র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ বেশ পিছিয়ে। তাই বলে বাংলাদেশকে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই, জানিয়েছেন এক মৌসুম বাংলাদেশের আবাহনীতে খেলে যাওয়া আফগান ডিফেন্ডার মাশিহ সাইগানি।
কিছুদিন আগেও মাশিহ সাইগানি খেলতেন বাংলাদেশে। বসুন্ধরা কিংসে জায়গা না পেয়ে যোগ দিয়েছিলেন আবাহনীতে। এক রকম আবাহনীর এক রকম মূল খেলোয়াড়ই হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর একমাত্র গোলেই মিনার্ভা পাঞ্জাবকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি কাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রেখেছিল আবাহনী। একজন ডিফেন্ডার হয়েও এএফসি কাপে আবাহনীর সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন আফগান এ ডিফেন্ডার। ৬ ম্যাচে গোল করেছিলেন তিনটি। এর আগে আবাহনীকে জিতিয়েছেন ফেডারেশন কাপের শিরোপাও।
ফলে এক মৌসুম খেললেও সাইগানির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কটা বেশ মধুর। যদিও আর আবাহনীতে খেলেন না তিনি। ভারতের আইজল এফসিতে খেলে এক বছরের জন্য ঢাকায় এসেছিলেন। ঢাকায় এক বছর থেকে আবারও ফিরে গেছেন ভারতে, এখন খেলেন চেন্নাইয়ান সিটি এফসিতে। এক বছর খেললেও, বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের সম্পর্কে বেশ ভালোই ধারণা নিয়ে গেছেন তিনি। আর বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের শক্তিমত্তা জানেন বলেই ভারতকে সতর্ক করে দিয়েছেন এই তারকা।
আগামী মঙ্গলবার ১৫ অক্টোবর কলকাতার যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে (সল্ট লেট স্টেডিয়াম) বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় পর্বে গ্রুপ 'ই'- এর ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ দলে রয়েছে বসুন্ধরা কিংস ও আবাহনীর খেলোয়াড়দের আধিক্য। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওই দুই দলের দুই বিদেশি কোচ বসুন্ধরার অস্কার ব্রুজেন ও আবাহনীর টমাস লেমোসের একটা প্রভাব আছে বাংলাদেশের খেলায়। সেটা জানেন সাইগানি, ‘বসুন্ধরা কিংসের কোচ অস্কার ব্রুজেন দলটার খেলার ধরন পালটে দিয়েছেন। আবাহনী কোচ টমাস মারিয়া লেমোসের খেলার ছাপও বোঝা যায় দলটার মধ্যে। ওরা যেমন পাস দিয়ে খেলতে স্বচ্ছন্দ, ঠিক একইভাবে প্রেস করে খেলতেও পিছপা হয় না।’
দলের মূল তিনজন খেলোয়াড় না থাকায় বেশ মর্মাহত মনে হয়েছে সাইগানিকে, ‘বাংলাদেশের মূল ডিফেন্ডার তপু বর্মণ, মূল মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ ও উইঙ্গার মাশুক মিয়া জনি- সবাই লিগামেন্টের বাজে চোটে পড়েছে। বলতেই হয়, ওদের মিস করবে বাংলাদেশ।'
আবাহনীর সাবেক সতীর্থ সোহেল রানা ও নাবিব নেওয়াজ জীবনকে নিয়ে আলাদা প্রশংসা ঝরেছে সাইগানির কণ্ঠ থেকে, ‘নাবিব নেওয়াজ খুবই ভালো খেলোয়াড়। ওর বেশ কিছু গুণ আছে। গতি আছে, কৌশলগত দিক দিয়েও ভালো। শারীরিক দিক দিয়ে অতটা শক্তিশালী না হলেও টেকনিক দিয়ে পুষিয়ে দেয়। আমার মতে ইমন রহমান বাবু ওদের মূল খেলোয়াড়, তবে সে স্কোয়াডে নেই। কেন নেই কে জানে! সোহেল রানাও বেশ দ্রুতগতির ফুটবলার।'
কাউন্টার-অ্যাটাক নির্ভর ফুটবল খেললে ভারতকে ঝামেলায় ফেলতে পারবে বাংলাদেশ, মনে করেন সাইগানি, ‘বাংলাদেশের কাউন্টার অ্যাটাকে খেলতে চাইবে। সেটা আটকানোই ভারতের মূল কাজ। ভারতের চেয়ে ভালো ফুটবল খেলতে চাইবে না বাংলাদেশ। ফল পেলেই হলো। ভারত ছোট কোনো ভুল করলেও তাদের শাস্তি দিয়ে বসতে পারে তারা।’