মেসির এই হতাশা ম্যাচ শেষে আর থাকেনি
মেসির এই হতাশা ম্যাচ শেষে আর থাকেনি

যে পেনাল্টি মিস এক সুতোয় গেঁথেছে মেসিদের

ভয়চেক সেজনি পেনাল্টি শটটা ঠেকিয়ে দেওয়ার পর হতাশই হয়েছেন, নিজের ওপর রাগও হয়েছে। কিন্তু আগের মতো চোখে-মুখে রাজ্যের অন্ধকার নামিয়ে ফেলেননি। বরং ক্ষণিকের জন্য পরিহাসের হাসিই ফুটিয়ে তুললেন মুখে। যে হাসিতে ছিল দ্রুতই নিজেকে সামলে নেওয়ার চেষ্টা।

লিওনেল মেসি নিজেকে সামলেছেন, গোলের সুযোগ নষ্টের হতাশা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে আর্জেন্টিনাও। প্রথমার্ধে মেসির পেনাল্টি মিসের পরও তাই দ্বিতীয়ার্ধের জোড়া গোলে পোল্যান্ডকে ২-০ ব্যবধানে হারাতে পেরেছে মেসির দল। আলেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার আর হুলিয়ান আলভারেসের গোলে চড়ে জায়গা করে নিয়েছে কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতেও।

ম্যাচের পর মেসির প্রতি অবধারিত প্রশ্ন ছিল পেনাল্টি মিস নিয়ে। ২০১৮ বিশ্বকাপে আইসল্যান্ডের বিপক্ষেও পেনাল্টি মিস করেছিলেন। আর্জেন্টাইন সমর্থকদের আক্ষেপ, রাশিয়ায় মেসি সেদিন গোল করতে পারলে ১-১ সমতায় থাকতে হতো না আর্জেন্টিনার, গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে ফ্রান্সের সামনে পড়ে বিদায়ও নিতে হতো না।

এবার শেষ ষোলোয় ওঠার জন্য পোল্যান্ডের বিপক্ষে গোল যখন খুব প্রয়োজন, তখন মেসির আরেকটি পেনাল্টি মিস আবারও বিপদ ডেকে আনল কি না- এমন আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল টুইটার-ফেসবুকে। বিশেষ করে দলের বাকিরা যদি মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়তেন?

মেসিদেের উদ্‌যাপন

মেসি জানালেন, ঘটনা উল্টোটা ঘটেছে। পেনাল্টি মিসের পরই বরং গোলের জন্য দল আরও বেশি করে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, ‘পেনাল্টিটা মিস করে আমার এখনো রাগ হচ্ছে। তবে ওই ভুলের পরই কিন্তু দলের মনোবল বেড়েছে। সবার মনে এই বিশ্বাস জন্মেছে যে আমরা জিততে পারব। যে কোনো মুহূর্তে গোল চলে আসবে। আর প্রথম গোলটা চলে আসার ম্যাচটা আমরা যেভাবে চেয়েছি সেভাবেই এগিয়েছে।’

পেনাল্টি মিস করলেও ম্যাচটিতে অবশ্য ভালো অবদানই রেখেছেন মেসি। ৭০টির মধ্যে ৫৯টি পাস পৌঁছেছে জায়গামতো, শট নিয়েছেন ৭টি, সুযোগ তৈরি করেছেন ৫টি আর ড্রিবলও করেছেন ৬ বার।

১৯৬৬ বিশ্বকাপে ফুটবল পরিসংখ্যান হালনাগাদ করা অপটার তথ্য বলছে, ৩৫ বছর ১৫৯ দিন বয়সী মেসিই বিশ্বকাপের এক ম্যাচে ৫‍+ সুযোগ তৈরি এবং ৫‍+ ড্রিবল করা সবচেয়ে বেশি বয়সের খেলোয়াড়। এর আগের রেকর্ডটা ১৯৯৪ বিশ্বকাপে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে খেলা ডিয়েগো ম্যারাডোনার।

মেসির পেনাল্টি ঠেকিয়েছেন সেজনি

মেসির গোল বা গোলে সরাসরি সহায়তা না থাকা ম্যাচটিতে দুটি গোলই করেছেন দুই তরুণ। ম্যাক আলিস্টার এবং আলভারেস দুজনের এটি ছিল বিশ্বকাপে প্রথম গোল। আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেসি জানান, তরুণদের দায়িত্ব নিতে পারাই তার দলের মূল শক্তি, ‘শুরু থেকেই বলে আসছি, যারা দলে আসছে তারা জানে কী করতে হবে। সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়েই আসে ওরা। এটিই এই দলটির শক্তির জায়গা। ঐক্যবদ্ধ থাকা আর দরকারের সময় সাড়া দেওয়া।’

দ্বিতীয় রাউন্ডে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। এএফসিতে খেলা দলটি র‍্যাঙ্কিংয়ে সামনের দিকে (৩৮তম) না থাকলেও আর্জেন্টিনাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে বলে মনে করেন মেসি, ‘ম্যাচটি খুবই কঠিন হবে। যে কেউ অপর দলকে হারিয়ে দিতে পারে। সবাই এ ক্ষেত্রে সমান। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের জন্য আমাদের ভালো প্রস্তুতি দরকার।’

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচটি শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়।