বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নেওয়ার দশ দিনের মাথায় পিএসজির আরও একটি বিপর্যয়। বায়ার্ন-হারের পরপরই ফ্রেঞ্চ লিগের আগের ম্যাচেই পয়েন্ট তালিকার ১৫তম স্থানে থাকা ব্রেস্তের বিপক্ষে পয়েন্ট খোয়ানোর অবস্থা থেকে কোনোমতে জয় তুলেছিলেন মেসি-এমবাপ্পেরা। কিন্তু আজ রেনের বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরেই মাঠ ছাড়তে হলো তাদের। এটি এ বছরে রেনের কাছে পিএসজির দ্বিতীয় হার।
ম্যাচে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছিল পিএসজিই। কিন্তু কিলিয়ান এমবাপ্পের গোল বাতিল হয়ে যায় অফসাইডে। কিন্তু এর পরপরই (ম্যাচের ৪৫ মিনিটে) কার্ল তোকো একাম্বির দারুণ এক গোলে এগিয়ে যায় রেনে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই কালিমুয়েন্দু আরও বড় সর্বনাশ করেন পিএসজির। রেনেকে এগিয়ে দেন ২-০ গোলে।
এটি এ মৌসুমে পিএসজির লিগে চতুর্থ হার। ২০২৩ সালের শুরুটা কেন যেন একেবারেই ভালো যাচ্ছে না দলটির। লিগের চারটি হারের প্রতিটিই যে নতুন বছর শুরু হওয়ার পর। গত জানুয়ারিতেই রেনের কাছে হেরেছিল পিএসজি। এই হারে প্রতিদ্বন্দ্বী মার্শেইয়ের কিছুটা সুবিধাই হয়ে গেল। রেঁসের বিপক্ষে আজকের অপর ম্যাচ জিতলেই পিএসজির সঙ্গে তারা পয়েন্টের ব্যবধান ৭-এ নামিয়ে আনতে পারবে।
এই হারে আরও এটি গৌরব মাটিতে মিশে গেছে পিএসজির। ২০২১ সালের এপ্রিলের পর এই প্রথম নিজেদের মাঠ পার্ক দেস প্রিন্সেসে হার দেখল পিএসজি। দিনের হিসেবে এটি ৭৫১ দিন। গোটা ম্যাচেই সুযোগ নষ্টের খেসারত দিয়েছে মেসি-এমবাপ্পের দল। একই সঙ্গে বিশ্বের সেরা ফুটবলারদেরও সৃষ্টিশীলতার অভাব ছিল গোটা ম্যাচে। চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বাদ পড়ার পর ফ্রেঞ্চ লিগের শিরোপাই যেখানে পিএসজির একমাত্র লক্ষ্য, সেখানে এই হার কোচ ক্রিস্তফ গালতিয়েরের ওপর চাপ আরও বাড়িয়ে দেবে—এটা বলাই যায়।
কোচের কৌশল নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। রেনের বিপক্ষে আজকের ম্যাচেও দলের যাবতীয় কৌশল এমবাপ্পেকে হন্যে হয়ে খোঁজার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। অন্য দিকে প্রেসনেল কিমপেম্বে আর মার্কুইনোসের অভাবটা খুব ভালোভাবেই টের পাওয়া গেছে রক্ষণে। এ দুই তারকার চোটজনিত অনুপস্থিতিতে পিএসজি রক্ষণভাগ ছিল আত্মবিশ্বাসহীন।
এমবাপ্পে ম্যাচে দুটি ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু দুটিই ঠেকিয়ে দেন রেনে গোলকিপার স্টিভ মানদান্দা। প্রথমটি ২৬ মিনিটে, দ্বিতীয়টি দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে। উল্টো দিকে রেনে গোলের সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে দারুণভাবেই।
৪৫ মিনিটের সময় তোকো একাম্বি দারুণ একটা লম্বা থ্রু পাস ধরে গোল করেন। লক্ষ্যে নিজেদের দ্বিতীয় শটেই দ্বিতীয় গোলটি পেয়ে যায় রেনে। লেসলি ওগোচুকোর ক্রস থেকে গোল করেন কালিমুয়েন্দু।
ম্যাচে মেসি ছিলেন নিষ্প্রভ। তবে তিনি চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সেই চেষ্টাগুলি বিকশিত হয়নি সেভাবে। অবধারিতভাবেই পিএসজির ক্ষুব্ধ সমর্থকদের দুয়ো শুনতে হয়েছে তাঁকে। মাঠে তাঁকে দেখে যেকেউই বলে দেবে পিএসজির তাঁবুতে খুব একটা আনন্দে নেই বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন তারকা। শুধু মেসিই কেন, রেনের বিপক্ষে পুরো পিএসজিকেই তো দেখে মনে হয়েছে অসুখী একটি পরিবার।