লিওনেল মেসি তাহলে স্বরূপে ফিরলেন!
চলতি কাতার বিশ্বকাপে তিনি ছন্দেই আছেন। প্রতি ম্যাচেই নিজেকে ছাড়িয়ে নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছেন। মাঠের পারফরম্যান্সে তাই নতুন করে তাঁর স্বরূপে ফেরার সুযোগ নেই। তাহলে স্বরূপে ফেরার প্রশ্নটা কেন আসছে?
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে অচেনা আগ্রাসী মেসিকে দেখা গিয়েছিল। যিনি রেফারি, প্রতিপক্ষের কোচ, এমনকি প্রতিপক্ষ দলের ফুটবলারের ওপরও ম্যাচ শেষে প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তবে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে কাল রাতে সেমিফাইনাল জয়ের পর ফিরে গেলেন পুরোনো রূপে।
মাঠে আরও একবার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে হলেন ম্যাচসেরা। তারপর দেখা গেল চিরকালের সেই বিনয়ী মেসিকে। নিজে একটি গোল করছেন, গোল করিয়েছেন, তারপরও বলেছেন, ম্যাচসেরার পুরস্কারটি তাঁর সতীর্থ হুলিয়ান আলভারেজের প্রাপ্য।
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা জিতেছে ৩-০ গোলে। তরুণ ফরোয়ার্ড হুলিয়ান আলভারেজ করেন জোড়া গোল। আলভারেজকে ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার আখ্যা দিয়ে মেসি বলেন, ‘আমরা দল হিসেবে খেলি। এটাই আমাদের সবচেয়ে ভালো গুন। এই ম্যাচে আলভারেজ দুর্দান্ত খেলেছে, অসাধারণ। ও মাঠে সবার চেয়ে বেশি দৌড়েছে, অনেক গোলের সুযোগ তৈরি করেছে। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছিল আলভারেজ। ম্যাচসেরার পুরস্কার আলভারেজের প্রাপ্য।’
আলভারেজ পারফরম্যান্স দিয়ে মেসিকে এই কথা বলতে বাধ্যই করেছেন। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয় ও তৃতীয় গোলটি করেছেন এই ফুটবলার। এমনকি প্রথম গোলেও অবদান আছে তাঁর। কারণ, আর্জেন্টিনার পেনাল্টিটা তিনিই আদায় করেছিলেন। তাঁর করা দ্বিতীয় গোলটি নিয়ে আলোচনা এখনো শেষ হয়নি। যে গোলটি মনে করিয়ে দিয়েছে ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যারাডোনার সেই গোলটিকে।
তবে ৬৯ মিনিটের মেসি-জাদুর ছায়ায় ঢাকা পড়ে যায় সবকিছু। ডান পাশ দিয়ে ক্রোয়াট রক্ষণকে এলোমেলো করে দিয়ে যেভাবে কাট ব্যাক করে আলভারেজকে পাস বাড়িয়েছেন, তাতে মেসির চরম নিন্দুকও হয়তো বলতে বাধ্য হয়েছেন, মেসির এই ‘অ্যাসিস্ট’ সম্ভবত টুর্নামেন্টের সেরা।