পিএসজি কোচ ক্রিস্তফ গালতিয়ের বিশ্বকাপের আগেই বলে রেখেছিলেন কথাটা। তিনি চান তাঁর দলের কেউ বিশ্বকাপ জিতুক। পিএসজির কেউ যদি নিজেদের জাতীয় দলকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করাতে পারেন, তা প্যারিসের ক্লাবটির জন্য খুব বড় অর্জন হবে। গালতিয়ের হয়তো কথাটা বলেছিলেন তাঁর দলের তিন মহাতারকা লিওনেল মেসি, নেইমার আর কিলিয়ান এমবাপ্পেকে উদ্দেশ্য করেই। শেষ পর্যন্ত পিএসজির জন্য সেই বিশ্বজয়ের অর্জনটা বয়ে নিয়ে এসেছেন মেসি। তা-ও ফাইনালে পিএসজিরই সতীর্থ এমবাপ্পেকে হারিয়ে।
মেসির জায়গায় থাকতে পারতেন এমবাপ্পে কিংবা নেইমারও। মরক্কোর আশরাফ হাকিমিও তো সেমিফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পিএসজির ‘বিশ্বজয়ী’ ফুটবলার আর্জেন্টাইন তারকাই। সে কারণে মেসির ফেরাটা উদ্যাপনই করেছেন পিএসজির খেলোয়াড় ও কর্তারা। মেসিকে দেওয়া হয়েছে গার্ড অব অনার। তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বিশ্বজয়ী পিএসজি ফুটবলার হিসেবে স্মারক।
মেসির এই সংবর্ধনার মুহূর্তে ছিলেন না এমবাপ্পে। ফাইনালে এমবাপ্পে-মেসির সমানে সমান টক্করের পর দুজনের সম্পর্ক নিয়ে অনেক কথাই হয়েছে। সবাই অপেক্ষায় ছিলেন পিএসজি ক্লাব প্রাঙ্গণে দুজনের পুনর্মিলন দেখার, কিন্তু সেটি হয়নি। মেসি আসার আগেই ফরাসি তারকা ছুটি নিয়ে বন্ধু আশরাফ হাকিমিকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গিয়েছিলেন। নেইমার সেদিন ছিলেন। মেসিকে সাদরেই গ্রহণ করেছেন তিনি।
সেদিন মেসিকে কী বলে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন নেইমার!
গত বুধবার পিএসজি ট্রেনিং কমপ্লেক্সে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই মেসিকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। খেলোয়াড়-কর্মকর্তাদের গার্ড অব অনারে অবশ্য ফুটবলপ্রেমীদের চোখ খুঁজে ফিরেছে নেইমারকে। তবে নেইমারের সঙ্গে মেসির প্রথম দেখা হয় দলের মেডিকেল রুমে।
বন্ধু মেসিকে দেখেই নেইমার বলে ওঠেন, ‘কী খবর, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন!’এরপর দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে আরও কিছুক্ষণ কথা বলেন। প্রতিউত্তরে মেসি নেইমারের বিশ্বকাপ-অভিযান নিয়ে কিছু বলেছিলেন কি না, সেটি অবশ্য জানা যায়নি।
মেসিকে ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন’ বলে সম্বোধন করার সঙ্গে সঙ্গেই হয়তো নেইমারের মন ফ্ল্যাশব্যাকে চলে গিয়েছিল প্রায় এক মাস পেছনে। ক্রোয়োশিয়ার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে তাঁর দুর্দান্ত এক গোলেই জয় দেখছিল ব্রাজিল। কিন্তু ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে গোল খেয়ে ব্রাজিলকে নামতে হয় টাইব্রেকারে।
শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয় নেইমারের দলকে। বিদায়ের পর কেঁদেছিলেন নেইমার। টানা দুটি বিশ্বকাপে ব্রাজিলের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়টা যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি।
ফাইনালের পর বন্ধু মেসিকে টুইট করে অভিনন্দন জানাতে অবশ্য মোটেও দেরি করেননি ব্রাজিল তারকা।