ইন্টার মায়ামির অনুশীলনে লিওনেল মেসি
ইন্টার মায়ামির অনুশীলনে লিওনেল মেসি

মায়ামিতে প্রথম দিন: ৩ ঘণ্টা আগে মাঠে হাজির মেসি

লিওনেল মেসিকে এক শব্দে বর্ণনা করা কি খুব কঠিন? সম্ভবত না। কারও চোখে তিনি ‘কিংবদন্তি’, কারও চোখে আবার ‘সেরা।’ ডেভিড বেকহামও মেসিকে এক শব্দে ধারণ করলেন। ইন্টার মায়ামির সহমালিক ও ইংল্যান্ডের সাবেক এই মিডফিল্ডার আর্জেন্টাইন তারকাকে এক শব্দে বর্ণনা করেছেন এভাবে—‘বিজয়ী’।

রিও ফার্ডিনান্ডের পডকাস্টে এ কথা বলেছেন বেকহাম। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সতীর্থ হিসেবে ফার্ডিনান্ডকে খুব বেশি দিনের জন্য পাননি বেকহাম। তাঁর শো–তে উপস্থিত হয়ে মেসিকে নিয়ে দারুণ এক স্মৃতিচারণা করেছেন রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই মিডফিল্ডার। মেসির যে বিষয়টি তাঁকে সবচেয়ে প্রভাবিত করেছে, সেটাও বলেছেন। আর এসব মিলিয়েই মেসিকে মজ্জাগতভাবে বিজয়ী মানসিকতার খেলোয়াড় মনে হয়েছে বেকহামের কাছে।

সে প্রথম যেদিন আমাদের অনুশীলন মাঠে এসেছিল, সেদিনের ঘটনা শুনুন। সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে সে মাঠে এসেছিল। তাকে মাঠে ঢুকতে দিতে একজন লোক ছাড়া তখন সেখানে কেউ ছিল না। অথচ সকাল ১০টার আগে দলের অনুশীলন শুরু হয় না।
মেসিকে নিয়ে ইন্টার মায়ামির সহমালিক ডেভিড বেকহাম

পিএসজি ছেড়ে গত বছরের জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেন মেসি। ফোর্ট লডারডেলের এই ক্লাবে মেসির দিনযাপনের গল্প তুলে ধরেন বেকহাম। ‘রিও ফার্ডিনান্ড পডকাস্ট’ শো–তে বলেছেন সেই গল্প, ‘শেখানোর বিষয়েও লিও খুব ভালো। একাডেমি থেকে উঠে আসা তরুণদের শেখানোতে বেশ ভালো করে। সে কোনো খেলোয়াড়কে তার চেয়ে ছোট ভাবতে দেয় না। সে এমন খেলোয়াড়, যে অনুশীলনে তরুণদের শেখায়। একাডেমিতে খুদেদের খেলাও দেখে। জিমে ঢোকে সবার আগে, বের হয় সবার পরে।’

ইন্টার মায়ামির সহমালিক ডেভিড বেকহামের সঙ্গে মেসি

বেকহাম এরপর বলেন, ‘নিজের মধ্যে এই তাড়না না থাকলে আমার মনে হয় না কেউ এই পর্যায়ে উঠতে পারে। সে প্রথম যেদিন আমাদের অনুশীলন মাঠে এসেছিল, সেদিনের ঘটনা শুনুন। সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে সে মাঠে এসেছিল। তাকে মাঠে ঢুকতে দিতে একজন লোক ছাড়া তখন সেখানে কেউ ছিল না। অথচ সকাল ১০টার আগে দলের অনুশীলন শুরু হয় না।’

৩৭ বছর বয়সেও মেসির এমন নিবেদনকে অন্য চোখে দেখেন বেকহাম। ফার্ডিনান্ড তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ইন্টার মায়ামির বাকিরা অনুশীলনে আসার আগে মেসি জিমে কী করেন? উত্তর শুনুন বেকহামের মুখেই, ‘প্রস্তুতি নেয়। জিমে নিজেকে তৈরি করে। একজন তরুণের কাছ থেকে যা যা প্রত্যাশা থাকে, সে এই বয়সেও এসব করে যাচ্ছে। ক্যারিয়ারে সে যা কিছু জিতেছে, সেসব দেখে প্রত্যাশা করতে পারেন, এখন একটু রয়েসয়ে খেললেই পারে। তাকে যদি এক শব্দে বর্ণনা করতে হয়, তাহলে বলব—বিজয়ী। যা কিছু জিতেছে, সেই অর্থে নয়, কারণ সে এখনো ক্ষুধার্ত। এখনো শিরোপা জিততে চায়। খেলোয়াড়েরা ঠিকমতো কিছু করতে না পারলে এখনো রেগে যায়।’

বেকহাম বলে যান, ‘ম্যাচ হারলে সে এখনো রেগে যায়। এমনকি খেলতে না পারলেও মেজাজ হারায়। খেলতে না পারলে কিংবা চোটে পড়লেও প্রতিটি ম্যাচে থাকে। অথচ তার প্রতিটি ম্যাচেই থাকার প্রয়োজন নেই। ব্যক্তি ও খেলোয়াড় হিসেবে সে এমনই। অবিশ্বাস্য লাগে।’

ইন্টার মায়ামিতে সময়টা ভালোই কাটছে মেসির

এমএলএস গত কয়েক বছরে বেশ এগিয়েছে বলেও মনে করেন বেকহাম। মায়ামি মালিকের আশা, মেসি যোগ দেওয়ার পর বৈশ্বিকভাবে এই প্রতিযোগিতা আরও এগিয়ে যাবে এবং আরও সুনাম কামাবে, ‘গত কয়েক বছরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে (এমএলএসে)। এর অংশ হতে পেরে খুব গর্ব লাগে। জানি, এখনো অনেক কাজ করতে হবে। তবে আমি মনে করি, মায়ামিতে আমরা যা করেছি, আমেরিকায় যখন লিওর মতো কাউকে আনবেন, সব সময়ই বলে এসেছি, এটা আসলে উপহার।’