ড্রেসিংরুমে ফিরেই তোপ দেগেছেন কোহলি
ড্রেসিংরুমে ফিরেই তোপ দেগেছেন কোহলি

‘যদি এটা নিতে না পারো, তাহলে দিতে এসো না’—ড্রেসিংরুমে ফিরে গম্ভীরের উদ্দেশে কোহলি

২০১৩ আইপিএলে প্রথমবার বিবাদে জড়িয়েছিলেন তখনকার দুই অধিনায়ক কলকাতা নাইট রাইডার্সের গৌতম গম্ভীর ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরাট কোহলি। সবার ধারণা ছিল, ভারতীয় দলের দুই সাবেক সতীর্থের ঝামেলা বুঝি সেখানেই মিটমাট হয়ে গেছে।

কিন্তু এবারের আইপিএলে আবারও নতুন করে যুদ্ধংদেহী রূপে দেখা দিয়েছেন দুজন। কাল রাতে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস–রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ম্যাচের পর তো ক্ষোভের বিস্ফোরণই ঘটে গেল! ম্যাচ শেষে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে গম্ভীর–কোহলির। সতীর্থরা মাঝখানে এসে না দাঁড়ালে এই কথা–কাটাকাটি হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যেত।

আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় দুজনেরই ম্যাচ ফির পুরোটা কেটে নিয়েছে আইপিএল কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া লক্ষ্ণৌর আফগান পেসার নবীন হককে ম্যাচ ফির অর্ধেক জরিমানা করা হয়েছে।

গম্ভীর–কোহলির উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের রেশ এখনো রয়ে গেছে

ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমেও এ ঘটনা নিয়ে কথা বলেছেন বিরাট কোহলি। বেঙ্গালুরুর ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, কোহলি জার্সি খুলে ড্রেসিংরুমে হেঁটে বেড়াচ্ছেন আর বলছেন, ‘এটা একটা মধুর জয়। এভাবেই এগিয়ে যাও। প্লে–অফ বিবেচনায় নিলে এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ জয় ছিল। ওদের (লক্ষ্ণৌ) মাঠে আমরাই বেশি সমর্থন পেয়েছি। এটা একটা অবিশ্বাস্য অনুভূতি। এটা বুঝিয়ে দিয়েছে, সবাই দল হিসেবে আমাদের কতটা পছন্দ করে। ছোট সংগ্রহ গড়েও আমরা নিজেদের চরিত্র দেখিয়েছি। সবার মধ্যে বিশ্বাস ছিল, আমরা পারব।’

এটা তো স্মরণীয় এক জয়ের পর স্বাভাবিক অনুভূতি। ইউটিউবের ওই ভিডিওটা বেশি আলোচনায় আসছে গম্ভীরের সঙ্গে বাদানুবাদের প্রসঙ্গে কোহলির কথায়। সরাসরি গম্ভীরের নাম বলেননি কোহলি। তবে কথাগুলো কার উদ্দেশে, তা বুঝতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তা কী বলেছেন কোহলি? ক্যামেরার দিকে সরাসরি তাকিয়ে কাউকে বার্তা দেওয়ার ভঙ্গিতে বলেছেন, ‘যদি তুমি এটা দিতে পারো, তাহলে নিতে পারার মানসিকতাও থাকতে হবে। নিতে না পারলে দিতে এসো না।’

কোহলির কথাটা বুঝতে গত ১০ এপ্রিল বেঙ্গালুরুর মাঠ এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের ম্যাচে ফিরে যেতে হবে। সেদিন কোহলিদের দেওয়া ২১৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করে শেষ বলে ১ উইকেটে জিতেছিল গম্ভীরের দল। ম্যাচের পর বেঙ্গালুরুর দর্শকের দিকে তাকিয়ে মুখে আঙুল দিয়ে চুপ করে থাকার ইঙ্গিত করেছিলেন গম্ভীর। কাল লক্ষ্ণৌর মাঠে ফিরতি লেগে বেঙ্গালুরুর জয়ের পর কোহলিও একই ভঙ্গি করে তা ফেরত দিয়েছেন। এ নিয়েই লেগে যায় দুজনের।

পরে নিজের ইনস্টাগ্রামেও এটা নিয়ে একটি পোস্ট করেছেন কোহলি। লিখেছেন, ‘আমরা যা কিছু শুনি সবই একটা মতামত, প্রকৃত তথ্য নয়। আমরা যা কিছু দেখি, সবই একটা দৃষ্টিভঙ্গি, সত্যি ঘটনা নয়।’ গম্ভীর অবশ্য গত রাতের পর থেকে এ নিয়ে এখনো মুখ খোলেননি।

গম্ভীর–কোহলির এই দ্বন্দ্ব এখন আর ব্যক্তিপর্যায়ে সীমাবদ্ধ নেই, হয়ে দাঁড়িয়েছে দলীয় ইস্যু। দুই দল তো টুইটারে রীতিমতো যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে।

১০ এপ্রিল বেঙ্গালুরুকে হারানোর পর তাদের স্লোগানকে খোঁটা দিয়ে লক্ষ্ণৌ টুইট করেছিল, ‘এই হলো তোমাদের সাহসী খেলা!’ কাল জয়ের পর সেই টুইট শেয়ার দিয়ে বেঙ্গালুরু লক্ষ্ণৌর স্লোগান নিয়ে পাল্টা খোঁটা দিয়েছে, ‘তোমাদের সম্মানের সঙ্গে হারালাম।’ এরপর লক্ষ্ণৌ রিটুইট করেছে, ‘১–১ সমতা এল। আশা করি, আবার দেখা হবে। আপাতত রাতটা উপভোগ করো।’

পাল্টা টুইটে বেঙ্গালুরু জবাব দিয়েছে, ‘১–১ নয়, যত দূর জানি আমরা ৩–১ ব্যবধানে এগিয়ে (আইপিএলের সব আসর মিলিয়ে)। যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের আবার দেখা হয়...।’

এবারই প্লে–অফে দুই দলের আবার দেখা হয়ে যেতে পারে। সেই ম্যাচে নিশ্চয়ই আবারও স্ফুলিঙ্গ উড়বে বাতাসে।