>ভোলগাগ্রাদে জাপানকে ১-০ গোলে হারিয়েছে পোল্যান্ড। ৫৯ মিনিটে পোলিশদের জয়সূচক গোলটি করেন ইয়ান বেদনারেক। ম্যাচ হারলেও দ্বিতীয় রাউন্ডে চলে গেছে জাপান
৯০ মিনিটের পর যোগ করা হলো ৩ মিনিট। যোগ করা সময়ে মনেই হলো না ম্যাচ চলছে! জাপানের খেলোয়াড়েরা নিজেদের মধ্যে ধীরলয়ে বল দেওয়া-নেওয়া করছেন, যেন মাত্রই তাঁরা ওয়ার্মআপে নেমেছেন। পোল্যান্ডের খেলোয়াড়দের মধ্যেও প্রতিপক্ষের কাছ থেকে বল কেড়ে নেওয়ার কোনো তাগিদ দেখা গেল না। এক পোলিশ খেলোয়াড় তো বল কাড়ার বদলে বসে মোজা ঠিক করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন! সময় নষ্টের শাস্তি হিসেবে রেফারি কোনো জাপানি খেলোয়াড়কে হলুদ কার্ডও দেখালেন না!
ভোলগাগ্রাদে তাহলে হলোটা কী? অপেক্ষা, সময় শেষ হওয়ার অপেক্ষায় খেলোয়াড়, রেফারি, টিম ম্যানেজমেন্ট—সবাই। পোল্যান্ড ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে। জাপানের আর ইচ্ছে হলো না গোলটা শোধের। ততক্ষণে তারা খবর পেয়ে গেছে, সামারায় সেনেগাল ১-০ ব্যবধানে হারতে বসেছে কলম্বিয়ার কাছে। যোগ করা সময়ে ওই ম্যাচের স্কোরলাইনে নাটকীয় পরিবর্তন না হলে জাপান দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রাখবে। পোলিশরাও খুশি, দ্বিতীয় পর্বে না যেতে পারুক, জয় নিয়ে তো শেষ করা যাচ্ছে বিশ্বকাপ।
শেষ পর্যন্ত সেটিই হলো, জাপানই গেল দ্বিতীয় রাউন্ডে। নীল সামুরাইরা শেষ ষোলোয় পা রাখল একটু অদ্ভুত উপায়ে। পয়েন্ট, গোল ব্যবধান—সবই সমান থাকার পরও হলুদ কার্ড পার্থক্য গড়ে দিল দুই দলের। জাপান হলুদ কার্ড পেয়েছে ৪টি, সেনেগাল ৬টি। ফিফা ফেয়ার প্লে পয়েন্টে জাপান ভালো অবস্থানে থাকায় কপাল পুড়ল সেনেগালের।
পয়েন্টের এই জট–জটিলতা ছেড়ে যদি আজ ম্যাচটার দিকে তাকানো যায়, জাপান খুবই কম নাম্বার পাবে। প্রথমার্ধে দু–একটি আক্রমণ বাদ দিলে পোল্যান্ডের বক্সেই ঠিকমতো ঢুকতে পারেনি তারা। জাপানের ছন্নছাড়া ফুটবল দেখে অবাকই হতে হয়, এ দলটাই কিনা নিজেদের আগের দুই ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেছে! বরং পোল্যান্ড যেভাবে জেতার জন্য মরিয়া ছিল, স্কোরলাইনটা ২-০ হয়ে গেলে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যেত জাপানের। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জাপানের রক্ষণ কাঁপিয়েছে পোলিশরা। ৫৯ মিনিটে রাফাউ কুরজাওয়ার ফ্রি-কিক গোলপোস্টের সামনে ওত পেতে থাকা বেদনারেক দুর্দান্ত এক ভলিতে গোলে পরিণত করেন। ৭৪ মিনিটে পোল্যান্ড ২-০ করে ফেলত, যদি দলের তারকা ফুটবলার রবার্ট লেভানডফস্কি ঠিকভাবে লক্ষ্য ভেদ করতে পারতেন।
ভোলগাগ্রাদের গ্যালারিতে জাপানি দর্শকেরা তখন চরম উৎকণ্ঠায়। তারা মোবাইলে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন অন্য ম্যাচের খবর নিতে। জাপানিরা স্বস্তির নিশ্বাস নিতে পারল, যখন জানা গেল কলম্বিয়া হারিয়ে দিয়েছে সেনেগালকে! শেষের বাঁশি বাজতেই সুন্দর এক দৃশ্যের অবতারণা, ম্যাচ হেরেও জাপান খুশি! আর বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেওয়া পোল্যান্ড খুশি শেষটা ভালো হওয়ায়।