হারতে যেন ভুলেই গিয়েছিল পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি। ইতিহাদে আজ মাঠে নামার আগে প্রিমিয়ার লিগে টানা ১৫ ম্যাচ অপরাজিত ছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ১৫ ম্যাচ আগের সেই হারটা ছিল ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে গত বছর অক্টোবরে। এরপর ১৪ জয় ও এক ড্র । উড়তে থাকা গার্দিওলার দলকে অবশেষে মাটিতে নামাল আন্তোনিও কন্তের টটেনহাম, সেটাও সিটির মাঠেই। রোমাঞ্চকর এক ম্যাচে কন্তের দল জিতেছে ৩-২ গোলে, সিটি পেয়েছে ভুলতে বসা হারের স্বাদ।
টটেনহামের হয়ে জোড়া গোল করেছেন হ্যারি কেইন, একটি দেয়ান কুলুসেভস্কির। তিন গোলের দুটিই বানিয়ে দিয়েছেন সন হিউং-মিন। সিটির হয়ে একটি করে গোল করেছেন ইলকায় গুন্দোয়ান ও রিয়াদ মাহরেজ।
এ হারের পরও লিগের পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষেই আছে সিটি। ২৬ ম্যাচ থেকে গার্দিওলার দলের পয়েন্ট ৬৩। ওদের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলা লিভারপুলের পয়েন্ট ৫৭। ব্যবধানটা আপাতত ৬ পয়েন্টের হলেও লিডসের বিপক্ষে পরের ম্যাচেই সেটা ৩ পয়েন্টে নামিয়ে আনতে পারে লিভারপুল। প্রিমিয়ার লিগের শিরোপার লড়াই তখন আরও জমে যাবে নিঃসন্দেহে।
আপাতত তিনে থাকা চেলসির পয়েন্ট ২৫ ম্যাচে ৫০, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড চারে আছে ২৫ ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে। আজকের জয়ের পর টটেনহামের পয়েন্ট ২৩ ম্যাচে ৩৯।
ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে রক্ষণভাগ থেকে পাওয়া বলে পা ছুইঁয়ে হ্যারি কেইন দারুণ এক পাস বাড়ান সন হিউং-মিনের দিকে। সিটির ডিফেন্ডাররা পিছু ছুটে আসার আগেই সেই বল নিয়ে সন ডি-বক্সের ভেতর। বিপদ দেখে এগিয়ে এসেছিলেন সিটির গোলরক্ষক এদেরসন। সন নিজে শট না নিয়ে তাই বল বাড়ালেন দেয়ান কুলুসেভস্কির দিকে। ফাঁকা জালে বল পাঠাতে ভুল হয়নি সুইডিশ ফরোয়ার্ডের। জুভেন্টাস থেকে কয়েকদিন আগেই ধারে টটেনহামে নাম লেখানো কুলুসেভস্কি প্রিমিয়ার লিগের অভিষেকটা রাঙ্গালেন গোলে।
এগিয়ে থাকার সুবিধাটা যে টটেনহাম আধঘন্টার বেশি রাখতে পারেনি, তার দায় ওদের গোলরক্ষক হুগো লরিসের। রাহিম স্টার্লিংয়ের ক্রস নিজের নিয়ন্ত্রনে না নিয়ে বল ঠেলে দেন সামনে থাকা ইলকায় গুন্দোয়ানের দিকে! সমতা ফেরানোর সুযোগ নষ্ট করেননি সিটি মিডফিল্ডার।
লরিসের সেই ভুলের খেসারত টটেনহামকে দিতে হয়নি সন-কেইন জুটির দারুণ পারফরম্যান্সে। ৫৯ মিনিটে সনের লম্বা পাস থেকে হ্যারি কেইন বল পেয়ে যান সিটির বক্সের ভেতর। একা থাকা সিটির গোলরক্ষক এদেরসনকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠান ইংলিশ স্ট্রাইকার।
কেইন অবশ্য মিনিট পনেরো পরেই আরও একবার সিটির জালে বল পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু কুলুসেভস্কি অফসাইড থাকায় ভিএআরে বাতিল হয়ে যায় সেই গোলটা।
টটেনহাম ২-১ গোলে ম্যাচটা জিততে যাচ্ছে, এমন যখন মনে হচ্ছিল, সেই সময়ে পেনাল্টি পেয়ে যায় ম্যান সিটি। নিজেদের বক্সে হাতে বল লেগেছিল টটেনহাম ডিফেন্ডার ক্রিস্টিয়ান রোমেরোর। ম্যাচের ঘড়িতে তখন যোগ হওয়ার সময়ের দ্বিতীয় মিনিট চলছে। স্পট কিক থেকে সমতা ফেরান রিয়াদ মাহরেজ (২-২)।
কিন্তু ইতিহাদে যে নাটকের আরও বাকি তখনও বোঝা যায়নি। যোগ হওয়া সময়ের পঞ্চম মিনিটে ডান পাশ থেকে কুলুসেভস্কি দারুণ এক দৌড়ে ক্রস তুলেন সিটির বক্সে। দুর্দান্ত হেডে টটেনহামকে আবার এগিয়ে দেন হ্যারি কেইন। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বাজে ম্যাচের শেষ বাঁশি।