সবাই যে কারও সঙ্গে জার্সি বদল করে না। আবার চাইলেই যে কারও সঙ্গে জার্সি বদল করা যায় না। বিশেষ করে যাঁর সঙ্গে জার্সি বদল করতে চাচ্ছেন, তাঁর দলকে ৮-২ গোলে হারানোর পর প্রত্যাখ্যাত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। বায়ার্ন মিউনিখ উইঙ্গার আলফানসো ডেভিসের তাই আর জার্সি বদল করা হয়নি।
চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে কাল লিঁওকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে বায়ার্ন। এ ম্যাচের পর সংবাদমাধ্যমকে সেই ঘটনাটা বলেছেন ডেভিস। কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনার জালে ৮ গোল করেছিল বায়ার্ন। সে ম্যাচে দুর্দান্ত এক গোলের রূপকারও ছিলেন ডেভিস। বাঁ প্রান্তে লিওনেল মেসি ও নেলসন সেমেদোদের ঘোল খাইয়ে সতীর্থকে দিয়ে গোল করিয়েছিলেন ঘানা বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান এ ফুটবলার। জয়ের পর মেসির সঙ্গে জার্সি বদল করতে চেয়েছিলেন ডেভিস।
আমি জার্সি বদল করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সম্ভবত তাঁর (মেসির) মন খারাপ ছিল। ব্যাপার না, আশা করি পরেরবার হবে।আলফানসো ডেভিস, বায়ার্ন মিউনিখ
ইউরোপিয়ান ফুটবলে এ দৃশ্য মোটেও অপরিচিত নয়। ম্যাচ শেষে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও মেসির সঙ্গে জার্সি বদল করেন অনেকেই। বিশ্বসেরা দুই তারকাও খুশি মনে তা করে থাকেন। অন্তত সরাসরি ‘না’ করে দেওয়ার কথা খুব বেশি শোনা যায়নি। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালের পর ডেভিসের জার্সি বদলের আবদারে তাঁকে প্রত্যাখ্যানই করেছিলেন বার্সা তারকা।
বায়ার্ন তারকা অবশ্য এ নিয়ে মোটেও ভাবছেন না। তিনি ‘একবার না হলে পরেরবার...’ নীতিতে বিশ্বাসী। বিটি স্পোর্টসকে ডেভিস বলেন, ‘আমি জার্সি বদল করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সম্ভবত তাঁর (মেসি) মন খারাপ ছিল। ব্যাপার না, আশা করি পরেরবার হবে।’ প্রতিপক্ষের কাছে ৮ গোল হজমের পর জার্সি বদলের মতো মানসিক অবস্থা না থাকাই স্বাভাবিক। মেসি সম্ভবত হারের হতাশা থেকেই এই সৌজন্য দেখানো থেকে নিজেকে দূরে রেখেছিলেন। তাই মেসির জার্সিটা আপাতত স্মারক হিসেবে রাখতে পারেননি ১৯ বছর বয়সী বায়ার্ন তারকা।
ঘানার শরণার্থীশিবিরে জন্ম ডেভিসের। পাঁচ বছর বয়সে তাঁকে নিয়ে কানাডায় পাড়ি জমান তাঁর বাবা-মা। কানাডার জাতীয়তা পাওয়া ডেভিস দেশটির হয়ে ১৭টি ম্যাচও খেলেছেন। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে খেলা প্রথম কানাডিয়ান ফুটবলারও তিনি। সালে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপস থেকে এমএলএস রেকর্ড ৯.৮৪ পাউন্ডে তাঁকে কেনে বায়ার্ন। অথচ এই ডেভিসকেই কেনার কথা বার্সা সভাপতি হোসে মারিয়া বার্তোমেউকে বলেছিলেন ক্লাবটির বুলগেরিয়ান কিংবদন্তি রিস্টো স্টইচকভ। বার্তোমেউয়ের জবাব ছিল, ‘না, সে কানাডিয়ান।’