প্যারিসে লিওনেল মেসি, নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপ্পের এমএনএম ত্রয়ী যখন জাদু দেখাচ্ছিলেন, বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের মাঠে পুনর্মিলনীর রাতে তখন ব্যাপক সংগ্রাম করছিলেন আর্লিং হলান্ড। ইতিহাদে প্রথম লেগের ম্যাচে শেষ দিকে ডর্টমুন্ডের তৈরি করা কল থেকে বের হতে পারলেও, সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে এবার আর পারেননি।
অবশ্য প্রথমার্ধের পর কিছু করে দেখানোর সুযোগও পাননি হলান্ড। বিরতির পর নিষ্প্রভ হলান্ডকে তুলে নেন কোচ পেপ গার্দিওলা। দারুণ ছন্দে থাকা এই স্ট্রাইকারের নিষ্প্রভ থাকার রাতে পারেনি সিটিও। এর মাঝে মিস হয়েছে পেনাল্টিও। মাঠ ছাড়তে হয়েছে গোলশূন্য ড্র নিয়ে।
হলান্ডের সময়টা এখন দারুণ কাটছে। আছেন পাদপদ্রীপের আলোতেও। ডর্টমুন্ডের মাঠে ম্যাচ বলে এদিন যেন আরেকটু বেশি চোখ ছিল তাঁর ওপর। পুরোনো ঘরেই যে ফেরা। যাদের বিপক্ষে প্রথম লেগে শেষ দিকে জ্বলে উঠেই যে করছিলেন মৌসুমের অন্যতম সেরা গোলটিও।
এদিন অবশ্য হলান্ডকে আটকে রাখার চেয়ে আক্রমণেই বেশি চোখ ছিল ডর্টমুন্ডের। ঘরের মাঠে সিটিকে চেপে ধরে দারুণ সব আক্রমণ শানায় ডর্টমুন্ড। তবে ফিনিশিংয়ে একের পর এক ব্যর্থতা দলটিকে প্রথমার্ধে এগিয়ে যেতে দেয়নি।
১৬ মিনিটে সিটি গোলরক্ষক স্টেফান ওর্তেগা ঠেকিয়ে দেন ডর্টমুন্ডের দারুণ একটি সুযোগ। ২৫ মিনিটে আবারও সুযোগ আসে স্বাগতিকদের সামনে। ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে গিয়ে করিম আদেইমি দারুণভাবে বল পাঠিয়ে ছিলেন গিওভান্নি রেইনার কাছে। তবে রেইনার শট ওর্তেগাকে পরাস্ত করতে যথেষ্ট ছিল না।
২৭ মিনিটের মধ্যে অন্তত দুবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে কাজে লাগতে পারেনি সিগন্যাল ইদুনা পার্কে দলটি। অবশ্য একের পর এক মিসে দলটির হতাশা পরে আরও বেড়েছে।
বিশেষ করে, ৩৬ মিনিটে ডর্টমুন্ড স্ট্রাইকার ইউসোফা মোওকুকু যে গোল মিস করেছেন তা এই পর্যায়ের ফুটবলে ঠিক মেনে নেওয়ার মতো না। শুধু বলটিকে পোস্টে ঠেলে দিলেই হতো।
কিন্তু সেই সুযোগ অবিশ্বাস্যভাবে মিস করেছেন ১৭ বছর বয়সী এই জার্মান। বিরতির আগে আরও একবার গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছিলেন মোওকুকু। ঠিকাঠক ফিনিশ করতে পারলে প্রথমার্ধেই অন্তত তিন গোলে এগিয়ে যেতে পারত ডর্টমুন্ড।
বিরতির পর একাধিক পরিবর্তন আনেন সিটি বস পেপ গার্দিওলা। এর মাঝে ছিলেন হলান্ডও। তাঁর বদলে মাঠে নামেন বের্নার্দো সিলভা। ম্যাচ শেষে গার্দিওলা অবশ্য বলেন, জ্বর ভুগতে থাকায় হলান্ডকে বদলি করেছেন তিনি।
বিরতির পরও প্রথম সুযোগটি পেয়েছিল ডর্টমুন্ডই। যথারীতি সেটাও হাতছাড়া হয়েছে।
এরপর ৫৮ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে বড় মিসটি করেন রিয়াদ মাহরেজ। তাও আবার পেনাল্টিতে। দারুণভাবে পেনাল্টি ঠেকান ডর্টমুন্ড গোলরক্ষক গ্রেগর কোবেল। চাপে থেকেও এগিয়ে যাওয়ার নিশ্চিত সুযোগ হাতছাড়া করে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা। এ নিয়ে গার্দিওলার অধীনে ৮০ পেনাল্টির ২৫টিই মিস করল সিটি।
মিসের ধারাবহিকতাতেই যেন এরপর একরকম উদ্যোম হারিয়ে ফেলে দুই দল। আক্রমণের ধারও তখন কমে আসে। তবে ৬৭ মিনিটে ডর্টমুন্ডকে উদ্ধার করেন গোলরক্ষক কোবেল। এরপর দুই দলই অবশ্য আক্রমণের চেষ্টা করেছে তবে সেগুলো ম্যাচের উদ্যাপনের উপলক্ষ্য এনে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না।
অবশ্য এই ড্রয়ে খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না সিটির। গ্রুপ জি-থেকে শীর্ষে থেকেই পরের পর্বে গেল গার্দিওলার শীষ্যরা। আর ড্র করেও সিটির সঙ্গে গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে পরের পর্বে গেল ডর্টমুন্ডও।