ম্যাচটা যেন ভুল আর ভুলের প্রায়শ্চিত্তের। প্রথমার্ধে পেনাল্টি মিস করলেন আর্লিং হলান্ড, গোলবঞ্চিত হলো সিটি। দ্বিতীয়ার্ধে এই হলান্ডই দারুণ হেডে গোল করে এগিয়ে দিলেন দলকে। আবার শেষ দিকে রদ্রির পায়ে লেগে বল দিক পাল্টানোয় গোল হজম করল সিটি। তিন মিনিট পরই জোরালো শটে গোল এনে দিলেন তিনি।
ভুল আর ভুলের প্রায়শ্চিত্তের ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত শেফিল্ড ইউনাইটেডকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। মৌসুমে এটি সিটির তৃতীয় জয়। এ জয়ের সুবাদে লিগ পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেও উঠে গেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। প্রথম তিন ম্যাচ থেকে আর কারও ৯ পয়েন্ট তোলার সুযোগ না থাকায় সপ্তাহটা শীর্ষে থেকেই করবে সিটি।
পিঠের অস্ত্রোপচার পরবর্তী পুনর্বাসনে থাকায় সিটির ডাগআউটে ছিলেন না পেপ গার্দিওলা। দায়িত্ব সামলান তাঁর সহকারী জুয়ানমা লিলো। বরাবরের মতো শুরু থেকে বল দখলে রেখে একের পর এক আক্রমণই করে গেছেন হলান্ড-হুলিয়ান আলভারেজরা। এর মধ্যে ২২তম মিনিটে ফ্রি কিক থেকে পাওয়া বল শেফিল্ডের জালে জড়িয়ে দিয়েছিলেন নাথান একে। তবে রদ্রি অফসাইডে থাকায় সেটি গোল হয়নি।
২৭তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল সিটি। বক্সের ভেতরে হলান্ড ডিফেন্ডারদের দ্বারা ঘেরাও হয়ে যাওয়ায় বল বাড়ান পাশে। শেফিল্ডের এক খেলোয়াড়ের গায়ে লাগার পর বল পেয়ে যান আলভারেজ, তবে দারুণ সেভে তাঁকে গোলবঞ্চিত করেন গোলরক্ষক ফোডারিংহাম।
এর দশ মিনিট পর আলভারেজের ক্রস বক্সের ভেতর জন এগানের হাতে লাগলে পেনাল্টি পায় সিটি। বার গজ দূর থেকে নেওয়া শটে হলান্ড গোলরক্ষক ফোডারিংকে ভুল দিকে পাঠাতে পারলেও বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি, পোস্টের নিচের অংশে লেগে ফিরে আসে। ৮৩ শতাংশ বলে দখল আর ১২টি শট নিয়েও সিটিকে বিরতিতে যেতে হয় গোলহীন হয়ে।
তবে ৬৩ মিনিটে দারুণ হেডে ‘পেনাল্টি-পাপে’র ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করে ফেলেন হলান্ড। বাঁ দিক থেকে জ্যাক গ্রিলিশের বাড়ানো ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে বল জড়িয়ে দেন জালে। এই এক গোল নিয়ে ম্যাচ সমাপ্তির দিকে গড়ালেও স্বস্তিতে ছিল না সিটি। লিগে এখনো কোনো পয়েন্ট না পাওয়া দলটি প্রায়ই হানা দিচ্ছিল সিটির বক্সে। তেমনই এক আক্রমণের ধারায় ৮৫ মিনিটে সমতা নিয়ে আসে শেফিল্ড। বদলি নামা জাইদেন বোগলের শট জালে যাওয়ার আগে রদ্রির পায়ে লেগে খানিকটা দিক পাল্টায়, জায়গামতো থাকলেও এদেরসন আর ধরতে পারেননি। নিজের ওপর বিরক্তিতে বেশ কয়েকবার মাটিতে পা আছড়াতে দেখা যায় রদ্রিকে।
তবে তিন মিনিট পরই দলকে জয়সূচক গোল এনে দেন ২৭ বছর বয়সী স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। কাইল ওয়াকার ক্রস বাড়িয়েছিলেন ফিল ফোডেনের দিকে। ফোডেন নিয়ন্ত্রণে নিতে না পারলে পেয়ে যান কাছে থাকা রদ্রি। এরপরই জোরালো শটে বল জালে। যে গোল পরের দশ মিনিট ধরে রেখে ২-১ ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিটি।
২০১৬-১৭ সালের পর এই প্রথম মৌসুমের শুরুর তিন ম্যাচই জিতল সিটি। প্রিমিয়ার লিগে সর্বশেষ ১২ মৌসুমে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের টানা তিন জয়ে শুরুর একটি দ্বিতীয় ঘটনা। এর আগে ২০২০-২১ মৌসুমে তিন জয়ে শুরু করতে পেরেছিল লিভারপুল।