কিলিয়ান এমবাপ্পেকে পাওনা বেতন বাবদ সাড়ে পাঁচ কোটি ইউরো দিতে পিএসজিকে নির্দেশ দিয়েছে ফ্রেঞ্চ লিগের আইনি কমিশন। বৃহস্পতিবার কমিশন এই নির্দেশ দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ফ্রেঞ্চ লিগ। তবে প্যারিসের ক্লাবটি এই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নয়। সামনে অন্য কোনো আদালতে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে পিএসজি।
এর আগে এমবাপ্পে ও পিএসজির মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিল কমিশন। তবে এমবাপ্পের দিক থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
গত জুলাইয়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়া এমবাপ্পের অভিযোগ, পিএসজিতে অবস্থানকালীন শেষ তিন মাসের বেতন ও বোনাসের একটি অংশ তাঁকে দেওয়া হয়নি। যার পরিমাণ সাড়ে পাঁচ কোটি ইউরো বা প্রায় ৭২৫ কোটি টাকা। তবে পিএসজির দাবি, আগেই নিজের প্রাপ্য অর্থ ছাড় দিয়েছিলেন এমবাপ্পে। এ কারণে ২৫ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড ক্লাবের কাছে কোনো টাকা পাওনা নন।
বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, বুধবার প্যারিসে আইনি কমিশনের শুনানিতে অংশ নেন পিএসজি কর্মকর্তা ও এমবাপ্পের প্রতিনিধিরা। পরদিন এমবাপ্পেকে অর্থ পরিশোধের জন্য পিএসজিকে আদেশ দিয়েছে কমিশন। আর সেটি এক সপ্তাহের মধ্যে। তবে এই সিদ্ধান্ত জানানোর ক্ষেত্রে কমিশনের এখতিয়ার সীমিত জানিয়ে পিএসজি বলেছে, ‘এ বিষয়ে পূর্ণ সিদ্ধান্ত প্রদানে কমিশনের আইনি সুযোগ সীমিত। এই মামলা অবশ্যই অন্য কোনো আদালতে ওঠাতে হবে। সামনের মাস ও বছরগুলোতে পিএসজিতে সব বিষয় তুলে ধরবে।’
ফ্রেঞ্চ লিগের (এলএফপি) যে কমিশন পিএসজিকে অর্থ পরিশোধের আদেশ দিয়েছে, সেটি ফ্রান্সের ফুটবলে শীর্ষ দুই স্তরের বিষয় দেখভাল করে। পিএসজি ফরাসি লিগের শীর্ষ স্তর ‘লিগ আঁ’–এর দল।
এমবাপ্পে ও পিএসজির মধ্যে বেতন–বোনাসের এই বিবাদের কেন্দ্রেও আর্থিক বিষয়ই জড়িত। সাত বছর পিএসজিতে কাটানো এমবাপ্পে ক্লাবটির সঙ্গে সর্বশেষ চুক্তি সই করেছিলেন ২০২২ সালে। দুই বছরের চুক্তির সঙ্গে এক বছর বাড়ানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু এমবাপ্পে ২০২৩ সালে জানিয়ে দেন চুক্তির মেয়াদ নবায়ন করবেন না। এমবাপ্পের এই সিদ্ধান্তে পিএসজি সামনে তৈরি হয় আর্থিক সমীকরণের কঠিন পথ। চুক্তির বাকি বছর খেলে বিদায় নিলে এমবাপ্পের দলবদল থেকে কিছুই পাবে না পিএসজি, আর কিছু পেতে হলে বিক্রি করে দিতে হবে ওই সময়ই।
পিএসজি দ্বিতীয় পথে হাঁটতে গিয়ে সৌদি ক্লাব আল হিলালে এমবাপ্পেকে বিক্রির উদ্যোগ নেয়। তবে এমবাপ্পে তাতে রাজি হননি। দুই পক্ষের এই অচলাবস্থার মধ্যে ২০২৩–২৪ প্রাক্–মৌসুমের বিদেশ সফরে নেওয়া হয়নি এমবাপ্পেকে। খেলানো হয়নি মৌসুমের প্রথম লিগ ম্যাচেও। একপর্যায়ে ক্লাব ও খেলোয়াড়ের মধ্যে ‘গঠনমূলক ও ইতিবাচক’ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে পিএসজি তাঁকে খেলাতে শুরু করে। মূলত ওই সময়ই এমবাপ্পে তাঁকে দলে পুনর্বাসনের বিনিময়ে প্রাপ্য বোনাস ছাড় দিয়েছেন বলে দাবি পিএসজির, যা এখন আইনি লড়াইয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে।