শন ডাইক কী জাদু জানেন! ইংলিশ এই কোচ এভারটনের দায়িত্ব নিয়েছেন মাত্র পাঁচ দিন। নিজের প্রথম পরীক্ষাতেই দাপুটে পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে হারিয়ে দিলেন প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দল আর্সেনালকে। পাল্টাপাল্টি আক্রমণের ম্যাচের ঘরের মাঠে মিকেল আরতেতার দলকে ১-০ গোলে হারিয়েছে এভারটন। এভারটনের হয়ে গোল করেছেন তারকোফস্কি। লিগে চলতি মৌসুমে এটি আর্সেনালের দ্বিতীয় হার। গত বছর সেপ্টেম্বরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে ৩-১ গোলে হারের পর টানা ১৩ ম্যাচ অপরাজিত ছিল আর্সেনাল। তবে এই হারের পরেও ২১ ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে এখনো পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আর্সেনাল। ২০ ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটির পয়েন্ট ৪৫।
মাঠে নামার আগে দুই মেরুতে ছিল দুই দল। আর্সেনাল এবার ১৯ বছর পর শিরোপা জেতার স্বপ্ন দেখছে, এভারটন লড়ছে অবনমন থেকে বাঁচতে। প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নশিপে নেমে যাওয়ার শঙ্কা তাড়া করছিল তাদের। সেই ভয়েই কি না, ম্যাচের শুরু থেকেই নিজেদের সেরাটা দিয়ে শীর্ষে থাকা আর্সেনালের বিপক্ষে দাপট দেখিয়ে খেলেছে এভারটন। পুরো মৌসুমে প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করা আর্সেনালই এদিন চাপে পড়ে যায়।
২১ থেকে ২৩ মিনিটের মধ্যে টানা তিনটি কর্নার আদায় করে নেয় এভারটন। এই তিনটি কর্নারে গোল না পেলেও আর্সেনালের রক্ষণকে ভালোই পরীক্ষার মধ্যে ফেলে আন্দ্রে ওনানারা। ৩০ মিনিটে আক্রমণে ওঠে আর্সেনাল। মাইকোলেঙ্কোর সঙ্গে লড়াইয়ে বল জিতে বুকায়ো সাকা এনকেটিয়াকে পাস দেন। এনকেটিয়ার সেই পাস থেকে নেওয়া শট গোলপোস্টে রাখতে পারেননি। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট—এই পাঁচ মিনিটে প্রথমার্ধের সবচেয়ে বড় দুটি সুযোগ আসে এভারটনের সামনে। ওনানার করা ক্রসে ঠিকভাবে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন ডমিনিক কালভার্ট-লুইন। এরপর গোলপোস্টের ১০ গজ দূরে অরক্ষিত অবস্থায় বল পান আব্দুলায়ে দুকুরে। তবে তাঁর হেডে আর্সেনাল গোলকিপারকে কোনো পরীক্ষা দিতে হয়নি।
৪০ মিনিটে গোল পেয়ে যেতে পারতেন সাকা। গোলরক্ষককে ফাঁকি দিলেও পোস্টের সামনে দাঁড়িয়ে কনর কোয়েডি এভারটনকে বাঁচান। সহজ সুযোগ মিসের আক্ষেপ নিয়ে বিরতিতে যাওয়া এভারটন দ্বিতীয়ার্ধের গোল পেয়ে যায়। ম্যাকনেইলের কর্নারে মাথা ছুঁয়ে গোল করেন তারকোফস্কি। প্রিমিয়ার লিগে এটি তাঁর প্রথম গোল। এভারটনের হয়েও এটিই প্রথম।
৬৫ মিনিটে পেনাল্টির আবেদন করেন আর্সেনালের ফুটবলাররা। যদিও রেফারি সেই আবেদনে সাড়া দেননি। শেষ দিকে একের পর এক সুযোগ নষ্ট করেন সাকারা। চলতি মৌসুমে আর্সেনালের হয়ে অ্যাওয়ে ম্যাচে সবচেয়ে বেশি (৬) গোল করা ওডেগার্ড ৭৭ মিনিটে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন।
এই জয়ে পয়েন্ট তালিকায় দুই ধাপ এগিয়ে ১৭ নম্বরে উঠে এসেছে এভারটন। আপাতত অবনমন অঞ্চলের বাইরে আসতে পারার পাশাপাশি লিগের শীর্ষ দলকে হারিয়ে পাওয়া আত্মবিশ্বাসই হয়তো এ ম্যাচ থেকে এভারটনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।