বয়সের দিক থেকে পার্থক্যটা অনেক। কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আরলিং হরলান্ডের প্রায় দ্বিগুণ বয়সী ইব্রাহিমোভিচ। কিন্তু ফুটবলের যে ভাষায় তাঁরা কথা বলেন, সেটি এক। গোল করাটাই নেশা তাঁদের।
খেলার দিক থেকে এমবাপ্পে নয়, হরলান্ডের সঙ্গে ইব্রাহিমোভিচেরই বেশি মিল খুঁজে পান সবাই। দুজনই দীর্ঘদেহী, ডিফেন্ডারদের সঙ্গে শরীরী লড়াইয়ে এগিয়ে থাকেন, সবাইকে চমকে দেওয়া গতি আর সেই সঙ্গে গোল খুঁজে নেওয়ার স্বভাবজাত ক্ষমতা।
তাই ইব্রাহিমোভিচকে যদি এমবাপ্পে ও হরলান্ডের মধ্যে কাউকে বেছে নিতে বলা হয়, তাহলে হরলান্ডকেই হয়তো বেছে নেওয়ার কথা তাঁর। কিন্তু চমকে যদি না দেন, তাহলে আর তিনি ইব্রা কেন! নিজের পছন্দের তরুণ তারকার কথা বলতে গিয়ে এমবাপ্পেকেই বেছে নিয়েছেন।
৪০ বছর বয়সেও সিরি ‘আ’ মাতাচ্ছেন ইব্রাহিমোভিচ। এসি মিলানের মূল ভরসা তিনি। তেমনি বরুসিয়া ডর্টমুন্ডও হরলান্ডের গোলের ওপর ভরসা করে চলছে। এমবাপ্পের ক্ষেত্রে সেটা হওয়ার কথা ছিল না। যে দলে এমবাপ্পে-মেসি খেলেন, সে দলের ভরসা অন্য কারও তো হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সেটিই হচ্ছে। গত মৌসুমে ক্লাবের সর্বোচ্চ স্কোরার এই মৌসুমেও দলকে টানছেন। গোল করছেন, গোল করাচ্ছেনও।
সিবিএসের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে নিজের পছন্দের কথা বলতে গিয়ে চমকেই দিয়েছেন ইব্রাহিমোভিচ, ‘তরুণদের মধ্যে কাকে ভালো লাগে আমার? যাঁদের খেলা দেখতে সুন্দর, যতটা সম্ভব পরিপূর্ণ ফুটবল খেলে, তাঁদের পছন্দ করি। আপনি একজন ফুটবলার হলে আপনাকে জানতে হবে কখন নড়তে হবে, কীভাবে চিন্তা করতে হবে এবং অন্য খেলোয়াড়েরা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে। এসব যাঁরা আগেই ভেবে নিতে পারেন, তেমন খেলোয়াড় পছন্দ করি। এমবাপ্পে আমাকে ফেনোমেনন রোনালদোর কথা কিছুটা মনে করিয়ে দেয়, ওর খেলা বেশ চমৎকার।’
২০২০ সালে সালজবুর্গ থেকে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে গিয়েছেন হরলান্ড। নরওয়েজীয় ‘গোলমেশিন’ এরপর ৭৪ ম্যাচে ৭৬ গোল করেছেন দলটির হয়ে। ডর্টমুন্ডে তিনি কত গুরুত্বপূর্ণ, সেটা বোঝা গেছে গত মাসে। যখন চোটাক্রান্ত হরলান্ডকে না পেয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকেই ছিটকে গেছে ডর্টমুন্ড। শুধু গোল করেন এমন নয়, সতীর্থদের দিয়ে ২০টি গোলও করিয়েছেন। ম্যাচপ্রতি গোল করায় তাঁর চেয়ে একটু পিছিয়েই আছেন এমবাপ্পে।
পিএসজিতে যাওয়ার পর ১৯৪ ম্যাচে ১৪৫ গোল এমবাপ্পের। তবে সতীর্থদের গোল করানোয় এমবাপ্পেই এগিয়ে। সতীর্থদের দিয়ে ৭৫টি গোল করিয়েছেন এই ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড। পরিপূর্ণ ফুটবলার বলতে হয়তো এমন একজনকেই বোঝাতে চেয়েছেন ইব্রাহিমোভিচ।
তাই বলে হরলান্ডকে যে খুব একটা পিছিয়ে রাখছেন এমন নয়, ‘হরলান্ড খুবই শক্তিশালী, কারণ তাঁর ভাবনাজুড়ে সব সময় শুধু গোল থাকে। আমার ধারণা সে খুবই বুদ্ধিমান, সে গোল করতে চায় এবং জানে কীভাবে গোল করতে হয়।’