ইংরেজিতে তাঁর নামের বানানটা ‘Erling Braut Haaland’। যেহেতু তিনি নরওয়ের খেলোয়াড়, নামের উচ্চারণটা নরওয়েজিয়ান ভাষাতেই হওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে উচ্চারণটা কী হবে?
বিভিন্ন দেশের ধারাভাষ্যকারের মুখে তাঁর নামের বিভিন্ন উচ্চারণ শোনা যায়। বিশেষ করে নামের পরের অংশটা। কেউ বলেন ‘হারলান্ড’, কেউ ‘হরলান্ড’, কারও মুখে শোনা যায় ‘হলান্ড’। উয়েফার ওয়েবসাইটে বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের নামের উচ্চারণ কেমন হবে, সেটা দেওয়া হয় কিছুদিন পরপর। সেটা অনুসরণ করেই এত দিন প্রথম আলোতেও তাঁর নাম লেখা হতো ‘আর্লিং ব্রাউট হরলান্ড’। কিন্তু তিনি নিজে কীভাবে উচ্চারণ করেন?
বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে কিছুদিন আগে ছয় কোটি ইউরো ট্রান্সফার ফিতে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেওয়া নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকারের নতুন ক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয়পর্ব ছিল গত পরশু। ইতিহাদে প্রায় ১০ হাজার সিটি সমর্থকের সামনে সেই অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানের সঞ্চালকই প্রশ্নটা করলেন, ‘আপনাকে আমরা কী নামে ডাকব? উচ্চারণটা কী? এটা কি হারলান্ড না হরলান্ড? কারণ, আমরা অনেক রকম উচ্চারণই শুনেছি।’
সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার নিজেই বলেছেন, ‘আমার নামের প্রথম অংশটা আর্লিং ব্রাউট। পরের অংশের উচ্চারণ হলান্ড। খুব সহজ। আমাকে আপনারা আর্লিং হলান্ড নামেই ডাকতে পারেন।’
শুধু নামের উচ্চারণ নয়, আনুষ্ঠানিক পরিচিতি পর্বে হলান্ড জানিয়ে দিয়েছেন নতুন ক্লাবে তাঁর নিজের লক্ষ্যের কথাও, ‘স্ট্রাইকার হিসেবে আমি চাই আনন্দের সঙ্গে খেলতে। যখন আমি আনন্দের সঙ্গে খেলি, অনেক গোল করি। আমি হাসতে পছন্দ করি, ফুটবল খেলতে পছন্দ করি। সুতরাং আমার চাওয়া এখানে আনন্দের সঙ্গে খেলা, অনেক হাসতে পারা।’
হলান্ডের হাসি মানে তো সিটিরও আনন্দের উপলক্ষ, প্রতিপক্ষ ক্লাবের হতাশা। তো প্রতিপক্ষ হিসেবে কোন দলের বিপক্ষে খেলার জন্য মুখিয়ে আছেন হলান্ড? উত্তরটা দিতে গিয়ে অবশ্য কোনো কূটনৈতিক পথ বেছে নেননি তিনি। সোজা বলে দিয়েছেন, ‘বেশি কিছু বলতে চাই না…ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।’বোঝাই যাচ্ছে, নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে প্রবল দ্বৈরথের মনোভাবটা এখনই চলে এসেছে তাঁর মধ্যে।
আমি ২৫ মিনিট বলে স্পর্শই করতে পারলাম না। মনে মনে তখন বলছিলাম, “আরে ভাই গুন্দোয়ান, দয়া করে টিকিটাকা খেলা বন্ধ করো।’ সিটি যেভাবে সুযোগ তৈরি করছিল, সেটা অবিশ্বাস্য ছিল। মনে মনে তখন আমি সেই দলের অংশ হতে চাইলাম।আর্লিং হলান্ড
হলান্ডের বাবা আলফি হলান্ডও একসময় খেলতেন ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে। ডর্টমুন্ড থেকে তাঁর সিটিতে যোগ দেওয়াটা তাই একরকম নিয়তিই বলা যায়। সিটির প্রতি ছোটবেলা থেকেই তাঁর এক রকম ভালোবাসা ছিল, সেটা ২১ বছর বয়সী স্ট্রাইকার বেশ কয়েকবারই বলেছেন। তবে বাবার মতো কখন তাঁরও সিটির হয়ে খেলার সত্যিকার ইচ্ছেটা হলো, সেটা জানাতে গিয়ে একটা গল্প বলেছেন হলান্ড, ‘আমি ওদের বিপক্ষে একটা ম্যাচ খেলছিলাম। এর আগে ওদের খেলা টিভিতে দেখেছি। তবে টিভিতে দেখা আর মাঠে প্রতিপক্ষ হয়ে খেলা, দুটো আলাদা ব্যাপার। আমি ২৫ মিনিট বলে স্পর্শই করতে পারলাম না। মনে মনে তখন বলছিলাম, “আরে ভাই গুন্দোয়ান, দয়া করে টিকিটাকা খেলা বন্ধ করো।’ সিটি যেভাবে সুযোগ তৈরি করছিল, সেটা অবিশ্বাস্য ছিল। মনে মনে তখন আমি সেই দলের অংশ হতে চাইলাম। তখনই বুঝলাম, ওদের প্রতি আমার একটা দুর্বলতা তৈরি হয়েছে।’
সিটির সমর্থকেরাও নিশ্চয়ই চাইবেন ক্লাবের প্রতি হলান্ডের এই ভালোবাসা যেন এ রকমই থাকে আরও অনেক দিন।