স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে গোলের পর জুড বেলিংহাম
স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে গোলের পর জুড বেলিংহাম

‘রাবিশ’–এর জবাব গোলের পর মুখেও দিলেন বেলিংহাম

আর কে?

গোল করেই সমালোচকদের খুঁজছিলেন তিনি। সতীর্থরা যখন তাঁকে স্পর্শ করতে ছুটে আসছেন, ক্যামেরা আর গ্যালারির দিকে তাকিয়ে চিৎকার করেই বললেন, আর কে? ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজতে দেড় মিনিটও বাকি নেই। আসলে তো ম্যাচ শেষের নয়, ইংল্যান্ডের বিদায়ের বাঁশি। আর সেই মুহূর্তেই বাইসাইকেল কিকে স্লোভাকিয়ার জালে বল পাঠালেন জুড বেলিংহাম। কয়েক দিন ধরে তাঁকে আর তাঁর দলকে যাঁরা সমালোচনায় বিদ্ধ করেছিলেন, গোলটা যেন তাঁদেরই জবাব দেওয়া। তবে ২১ বছর বয়সী ইংলিশ তারকা সেখানেই থামেননি। ম্যাচের শেষেও কথা বলেছেন সমালোচকদের নিয়ে, বলেছেন ‘রাবিশ’ কথাবার্তা নিয়ে।

বেলিংহাম যোগ করা সময়ে সমতা এনে দেওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ে হ্যারি কেইনের গোলে ২–১ ব্যবধানের জয় তোলে ইংল্যান্ড। যে জয় গ্যারেথ সাউথগেটের দলকে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে দিয়েছে। গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডের খেলার ধরন আর খেলোয়াড়দের নিবেদন নিয়ে বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন অনেক দর্শক। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দারুণ মৌসুম শেষ করা বেলিংহামের পারফরম্যান্স নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কেউ কেউ।

স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে দুর্দান্ত গোলের পর ম্যাচ শেষে এর মাহাত্ম্য বোঝাতে গিয়ে প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন বেলিংহাম, ‘এটা এমন এক অনুভূতি, যা অন্য কিছুর সঙ্গে মেলানো যায় না। আন্তর্জাতিক ফুটবল এবং নকআউটের মতো খেলায় ওই সময়ের অনুভূতি ভীষণ বাজে, যখন আপনার দল বিদায় থেকে ৩০ সেকেন্ড দূরে, আর আপনাকে বাজে কথা শুনতে হচ্ছে। এটা এমন এক অনুভূতি, যেন গোটা জাতির মাথা নিচু করে দিচ্ছেন আপনি। (কিন্তু এই) ৩০ সেকেন্ড কিংবা বলে একটা কিকই সবকিছু বদলে দিতে পারে।’

এক সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেন, ‘রাবিশ’ বলতে ঠিক কার বা কিসের কথা বলছেন বেলিংহাম। জবাবে তিনি বলেন, ‘রাবিশ বলে কী বোঝাতে চাচ্ছি, সেটা আপনি জানেন। ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে পারাটাই একজন ফুটবলারের ক্যারিয়ারের গৌরবময় ব্যাপার। কিন্তু কখনো কখনো এটা অন্য রকম হয়ে যায়। এখানে খুব উঁচু মাত্রার চাপ থাকে, আগের আসরগুলোর ফল যেমনই হোক না কেন, সমর্থকদের বিপুল প্রত্যাশা থাকে। মানুষ প্রচুর কথা বলে। আমার মনে হয় এটা কিছুটা ব্যক্তিগতভাবেও নেওয়ার আছে।’

গোলের উদ্‌যাপনে ‘হু এলস’ বলে যে চিৎকার করেছিলেন, সেটি যে সমালোচকদের উদ্দেশে, তা–ও উঠে এসেছে বেলিংহামের কথায়, ‘আমরা প্রতিদিনই কঠোর পরিশ্রম করি সমর্থকদের এমন পারফরম্যান্স উপহার দেওয়ার জন্য। কখনো কখনো সেটা ভালো হয় না, কখনো মনে হয় অতি মাত্রায় সমালোচনা হচ্ছে। এটা (হুল এলস) শুনতে ভালো লাগবে না, কিন্তু এ ধরনের মুহূর্তের জন্য এটা সব সময়ই ব্যবহার করা যায়। কিছু মানুষকে এটা ফিরিয়ে দিতে পারাটা চমৎকার, আমার তা–ই মনে হয়।’

স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে করা বেলিংহামের গোলটি ছিল ২০২৩–২৪ মৌসুমে যোগ করা সময়ে তাঁর ষষ্ঠ গোল (৪টি রিয়ালের হয়ে, ২টি ইংল্যান্ডের হয়ে)। সব কটি গোলই তাঁর দলকে ম্যাচ জিতিয়েছে অথবা সমতা এনে দিয়েছে। ২১ বছর ১ দিন বয়সী বেলিংহাম ইউরোর নকআউট পর্বে গোল করা সবচেয়ে কম বয়সী ইংলিশ ফুটবলার।

এমন কীর্তির পর সমালোচকদের একহাত তো তিনি নিতেই পারেন!