স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে টানা পঞ্চম সাফের শিরোপা জিতেছে ভারত। ২০১০ থেকে শুরু হয়ে মেয়েদের পাঁচটি সাফের আসর গড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত অপরাজিত আছে ভারত।
শহরে এত বড় আয়োজন আগে কখনোই হয়নি। এর ওপর স্বাগতিক দল উঠেছে ফাইনালে। তাই তো বিরাটনগর শহরজুড়ে তুমুল উত্তেজনা। হাজারো মানুষের গন্তব্য শহীদ রঙ্গশালা। দুপুর থেকেই স্টেডিয়ামের প্রতিটি গেটে দর্শকের ভিড়। যে ভিড় সামলাতে দিশেহারা স্থানীয় পুলিশ। কারও হাতে নেপালের পতাকা। কারও গায়ে নেপাল জাতীয় দলের জার্সি। মেয়েদের সাফের প্রথম শিরোপা জেতার স্বপ্নে বিভোর হরি খাড়কার নেপাল শেষ পর্যন্ত আর পারেনি। শক্তিশালী ভারত আজ ৩-১ গোলে হারিয়ে জিতে নিয়েছে সাফের টানা পঞ্চম শিরোপা।
আর হেরে যাওয়ায় চতুর্থবারের মতো রানার্সআপ হলো নেপাল। ভারতের হয়ে একটি করে গোল করেছেন দালিমার চিবার, গ্রেস দাংমেই ও অঞ্জু তামাং। নেপালের একমাত্র গোলটি সাবিত্রা ভান্ডারির। এই জয়ে সব কটি সাফ মিলিয়ে ২৩ ম্যাচ অপরাজিত থাকার গর্বের রেকর্ডটা ধরে রাখল ভারত।
পরশু সংবাদ সম্মেলনে নেপালের কোচ হরি খাড়কা বলেছিলেন, ‘ফাইনালের দিনটি আমাদের হবে।’ কিন্তু দিনটা নিজেদের করে রাখতে পারলেন কোথায়? অথচ টুর্নামেন্টের সেরা দুই দলই উঠেছিল ফাইনালে। উপভোগ্য লড়াইয়ের আশা করেছিলেন দর্শক। যখনই নেপালি ফরোয়ার্ড সাবিত্রা ভান্ডারির পায়ে পড়েছে বল, গর্জে উঠেছে গ্যালারি। প্রায় ১২ হাজার দর্শক ধারণক্ষম স্টেডিয়াম উপচে পড়েছিল আজ। এমনকি অনেকে টিকিট না পেয়ে ফিরে গেছেন বাড়িতে। স্টেডিয়াম লাগোয়া বাড়িগুলোর ছাদভর্তি ছিলেন দর্শক। দিন শেষে এই দর্শকেরা শেষ পর্যন্ত হতাশা নিয়েই ফিরে গেছেন।
শুরুর মিনিট বিশেক বলতে গেলে নেপালই খেলেছে। কিন্তু ধারার বিপরীতে আচমকাই গোল খেয়ে বসে নেপাল। ম্যাচের ২৬ মিনিটে দালিমার চিবারের প্রায় ২০ গজ দূর থেকে নেওয়া রংধনু শট বাতাসে ভেসে ঢুকেছে জালে। নেপালের গোলরক্ষক আনজিলা সুবা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেছেন! গোল খেয়েই ম্যাচে ফেরার তাড়া ছিল স্বাগতিকদের। ৩৩ মিনিটে গীতা রানার লম্বা বলে দারুণ এক হেডে সাবিত্রা সমতায় ফেরান নেপালকে। এরপর থেকে বলতে গেলে তিনজন ডিফেন্ডার সারাক্ষণ বোতলবন্দী করে রাখেন সাবিত্রাকে।
৬৩ মিনিটে ভারত আবারও এগিয়ে গেছে গ্রেস দাংমেইয়ের গোলে। নেপালের রক্ষণকে বোকা বানিয়ে বক্সে ঢোকেন গ্রেস। সামনে তখন জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে আসা নেপালি গোলকিপার আনজিলা। কিন্তু আনজিলাকে ফাঁকি দিলেও দৌড়ে এসে গোল বাঁচাতে চেষ্টা করেছিলেন ডিফেন্ডার পুনম। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি, স্কোর হয়েছে ২-১। আর বদলি হিসেবে নেমে ৭৮ মিনিটে নেপালের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকেছেন অঞ্জু তামাং।
এই জয়ের পর একটাই প্রশ্ন, মেয়েদের দক্ষিণ এশিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে ভারতকে থামিয়ে দিয়ে শিরোপার জেতার মতো কি কোনো দল-ই নেই!