দ করেনি তাঁর দল বসুন্ধরা কিংস

ব্রুজোন তাই এমন ফলে যে খুব খুশি, উচ্ছ্বসিত—এমনটা বলা যাবে না। বরং তাঁর মনে খচখচানিও আছে। সেটি অবশ্যই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে না পারার কারণে। ম্যাচের আগে তো তিনি বলেই দিয়েছিলেন, শারজার বিপক্ষে সুযোগের সদ্ব্যবহার করাটা বেশি জরুরি। সেই সঙ্গে নিজেদের সামর্থ্যের বাইরেও কিছু দেওয়া। প্রথম লক্ষ্যটা পূরণ হয়ে যেত প্রিমিয়ার লিগে ২০ গোল করা ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার দরিয়েলতন গোমেজ যদি সহজ সুযোগ নষ্ট না করতেন। তবে লক্ষ্যের দ্বিতীয় অংশটা যে পূরণ হয়েছে, সেটি বলাই যায়।

আমি সন্তুষ্ট যে বসুন্ধরা কিংসের খেলোয়াড়েরা শারজা এফসির ভালো পরীক্ষা নিয়েছে। পুরো ম্যাচেই আমরা লড়াই করেছি।
অস্কার ব্রুজোন, কোচ, বসুন্ধরা কোচ

কাল রাতে ম্যাচের পর প্রথম আলোকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় ব্রুজোন সুযোগ নষ্ট করার আক্ষেপটা করেছেন। তবে তিনি সন্তুষ্ট তাঁর দলের লড়াইয়ের জন্য, ‘শারজার বিপক্ষে ফলটা আরও ভালো হলে ভালো লাগত। আমরা সুযোগ নষ্ট করেছি। তবে আমি সন্তুষ্ট যে বসুন্ধরা কিংসের খেলোয়াড়েরা শারজা এফসির ভালো পরীক্ষা নিয়েছে। পুরো ম্যাচেই আমরা লড়াই করেছি।’

লড়াইটাই দরকার ছিল। তবে আক্ষেপ সঙ্গী হবে ভালো করেই। দরিয়েলতনের সুযোগ নষ্ট করার পাশাপাশি শারজার দুটি গোলে বসুন্ধরার রক্ষণভাগেরও কিছু ভুল আছে। লুয়ানজিনিওর প্রথম গোলে পিয়ানিচ যেভাবে খুব দ্রুত কাট ব্যাক করেছিলেন, সেটি কিংসের রক্ষণ বুঝতেই পারেনি। দ্বিতীয় গোলটিতেও রক্ষণের আরও একটু সতর্ক থাকার প্রয়োজন ছিল। তবে স্কোরলাইন যা-ই হোক। এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগে কিংসের শুরুটা একেবারে মন্দও নয়। প্রথম বাংলাদেশি দল হিসেবে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে নেমে নিজেদের লড়াকু মানসিকতার পরিচয়টা এশিয়ার অন্যতম শীর্ষ এক ক্লাবের বিপক্ষে রাখতে পেরেছে কিংস।