রেকর্ড গড়েছেন এমবাপ্পে
রেকর্ড গড়েছেন এমবাপ্পে

এমবাপ্পের রেকর্ডের রাতে পিএসজির হতাশা

বেনফিকার বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচে পিএসজি মাঠে নামার আগেই বড় বোমাটি ফাটায় স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম মার্কা। পিএসজির ওপর বিরক্ত কিলিয়ান এমবাপ্পে জানুয়ারিতেই ক্লাব ছাড়তে চান।

তাঁর ‍ক্লাব ছাড়া নিয়ে ইউরোপীয় ফুটবল যখন উত্তপ্ত, তখনই মাঠে নেমে রেকর্ড গড়েছেন এমবাপ্পে। চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজির হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করার নতুন মাইলফলক গড়েছেন এই বিশ্বকাপ জয়ী তারকা।

তবে রেকর্ডের রাতে দলকে জেতাতে পারেননি তিনি। লিওনেল মেসিকে ছাড়া খেলতে নেমে বেনফিকার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় পিএসজিকে। শেষ দিকে ভিএআরের কারণে বাতিল না হলে দারুণ এক গোলে নায়ক হয়েই মাঠ ছাড়তে পারতেন এমবাপ্পে।

পিএসজির সঙ্গে এমবাপ্পের দ্বন্দ্ব সামনে আসে নেইমারের সঙ্গে পেনাল্টি নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে। বেনফিকা ম্যাচেও কাকতালীয়ভাবে আসে আরেকটি পেনাল্টি-মুহূর্ত। ৩৯ মিনিটে অবশ্য পেনাল্টি নিতে নেইমার নন এগিয়ে যান এমবাপ্পেই। ফরাসি তারকার পা থেকে বেরিয়ে আসা শটটি অবশ্য লক্ষ্যচ্যুত হয়নি। এগিয়ে যায় পিএসজি।

চ্যাম্পিয়নস লিগের চলতি মৌসুমে এটি এমবাপ্পের চতুর্থ গোল। ৪৮ ম্যাচে এটি তাঁর ৩১তম গোল। এই গোলে এদিনসন কাভানিকে টপকে চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজির সর্বোচ্চ গোলদাতাও এখন এমবাপ্পে।

এই গোলের আগে অবশ্য দুই দলই জমজমাট লড়াই উপহার দিয়েছিল। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে গোলের চেষ্টা করেছিল দুই পক্ষই।

পিএসজির হয়ে গোলের পর এমবাপ্পের উদ্‌যাপন

আগের ম্যাচে নিজেদের মাঠের পারফরম্যান্স এই ম্যাচেও ধরে রেখেছিল বেনফিকা। প্যারিস ভ্রমণে এসে নিজেদের গুটিয়ে রাখেনি পর্তুগিজ ক্লাবটি। প্রয়োজনে আক্রমণে গিয়ে হুমকি তৈরি করছিল পিএসজি ডিফেন্সে।

১৯ মিনিটে পেনাল্টিও পেয়ে গিয়েছিল তারা। তবে ভিএআরে কল্যাণে বেঁচে যায় পিএসজি। পেনাল্টি ভাগ্য পক্ষে না থাকার সঙ্গে অবশ্য ফিনিশিংয়ের দুর্বলতাও বেশ ভুগিয়েছে ক্লাবটিকে।

আক্রমণে অবশ্য পিএসজিও উপহার দিয়েছে দারুণ কিছু মুহূর্ত। মেসি না থাকলেও নেইমার ও এমবাপ্পে একাধিকবার কাঁপিয়ে দিয়েছিল বেনফিকার রক্ষণ।  তেমনই এক আক্রমণ থেকে এগিয়ে যাওয়ার উপলক্ষ্য পায় ক্রিস্তফ গালতিয়েরের দল। প্রথমার্ধের বাকি সময়েও বেনফিকাকে বেশ চাপে রাখে পিএসজি।

বিরতির পরও আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে দুই দলই লড়াই জমানোর চেষ্টা করে। আধিপত্যে পিএসজি এগিয়ে থাকলেও ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করছিল বেনফিকাও। ৫২ মিনিটে এমবাপ্পে অল্পের জন্য লিড বাড়াতে ব্যর্থ হন। দুই মিনিট পর সুযোগ হাতছাড়া করে বেনফিকা।

বেনফিকাকে সমতায় ফেরান জোয়াও মারিও

যে পেনাল্টি গোলে পিছিয়ে যাওয়া সেই পেনাল্টি গোলই ম্যাচে ফেরায় বেনফিকাকে। বক্সের ভেতর বেনফিকার রাফা সিলভাকে ফেলে দিয়ে বিপদ ডেকে আনেন ভেরাত্তি। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টি দেন রেফারি। ভুল করেননি জোয়াও মারিও। দলকে সমতায় ফেরান এই পর্তুগিজ তারকা।

লিড হারিয়ে আক্রমণে ধার বাড়ানোর চেষ্টা করে পিএসজি। এ সময় কিছুটা নিচে নেমে গিয়ে রক্ষণে শক্তি বাড়ায় বেনফিকা। নেইমার-এমবাপ্পেদের আক্রমণগুলোও শেষ পর্যন্ত সাফল্যের মুখ দেখছিল না।

শেষে দিকে অবশ্য দুর্দান্ত এক ভলিতে প্যারিসকে প্রায় মাতিয়েই তুলেছিলেন এমবাপ্পে। তবে অফসাইডের কারণে বাতিল হয় পিএসজির গোলটি।  শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেও তাই পিএসজিকে মাঠ ছাড়তে হলো ড্রয়ের হতাশা নিয়ে।

ঘরোয়া লিগে আগের ম্যাচে মেসিকে পায়নি পিএসজি। ইউরোপীয় মঞ্চের ম্যাচেও চোট থেকে সেরে না উঠায় তাঁকে ছাড়াই খেলতে হলো প্যারিসের ক্লাবটিকে।

আর্জেন্টাইন তারকাকে ছাড়া আগের ম্যাচে গোল করতে পারেনি পিএসজি। এই ম্যাচে গোল পেলেও সেটি ওপেন প্লে (চলমান খেলা) থেকে আসেনি। এসেছে পেনাল্টি থেকে।

একই রাতে আরেক ম্যাচে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে ১-১ গোলে রুখে দিয়েছে সেভিয়া। তবে সেল্টিকের মাঠে গিয়ে ঠিকই ২-০ গোলে জিতে এসেছে আরবি লাইপজিগ।