>সেনেগালকে ১-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে কলম্বিয়া। ‘এইচ’ গ্রুপ থেকে নাটকীয়ভাবে বিদায় ঘটল সেনেগালের
হারের সঙ্গে তাহলে হলুদ কার্ডও সেনেগালের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াল!কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটা ড্র করলেই শেষ ষোলোয় উঠত আফ্রিকার দলটি। কিন্তু লাতিন দলের কাছে তারা হেরেছে ১-০ গোলে। তাতেও সেনেগালের আশা টিকে ছিল। কারণ, একই সময়ে শুরু হওয়া আরেক ম্যাচে পোল্যান্ডের কাছে জাপান হেরেছে ১-০ গোলে। এতে সেনেগাল ও জাপানের পয়েন্ট সমান হওয়ায় হিসাবে আসে দুই দলের গোল ব্যবধান। কিন্তু এই হিসাবেও সমান অবস্থানে দাঁড়িয়ে দুই দল। আর তাই হিসাবে আসে ‘ফেয়ার প্লে’ অর্থাৎ কোন দল কত কম কার্ড দেখেছে। এই হিসাবে জাপানের সঙ্গে পিছিয়ে পড়ায় গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় ঘটল সেনেগালের। আর এর সঙ্গে এই বিশ্বকাপ থেকে আফ্রিকা মহাদেশের নামও মুছে গেল।
গ্রুপ পর্বের এই তিন ম্যাচে চারটি হলুদ কার্ড দেখেছে জাপান। অন্যদিকে ছয়টি হলুদ কার্ড দেখেছে সেনেগাল। এর মধ্যে শেষ হলুদ কার্ডটা কলম্বিয়ার বিপক্ষে এই ম্যাচে দেখেছেন এম’বায়ে নিয়াং। আগের ম্যাচেও হলুদ কার্ড দেখেছিলেন এই ফরোয়ার্ড। সেনেগাল ম্যাচটা ড্র করতে পারলেও হলুদ কার্ড এভাবে আলোচনায় উঠে আসত না। কিন্তু ৭৪ মিনিটে কর্নার থেকে ইয়েরে মিনার হেডে কলম্বিয়ার জয়সূচক গোলটাই এভাবেই আলোচনায় তুলে এনেছে হলুদ কার্ডকে।
৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘এইচ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে নকআউট পর্বে উঠল কলম্বিয়া। জাপান ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে শেষ ষোলোয় কলম্বিয়ার সঙ্গী হলো। সেনেগালের সংগ্রহও জাপানের সমান, ৪ পয়েন্ট। এশিয়ান দলটির সঙ্গে তাদের গোল ব্যবধানও সমান (০)। শুধু জাপানের চেয়ে বেশি হলুদ কার্ড দেখার জন্যই ছিটকে পড়তে হলো সেনেগালকে। পোল্যান্ডের বিদায় তো আগেই নিশ্চিত হয়েছে।
সেনেগালের এমন বিদায় দুঃখজনক হলেও তারা কিন্তু গোলের সুযোগ পেয়েছিল। সাদিও মানে একাই প্রথমার্ধে দুটি গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন। অবশ্য ভাগ্যকেও তারা দুষতে পারে। ১৭ মিনিটে সেনেগাল ফরোয়ার্ড মানেকে বক্সে ফেলে দেন কলম্বিয়ার ডেভিনসন সানচেজ। পেনাল্টির বাঁশি বাজান মাঠের রেফারি। তবে সিদ্ধান্তটা অনেক ‘ক্লোজ’ হওয়ায় ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভিএআর) সাহায্য নেওয়া হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, বলটাই লক্ষ্য ছিল। সানচেজের ও বলে পা লাগিয়েছেনও। এতে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত পাল্টাতে বাধ্য হন মাঠের রেফারি।
মানেরা জানতেন, ড্র করলেই শেষ ষোলো নিশ্চিত। এ কারণে হয়তো গোল হজমের আগ পর্যন্ত তাঁরা সেভাবে আক্রমণেও ওঠেননি। কিন্তু গোল হজমের পর তাঁরা মরিয়া হয়ে বেশ কটি আক্রমণ করেছেন। এর মধ্যে ৭৫ থেকে ৮৬ মিনিটের মধ্যে তাঁরা তিন থেকে চারটি গোলের সুযোগ বের করেছিলেন। দুটি দারুণ সেভ করেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ডেভিড ওসপিনা। এর মধ্যে একটি শট ছিল নিয়াংয়ের। ৮১ মিনিটে সেনেগালের ইসমাইল সারের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট না হলে সেনেগাল ম্যাচে ফিরতে পারত।
শেষ ষোলো নিশ্চিতে জয়ের খোঁজে মাঠে নেমেছিল কলম্বিয়া। কিন্তু প্রথমার্ধে তারা মাত্র একটি শট নিতে পেরেছে সেনেগালের গোলপোস্ট তাক করে। চোটের কারণে ৩১ মিনিটে হামেশ রদ্রিগেজকে তুলে নেন কলম্বিয়ার কোচ হোসে পেকারম্যান। মাঝমাঠের প্রাণভোমরাকে হারানোয় ধার কমে এসেছিল কলম্বিয়ান আক্রমণভাগের। তবে ইয়েরে মিনা কাঙ্ক্ষিত গোলটা এনে দেওয়ায় কলম্বিয়ার বাদ পড়ার শঙ্কা কাটিয়ে রীতিমতো গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোয় উঠেছে।