অথচ ফিলিপ কস্টিচের খেলার কথাই ছিল না এই ম্যাচে!
ইতালিয়ান ক্লাব লাৎসিওর হয়ে খেলার জন্য একরকম মুখিয়ে ছিলেন এই সার্বিয়ান উইঙ্গার। লাৎসিওর কোচ মরিজিও সারি নতুন শিষ্য হিসেবে জার্মান বুন্দেসলিগায় বহু বছর ধরে খেলা এই উইঙ্গারের দিকে নজর দিয়েছিলেন। কিন্তু দলের গুরুত্বপূর্ণ এই খেলোয়াড়কে ছাড়তে রাজি হয়নি আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট। কস্টিচকে ধরে রাখার জন্য ছলাকলার আশ্রয়ও নিয়েছিল জার্মান ক্লাবটা।
ইচ্ছে করে লাৎসিওকে ভুল ইমেইল ঠিকানা দিয়েছিল ফ্রাঙ্কফুর্ট। যে ঠিকানায় কস্টিচের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠানোর কথা লাৎসিওর। ফলে স্বাভাবিকভাবেই, দলবদলের শেষ দিন পর্যন্ত ফ্রাঙ্কফুর্টের অফিশিয়াল মেইলে লাৎসিওর কাছ থেকে কস্টিচের জন্য কোনো প্রস্তাব আসেনি। ওদিকে ফ্রাঙ্কফুর্ট কস্টিচকে জানিয়ে দেয়, লাৎসিওর কাছ থেকে তারা কোনো প্রস্তাব পায়নি। শেষমেশ ফ্রাঙ্কফুর্টেই থেকে যেতে হয় কস্টিচকে।
পরে কস্টিচের মুখপাত্র ফ্রাঙ্কফুর্টের এই গোমর ফাঁস করে দেন। ক্ষিপ্ত কস্টিচ কিছুদিন ফ্রাঙ্কফুর্টের হয়ে অনুশীলন করেননি, ম্যাচ খেলতে চাননি। যা হোক, দুই পক্ষের সেই মন-কষাকষি কমেছে এখন। ফ্রাঙ্কফুর্টের হয়ে আবারও মাঠে নামছেন কস্টিচ। গত রাতেই যেমন, বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নামান হয়েছিল তাঁকে। এই কস্টিচের গোলেই বায়ার্নের বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছে ফ্রাঙ্কফুর্ট, ঘটিয়েছে অঘটন।
বায়ার্ন হেরেছে নিজেদের মাঠেই। ২১ বছর পর মিউনিখের মাঠে গিয়ে লিগ ম্যাচ জিতে এল ফ্রাঙ্কফুর্ট। এমন রেকর্ড হয়তো বায়ার্ন কোচ ইউলিয়ান নাগলসমান জীবনেও চাননি!
দুদিন আগেই চ্যাম্পিয়নস লিগে ইউক্রেনিয়ান ক্লাব দিনামো কিয়েভকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল বায়ার্ন। সে ম্যাচ জিতে বায়ার্ন কোচ হিসেবে দুর্দান্ত এক রেকর্ড গড়েছিলেন নাগলসমান। বায়ার্নের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম দশ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচের মধ্যে নয়টিতেই পেয়েছিলেন জয়। এর আগে এমন কীর্তি আর অন্য কোনো বায়ার্ন কোচের ছিল না। পরের ম্যাচে এসেই সবকিছু কেমন যেন বদলে গেল!
প্রথমে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন জার্মান মিডফিল্ডার লিওন গোরেৎস্কা। তিন মিনিট পরেই কস্টিচের কর্নারে হেড করে ফ্রাঙ্কফুর্টকে সমতায় ফেরান অস্ট্রিয়ান সেন্টারব্যাক মার্টিন হিন্টেরেগার। ৮৩ মিনিটে গোল করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন কস্টিচ। ভেবে দেখুন, কস্টিচ যদি লাৎসিওতে পাড়ি জমাতেন, ফ্রাঙ্কফুর্ট এই অসাধারণ জয় কি পেত?
২০১৯ সালের নভেম্বরের পর এই প্রথম নিজেদের মাঠে হারল বায়ার্ন। স্বাভাবিকভাবেই, ম্যাচ হেরে হতাশ নাগলসমান, ‘যেকোনো হারই কষ্ট দেয় অনেক। তবে আজকের হারটা চাইলেই এড়ানো যেত। আমরা যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছিলাম গোল করার জন্য। শেষে কস্টিচ দুর্দান্ত একটা গোল করে বসেন। ওদের গোলকিপার কেভিন ট্র্যাপও অসাধারণ খেলেছে। আমরাও সুযোগ পেয়েছি, কিন্তু কাজে লাগাতে পারিনি।’
হারের পেছনে নিজেদের রক্ষণভাগকে আকারে-ইঙ্গিতে দুষেছেন নাগলসমান, ‘আমাদের রক্ষণভাগ আজকের চেয়ে গত সপ্তাহে ভালো খেলেছিল। আমরা ওদেরকে অনেক বেশি জায়গা ছেড়ে দিয়েছি। কস্টিচকে উপামেকানোকে (বায়ার্ন ডিফেন্ডার দায়োত উপামেকানো) অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। যার ফলাফল জয়সূচক গোল। উপা এর আগে আমাদের হবে অনেক ভালো ম্যাচ খেলেছে, তাই একদিন এমন একটু হতেই পারে।’
এই হারের পরেও জার্মান বুন্দেসলিগার পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে বায়ার্নই আছে। তাঁদের সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বায়ার লেভারকুসেন।