প্রিমিয়ার থেকে নেওয়া যাওয়া ব্রাদার্স এবার চ্যাম্পিয়নশিপ লিগেও খেলবে না
প্রিমিয়ার থেকে নেওয়া যাওয়া ব্রাদার্স এবার চ্যাম্পিয়নশিপ লিগেও খেলবে না

ঘরোয়া ফুটবল

হারিয়ে যাওয়ার পথে ঐতিহ্যবাহী ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব

আর্থিক সংকটের কারণে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে খেলছে না প্রিমিয়াম লিগ থেকে অবনমিত ব্রাদার্স ইউনিয়ন।

৪৬ বছর পর গত ১৭ আগস্ট দেশের শীর্ষ ফুটবল লিগ থেকে অবনমিত হয় ব্রাদার্স ইউনিয়ন। পেশাদার লিগের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে চ্যাম্পিয়ন বা রানার্সআপ হয়ে প্রিমিয়ারে ফেরার সুযোগ ছিল ক্লাবটির সামনে। কিন্তু আপাতত সেই সুযোগ নিচ্ছে না ব্রাদার্স। ১৫ জানুয়ারি শুরু হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের দলবদলে তারা অংশ নেবে না। ২০ ফেব্রুয়ারি কমলাপুর স্টেডিয়ামে শুরু চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে থাকছে না গোপীবাগের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি।

চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে খেলতে চাইলে গত ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে বাফুফের কাছে ক্লাব লাইসেন্সিংয়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হতো ক্লাবগুলোকে। অন্য ক্লাবগুলো সেসব জমা দিলেও ব্রাদার্স দেয়নি। কমলা জার্সিধারীদের বাদ দিয়েই তাই চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের ১২টি দল চূড়ান্ত করেছে বাফুফের পেশাদার লিগ কমিটি।

বেশ কয়েক মৌসুম ধরে লিগে যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্স ছিল কমলা বাহিনীর

১৯৭২ সালে তৃতীয় বিভাগ দিয়ে ঢাকার ফুটবলে ব্রাদার্সের আবির্ভাব। সে সময় যাঁর বাড়িতে ব্রাদার্স ফুটবল দলের ক্যাম্প হতো, সেই শহিদউদ্দিন আহমেদ সেলিম পরপারে চলে গেছেন ৬ জানুয়ারি। প্রয়াত বন্ধুকে স্মরণ করে সত্তর–আশির দশকে ব্রাদার্সের অন্যতম তারকা ফুটবলার হাসানুজ্জামান বাবলু বললেন, ‘ব্রাদার্সের অবনমিত হওয়ার খবরে সেলিম খুব কেঁদেছিল। বেঁচে থাকলে আরও বেশি কষ্ট পেত সে। বর্তমান নেতৃত্ব ব্রাদার্স ক্লাবটাকে আর কত নিচে নামাবে জানি না। আমরা ভীষণ ব্যথিত, দুঃখিত। জীবদ্দশায় ব্রাদার্সের এমন করুণ পরিণতি দেখব ভাবিনি।’

১৯৮১ সালে আগা খান গোল্ডকাপে চ্যাম্পিয়ন ব্রাদার্স দল। এমন অনেক গৌরবের সাক্ষী ক্লাবটি

মূলত আর্থিক সংকটের কারণেই ব্রাদার্স চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে খেলছে না বলে জানা গেছে। তবে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে খেলতে কম বাজেটের হলেও একটা দল গড়া যেত বলে মনে করেন বাফুফের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদী, ‘বাফুফের নির্বাহী কমিটিতে ব্রাদার্সের তিনজন কর্মকর্তা আছেন। ডিরেক্টর ইনচার্জ মহিউদ্দিন আহমেদ বাফুফের সহসভাপতি। আমের খান ও মহিদুর রহমান কার্যনির্বাহী সদস্য। ওরা চাইলে ক্লাবের সংকট নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে পারত। প্রয়োজনে বাফুফের একাডেমি টিম ব্রাদার্স নাম নিয়ে খেলত। কিন্তু ব্রাদার্স কোনো যোগাযোগই করেনি বাফুফের সঙ্গে।’ তাঁর মতে, আর্থিক সংকট নয়, কর্মকর্তাদের আগ্রহের অভাবেই ব্রাদার্সের এই দুরবস্থা।

ব্রাদার্সের মতো ঐতিহ্যবাহী ক্লাব হারিয়ে যাবে?

যে ক্লাবের দুরবস্থা নিয়ে এত হাহাকার, সেই ব্রাদার্সের ডিরেক্টর ইনচার্জ মহিউদ্দিন আহমেদ অবশ্য এ ব্যাপারে কথাই বলতে চাননি। প্রথম আলোকে গতকাল তিনি শুধু বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে আমেরের (আমের খান, ব্রাদার্সের পরিচালক ও ফুটবল দলের ম্যানেজার) সঙ্গে কথা বলুন। সে ব্রাদার্সের ফুটবল দেখে।’ কিন্তু ভারতে অবস্থানরত আমেরের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে তিনিও বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘এ নিয়ে পরে কথা বলব।’