রেফারি ক্লেমঁ তুরপিঁর সঙ্গে কথা–কাটাকাটি হয় জোসে মরিনিওর
রেফারি ক্লেমঁ তুরপিঁর সঙ্গে কথা–কাটাকাটি হয় জোসে মরিনিওর

লাল কার্ড দেখার পর রেফারির দৃষ্টিশক্তি নিয়ে ব্যঙ্গ মরিনিওর

‘আমরা তাদের চেয়ে ভালো খেলেছি, সব মিলিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জন্য ভালো একটি ফল।’

টিএনটি স্পোর্টসে জোসে মরিনিওর এই উক্তি যে তাঁর সাবেক ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রতি খোঁচা, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ইস্তাম্বুলে কাল রাতে উয়েফা ইউরোপা লিগের ম্যাচে ইউনাইটেডের সঙ্গে ১–১ গোলে ড্র করেছে মরিনিওর ফেনেরবাচে। ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের গোলে ১৫ মিনিটে ইউনাইটেড এগিয়ে গেলেও বিরতির পর ৪৯ মিনিটে ইউসেফ এন–নেসরির গোলে সমতায় ফেরে তুর্কি ক্লাবটি।

উয়েফা আয়োজিত দ্বিতীয় শীর্ষ এই ক্লাব টুর্নামেন্টের লিগ পর্বে নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচেই ড্র করল ইউনাইটেড। ইংলিশ ক্লাবটির কোচ এরিক টেন হাগের ওপর থেকে চাপ তাতে একটুও কমেনি।

লিগপর্বে ৩৬টি ক্লাবের মধ্যে ২১তম অবস্থানে ইউনাইটেড। মরিনিওর ফেনেরবাচে আছে ১৪ নম্বরে। তবে এই ম্যাচে আরও একটি ঘটনা ঘটেছে এবং তাতে ঠোঁটকাটা মরিনিও ব্যঙ্গাত্মক কথাও বলেছেন ম্যাচের রেফারি ক্লেমঁ তুরপিঁকে নিয়ে।

ম্যাচের সময় এক ঘণ্টা হওয়ার কিছুক্ষণ আগে লাল কার্ড দেখেন পর্তুগিজ এই কোচ। কারণ? ফেনেরবাচের পেনাল্টির দাবি নাকচ করে দেন ফরাসি রেফারি তুরপিঁ। এরপরই তাঁর সঙ্গে কথা–কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন মরিনিও। ফল হিসেবে লাল কার্ড দেখে ডাগআউট ছাড়তে হয় মরিনিওকে।

ম্যাচ শেষে মরিনিও প্রথমে এই পেনাল্টি না দেওয়া নিয়ে কথা বলতে চাননি। পরে টিএনটি স্পোর্টসকে বলেছেন, ‘তিনি (রেফারি) অবিশ্বাস্য এক কথা বলেছেন। বলেছেন, একই সময়ে তিনি বক্সে খেলা দেখার পাশাপাশি টাচলাইনে আমার আচরণেও চোখ রেখেছেন। এমন দৃষ্টিশক্তির জন্য তাকে অভিনন্দন, তিনি অবিশ্বাস্য। ম্যাচের সময়, যেটা প্রায় ১০০ মাইল গতিবেগে চলছিল, তার এক চোখ ছিল পেনাল্টি–পরিস্থিতির ওপর এবং আরেকটি চোখ নজর রেখেছে বেঞ্চে আমার আচার–আচরণে। তিনি আমাকে এই ব্যাখ্যাই দিয়েছেন। তিনি এ কারণেই বিশ্বের অন্যতম সেরা রেফারি।’

রেফারির সঙ্গে মরিনিওর ঝামেলায় জড়ানোর ঘটনা নতুন নয়। গত বছর ইউরোপা লিগ ফাইনালে রোমার কোচ হিসেবে রেফারির সঙ্গে বাজে আচরণ করায় ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ৪ ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন পোর্তো ও ইন্টার মিলানকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতানো মরিনিও। ইউনাইটেডের সঙ্গে ড্রয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে মরিনিও ওই ঘটনার উদাহরণ টেনে জানিয়েছেন, এবারের লাল কার্ড দেখার বিপক্ষে তিনি আপিল করবেন না, ‘আপিল করলে ছয় মাস নিষিদ্ধ হতে পারি। সেভিয়া–রোমা ফাইনালের পর থেকে আর কিছুই করার নেই।’

চেলসির হয়ে প্রিমিয়ার লিগ ও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে লা লিগাজয়ী এই কোচ আরও জানিয়েছেন, এসব ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে ভবিষ্যতে তিনি ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতা নেই, এমন ক্লাবের দায়িত্ব নিতে চান, ‘ফেনেরবাচে ছাড়ার পর আমাকে এমন একটি ক্লাবে যেতে হবে, যারা উয়েফার প্রতিযোগিতায় নেই। সেটাই হবে সেরা সিদ্ধান্ত। তাই ইংল্যান্ডের (পয়েন্ট তালিকায়) নিচুর সারির কোনো দলের যদি আগামী দুই বছরের মধ্যে কোচের প্রয়োজন হয়, আমি যেতে রাজি।’

ফেনেরবাচে–ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ম্যাচ ১–১ সমতায় শেষ হয়েছে

২০১৬ সালে ইউনাইটেড কোচের দায়িত্ব নিয়ে পরের বছর ইউরোপা লিগ জিতেছেন মরিনিও। আড়াই বছর ওল্ড ট্রাফোর্ডের ক্লাবটিতে ছিলেন তিনি। এ বছরের জুনে ফেনেরবাচের দায়িত্ব নেন মরিনিও।