এ মৌসুমের শুরুতে এমন কিছু চিন্তা করা যায়নি। রিয়াল মাদ্রিদের আক্রমণভাগ গোল পাচ্ছিল না। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বিদায়ের পর এই উপসর্গ দেখা দিয়েছে রিয়ালের। কিন্তু লস ব্লাঙ্কোদের রক্ষণভাগের সমস্যা নতুন কিছু নয়। মৌসুমের পর মৌসুম ধরেই এটা দেখা যায়। রক্ষণাত্মক কোচ দায়িত্বে থাকুক কিংবা আক্রমণাত্মক কোচ; স্প্যানিশ পরাশক্তির গোল হজমে এসবের কোনো প্রভাব থাকে না।
চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের বিপক্ষে তিন গোল খাওয়া রিয়াল নিজেদের মাঠে ক্লাব ব্রুগের বিপক্ষে প্রথমার্ধেই খেয়েছিল দুই গোল। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছিল সে ম্যাচে প্রথমার্ধের পর চাপ সামলাতে না পেরে অসুস্থ হয়ে মাঠ ছাড়েন গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। তখন মনে হয়েছিল গত মৌসুমের মতো এবারও প্রতিপক্ষের গোলবন্যা দেখবে রিয়াল। সেই রিয়াল কি না লিগের প্রথমার্ধ শেষ করল ৩২ বছরে সবচেয়ে কম গোল খাওয়ার রেকর্ড গড়ে!
লা লিগার ১৯ ম্যাচ হয়েছে। ১৯ ম্যাচে বার্সেলোনার সমান ৪০ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপা দৌড়ে ভালোভাবেই আছে তারা। রিয়ালের গোলের সমস্যা এখনো কমেনি। ১৯ ম্যাচে মাত্র ৩৬ গোল করেছে তারা। বার্সেলোনার চেয়ে ১৩ গোল কম। এক করিম বেনজেমা ছাড়া লিগে রিয়ালের হয়ে এখনো তিনটির বেশি গোল করতে পারেননি। তবু বার্সেলোনার সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার কারণ রিয়ালের রক্ষণ। ১৯ ম্যাচে মাত্র ১২ গোল খেয়েছে রিয়াল!
লিগের প্রথমার্ধ শেষে এত গোল খাওয়ার রেকর্ড রিয়াল করেছিল সেই ১৯৮৭/৮৮ সালে। এর পেছনে পুরো কৃতিত্ব কোর্তোয়ার। লিগে এখন পর্যন্ত ১৬ ম্যাচ খেলে মাত্র ৯ গোল হজম করেছেন কোর্তোয়া। ক্লাব ব্রুগার বিপক্ষে ওভাবে মাঠ ছাড়ার পর থেকেই বদলে গিয়েছেন কোর্তোয়া। লিগে গত ৯ ম্যাচে মাত্র ২ গোল খেয়েছেন এই বেলজিয়ান গোলরক্ষক। লিগের প্রথম ৭ ম্যাচে ৭ গোল খেয়েছিলেন তিনি। ১৬ ম্যাচে ৯ গোল হজম করে লিগের সেরা গোলরক্ষকের দৌড়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ইয়ান অবলাকের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছেন কোর্তোয়া।
গোল ঠেকানো শুধু গোলরক্ষকের কাজ নয়। রক্ষণেরও ভূমিকা থাকে। গোছানো রক্ষণভাগ গোলরক্ষকের কাজটা কমিয়ে আনেন। তবে গেটাফের বিপক্ষে তিনটি নিশ্চিত গোল ঠেকিয়ে দেওয়া কোর্তোয়া রক্ষণের ভুলগুলোও এখন সামলে নিচ্ছেন। লিগের প্রথম ৪ ম্যাচেই ৬ গোল খেয়েছিলেন কোর্তোয়া। গোল লক্ষ্য করে প্রতিপক্ষের নেওয়া ১৩ শটের মাত্র ৭টি ঠেকিয়েছিলেন। কিন্তু এর পর থেকেই দারুণ ফর্মে আছেন। পরের ১২ ম্যাচে তাঁর গোল লক্ষ্য করে মারা ৩০ শটের মধ্যে ২৭টিই গোল লাইন পেরোতে পারেনি। মোট ৯ ম্যাচে কোনো গোল খাননি কোর্তোয়া।
গত মৌসুমের সঙ্গে এখানেই পার্থক্য রিয়ালের। গত মৌসুমে এ সময়ে ২৪ গোল খেয়ে বসেছিল রিয়ালের রক্ষণভাগ। সেটা এ শতাব্দীতে লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোল হজমের রেকর্ড। ২০০৮/০৯ মৌসুমে কিংবদন্তি ইকার ক্যাসিয়াসের সময়েই ১৯ ম্যাচে ২৭ গোল খেয়েছিল রিয়াল রক্ষণ। এ মৌসুমের পরই ঢালাওভাবে দল সাজিয়েছিল রিয়াল।