জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ৮ মাসের বেশি টিকতে পারেননি নেইমার। নেইমারের জায়গায় অধিনায়কত্ব পেয়েছেন তাঁরই ক্লাব সতীর্থ দানি আলভেজ। পরে চোটের কারণে কোপা আমেরিকাতেও খেলা হচ্ছে না নেইমারের। তবে পিএসজি তারকার কাছ থেকে নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও ব্রাজিলের বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার বলছেন, ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলেন কোচ তিতে
গত মাসের শেষ দিকে নেইমারের থেকে অধিনায়কত্ব কেড়ে নিয়ে দানি আলভেজকে ব্রাজিলের অধিনায়ক করেছেন তিতে। কোপা আমেরিকার আগে এ রকম একটা সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছিলেন অনেকে। আর নেইমারেরও কপাল খারাপ। চোটের কারণে কোপা আমেরিকাতেই খেলা হচ্ছে না ব্রাজিলিয়ান তারকার। তবে ক্লেবারসনের মতে, নেইমারকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে ঠিক কাজই করেছে ব্রাজিল।
২০০২ সালে সর্বশেষ বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছিল ব্রাজিল। লুইস ফেলিপে স্কলারির অধীনে বিশ্বকাপজয়ী সেই দলের সদস্য ছিলেন ক্লেবারসন। পিএসজি তারকাকে অধিনায়কত্ব থেকে সরানোর সিদ্ধান্তে কোনো ভুল দেখছেন না ক্লেবারসন, ‘নেইমারের অধিনায়কত্ব কেড়ে নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে কোচিং স্টাফ। নেইমারের সামর্থ্যের প্রতি ব্রাজিলের সবারই শ্রদ্ধা আছে। কিন্তু এখনকার ফুটবলে আপনি যখন কোনো খারাপ কাজ করবেন, সেটি সবার সামনে আসবেই।’
মাঠের বাইরের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে নেইমারের খেলায় প্রভাব পড়ছে, এমনটাও মনে করেন সাবেক এই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবলার, ‘মাঠের বাইরে এখনো ভুল করে যাচ্ছে নেইমার। এতে করে ওর মাঠের খেলায় প্রভাব পড়ছে। আমার মনে হয় ব্রাজিলের সবাই এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করবে।’
রাশিয়া বিশ্বকাপের পরে পাকাপাকিভাবে নেইমারের হাতে অধিনায়কের বাহুবন্ধনী তুলে দিয়েছিলেন তিতে। কিন্তু ৮ মাসের বেশি টিকতে পারলেন না সাবেক এই বার্সেলোনা তারকা। মূলত মাঠের বাইরে তাঁর আচরণগত কর্মকাণ্ডের কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ব্রাজিল। গত মৌসুমে ফ্রেঞ্চ কাপ ফাইনালে রেনেঁর কাছে পেনাল্টিতে হেরে শিরোপা খোয়ানোর পর গ্যালারির এক দর্শকের গায়ে হাত তুলে তিন ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ২৭ বছর বয়সী এই তারকা ফুটবলার। অনেকের ধারণা, ওই ঘটনার প্রভাব হিসেবেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিতে।
২০০৭ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে সর্বশেষ কোপার শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছিল ব্রাজিল। এরপর আরও তিনবার মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের আসর বসলেও ব্রাজিল ফাইনালে উঠতে পারেনি একবারও। এবার নেইমারকে ঘিরে এক যুগের এই শিরোপা খরা ঘোচানোর স্বপ্ন দেখছিল ব্রাজিল। কিন্তু টুর্নামেন্ট শুরুর আগে গোড়ালির চোটে ছিটকে গেছেন নেইমার। ক্লেবারসন অবশ্য বলছেন, নেইমার না থাকলেও এই ব্রাজিলের সামর্থ্য আছে ফাইনালে ওঠার। পরশু বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ছয়টায় ব্রাজিল-বলিভিয়া ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে কোপা আমেরিকা।
২০০৭ এর মতো এবারের আসরের ফাইনালেও ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা মহারণ চাইছেন ‘সেলেসাও’দের হয়ে ৩২টি ম্যাচ খেলা সাবেক মিডফিল্ডার ক্লেবারসন, ‘এবার কোপা জেতার ভালো সম্ভাবনা আছে ব্রাজিলের। মারাকানায় পরিবারের সঙ্গে বসে ব্রাজিলের জয়োৎসব দেখতে চাই আমি। বিশেষ করে ফাইনালটা যদি হয় আর্জেন্টিনার বিপক্ষে, তাহলে তো কথাই নেই। আর্জেন্টিনাকে নিয়েই ব্রাজিলের সতর্ক থাকতে হবে, কারণ ওদের দলে লিওনেল মেসির মতো একজন ফুটবলার আছে।’