মলদোভার বিপক্ষে ১ পয়েন্ট পেলেই ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের মূল পর্বে খেলা নিশ্চিত—এমন সমীকরণ সামনে রেখে কাল শেষ ম্যাচ খেলতে নেমেছিল চেক প্রজাতন্ত্র। ঘরের মাঠে ড্র নয়, ৩-০ ব্যবধানে জিতেই মূল পর্বে উঠে গেছে চেক প্রজাতন্ত্র।
জয়ের আনন্দে খেলোয়াড়রা যখন পুরো মাঠ প্রদক্ষিণ ও সমর্থকদের অটোগ্রাফ দেওয়ায় ব্যস্ত, তখনই এল নতুন এক খবর। ম্যাচ শেষ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই চেক প্রজাতন্ত্রের কোচ ইয়ারোস্লাভ সিলহাভি জানিয়ে দিলেন, দলের সঙ্গে এটাই ছিল তাঁর শেষ ম্যাচ। পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তিনি! তার মানে, আগামী বছর ইউরোয় নতুন কোচের অধীনে খেলতে দেখা যাবে চেক প্রজাতন্ত্রকে।
দলকে ইউরোর মূল পর্বে তুলেও সিলহাভির এমন আকস্মিক পদত্যাগ নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলের বিপক্ষে ভালো খেলতে না পারা এবং আকর্ষণীয় ফুটবল উপহার দিতে না পারায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন সিলহাভি।
ইউরোয় জায়গা করে নিলেও দলের পারফরম্যান্স ছিল গড়পড়তা। এ বছর তাঁর অধীনে ১০ ম্যাচে ৫টিতে জিতেছে মধ্য ইউরোপের দেশটি, ড্র করেছে ৪টি এবং হেরেছে ১টি। যেসব দলের বিপক্ষে জিততে পারেনি, এর বেশির ভাগেই ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে তাদের চেয়ে পেছনে।
সিলহাভির অধীনে খেলোয়াড়রা প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে না পারার ব্যাপার তো ছিলই, সঙ্গে যোগ হয়েছিল তাঁর ‘কড়া হেডমাস্টার’ হয়ে ওঠা। গত শনিবার তাঁকে না জানিয়েই পানশালায় গিয়েছিলেন তিন ফুটবলার ভ্লাদিমির কুফাল, ইয়াকুব ব্রাবেক ও ইয়ান কুখতা। অভ্যন্তরীণ নিয়ম ভঙ্গের দায়ে ওই তিন ফুটবলারকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন সিলহাভি।
পদত্যাগের ঘোষণা দিতে গিয়ে সিলহাভি বলেছেন, ‘যদিও আমরা এখন খুব খুশি, তবে সিদ্ধান্তটা আমি ম্যাচের আগেই নিয়েছিলাম। (চেক প্রজাতন্ত্র ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের) সভাপতি পিওতর ফুসকাকেও বিষয়টি জানিয়েছিলাম। আমি বিশাল চাপের মধ্যে ছিলাম। মাঝেমধ্যে মনে হচ্ছিল কিছুই বুঝতে পারছি না। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে এটাও একটা কারণ।’
চেক প্রজাতন্ত্রকে ইউরোর মূল পর্বে তোলার কৃতিত্ব দলের সবাইকে দিয়েছেন ৬২ বছর বয়সী কোচ, ‘এটা আমার একার কৃতিত্ব নয়, পুরো দলই এটা বাস্তবায়ন করেছে। আমি আমার কাজ ঠিকঠাক করতে পেরেছি এবং দলকে ভালো অবস্থানে রেখে যেতে পারছি—এই উপলব্ধিটা দারুণ।’
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন সিলহাভি। পাঁচ বছরের বেশি সময় তাঁর অধীনে ৫৬টি ম্যাচ খেলেছে চেক প্রজাতন্ত্র। জিতেছে ২৬টি, হেরেছে ২০টি, ড্র করেছে বাকি ১০টি ম্যাচ। সর্বশেষ ২০২০ ইউরোয় ইংল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া ও স্কটল্যান্ডের সঙ্গে ‘মৃত্যুকূপে’ পড়েও দলকে কোয়ার্টার ফাইনালে তুলেছিলেন। জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে সেটাই ছিল তাঁর সেরা সাফল্য।