ফ্রান্সকে হারিয়ে কিছুটা ভার কমেছে কানাডা ফুটবল দলের
ফ্রান্সকে হারিয়ে কিছুটা ভার কমেছে কানাডা ফুটবল দলের

প্যারিস অলিম্পিক

৬ পয়েন্ট পেয়েও পেল না কানাডা, গোটা পৃথিবীই তাদের ‘প্রতিপক্ষ’

নামের পাশে পয়েন্ট যোগ করতে নয়, ‘ধার’ শোধ করতে নেমেছিল কানাডা।

ড্রোন চালিয়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে অলিম্পিকে কানাডা নারী ফুটবল দলের ৬ পয়েন্ট কেটে নিয়েছিল ফিফা। প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানের জয় থাকায় সেখান থেকে তিন পয়েন্ট কাটা গিয়েছিল। বাকি ছিল আরও ৩ পয়েন্ট। কাল রাতে সেঁত এতিয়েনে ফ্রান্সকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে সেই তিন পয়েন্টও শোধ দিয়েছে কানাডা।

নব্বই মিনিটের খেলা ১-১ সমতায় শেষ হওয়ার পর যোগ করা সময়ের ১২তম মিনিটে কানাডাকে জয়সূচক গোলটি এনে দেন ভ্যানেসা জাইলস। ম্যাচের পর কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন শাস্তি দেওয়া হয়েছে, যেন ডোপিংয়ে ধরা পড়েছি।’ আর ম্যাচে কানাডার হয়ে প্রথম গোল করা জেসি ফ্লেমিং বলেন, ‘মনে হচ্ছে গোটা পৃথিবী এখন আমাদের প্রতিপক্ষ।’

শুধু পয়েন্ট কর্তনই নয়, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগে দলটির অনুশীলনে ড্রোন পাঠানোর দায়ে কানাডা কোচ বেভ প্রিয়েস্টমানকে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফিফা। আটক হয়েছেন দলের অ্যানালিস্ট জোসেফ লমবারডি। ঘটনায় জড়িত থাকায় দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সহকারী কোচ জাসমিন মান্ডারকে। আর ফুটবল ফেডারেশনকে তো ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করতে হয়েছেই। তবে এর মধ্যে পয়েন্ট কেড়ে নেওয়ার খবরটি হজম করতে কষ্ট হয়েছে ফুটবলারদের।

কানাডার হয়ে সমতাসূচক গোল করেন জেসি ফ্লেমিং (বাঁয়ে)

শনিবার রাতে ৬ পয়েন্ট কেটে নেওয়ার খবর শুনে রাগে-ক্ষোভে দেয়ালে ঘুষি মেরেছিলেন জানিয়ে জাইলস বলেন, ‘৭২ ঘণ্টা কিছুর ওপরই আমাদের নিয়ন্ত্রণ ছিল না। আমরা এর (ড্রোনে গুপ্তচরবৃত্তি) অংশ ছিলাম না। কিন্তু এমন সাজা দেওয়া হয়েছে যেন ডোপিংয়ে ধরা পড়েছি। আমরা কিছুই করিনি। যে জিনিসটার ওপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, সেটা নিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে করতে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।’

কানাডা ফুটবল দল ড্রোন গুপ্তচরবৃত্তি বা এ–জাতীয় কিছুর মাধ্যমে অনৈতিক কোনো সুবিধা নেয়নি জানিয়ে লিঁওতে খেলা এই সেন্টারব্যাক আরও বলেন, ‘আমরা কোনো সুবিধা নিইনি। আমরা মাঠে নেমেছি নিজেদের উজাড় করে খেলার জন্য। সারা বছর এ জন্যই কষ্ট করেছি। যে কারণে এমন অনিয়ন্ত্রিত কিছুর (পয়েন্ট কর্তন) জন্য প্রচণ্ড হতাশা আর রাগই হয়েছে শুধু।’

জয়ের পর আবেগাপ্লুত কানাডার খেলোয়াড়েরা

টোকিও অলিম্পিকে ফাইনাল খেলা জাইলস সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় অনবরত কেঁদে চলছিলেন। একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘কোনো ম্যাচ খেলতে নেমে এতটা আবেগপ্রবণ কখনোই হইনি। এমনকি সোনার পদকের ফাইনালেও নয়।’
সংবাদমাধ্যমের সামনে কথা বলার সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ম্যাচে কানাডার হয়ে সমতার গোল করা ফ্লেমিংও, ‘মনে হচ্ছে গোটা পৃথিবীই আমাদের প্রতিপক্ষ।’

কানাডার সামনে শেষ আটে খেলার সম্ভাবনা অবশ্য এখনো ভালোমতোই আছে। নিউজিল্যান্ড ও ফ্রান্সকে হারানোর পর তাদের পয়েন্ট এখন কার্যত শূন্য। তবে এবারের অলিম্পিকে ১২ দলকে তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি গ্রুপের সেরা দুটি দলের পাশাপাশি তৃতীয়দের মধ্যে সেরা দুটি দলও কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে পারবে। কানাডার লক্ষ্য এখন বুধবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে কলম্বিয়াকে হারিয়ে সেই সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখা।