তাঁর বয়স এখন ৭৫ বছর। নিজের বাড়িতে নয়, অনেক দিন থেকেই তাঁর বাস মিউনিখের একটি নার্সিং হোমে। ভুগছেন স্মৃতিভ্রষ্টতায়। মাঝে বেশ কিছুদিন ছিলেন কোমায়। এখনো যে অবস্থা খুব একটা ভালো, তা নয়। এই যে রবার্ট লেভানডফস্কি তাঁর রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেছেন, জাগতিক এই সব বিষয় নিয়ে ভাবার মতো অবস্থায় নেই কিংবদন্তি গার্ড মুলার।
জার্মান বুন্দেসলিগায় এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের মুলারের রেকর্ডটি ৪৯ বছরের পুরোনো। এবারের লিগে ২৮ ম্যাচ খেলে ৪০ গোল করে কাল সেই রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেছেন লেভা। মুলারের সঙ্গে এটি নিয়ে কথা বলার উপায় নেই। জার্মানির পত্রিকা বিল্ড বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন মুলারের স্ত্রী উশি মুলারের সঙ্গে।
তাঁর এই রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারবে বলে কি বিশ্বাস করতেন মুলার? এই প্রশ্নের উত্তরে উশি বলেছেন, ‘সুস্থ থাকলে সবার আগে ও–ই মুলারকে অভিনন্দন জানাত। হয়তো বলত, ছেলে তুমি দারুণ করেছ। তুমি খুব ভালো করেছ।’ লেভা রেকর্ডটি ছোঁয়ার আগে একবার উশি বলেছিলেন, বায়ার্নের পোলিশ স্ট্রাইকার মুলারকে ছুঁয়ে থামলেই তিনি খুশি হবেন। কিন্তু লিগে বায়ার্নের আরও একটি ম্যাচ বাকি আছে। সেই ম্যাচে লেভা খেললে হয়তো রেকর্ডটি এককভাবে তাঁরই হয়ে যাবে।
এই মুহূর্তে অবশ্য মুলারের রেকর্ড ছুঁতে পেরেই খুশি লেভা, ‘জার্ড মুলার যা করেছেন, তা অসাধারণ। তাঁর সঙ্গে রেকর্ডটি ভাগাভাগি করতে পেরে আমি খুব খুব গর্বিত।’ মুলারের গোল করার অসামান্য সামর্থ্যের জন্য তিনি পেয়ে গিয়েছিলেন ‘ডার বোম্বার’ ডাকনাম। পশ্চিম জার্মানির হয়ে ৬২ ম্যাচে ৬৮ গোল করেছেন। বায়ার্নের হয়ে বুন্দেসলিগায় তাঁর গোল ৩৬৫টি। লেভা কাল পর্যন্ত বুন্দেসলিগায় করেছেন ২৭৬ গোল।
জার্মানিকে ১৯৭৪ বিশ্বকাপ জেতাতে ফাইনালেও গোল করেছেন কিংবদন্তি মুলার। দুই বছর আগে ইউরোর ফাইনালেও। তাঁর জোড়া গোলেই সেবার সোভিয়েত ইউনিয়নকে হারিয়ে ৩–০ গোলে হারিয়ে জার্মানি জিতেছিল ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ।
মুলারের এসব কীর্তি নিয়ে বায়ার্নের জার্মান ফরোয়ার্ড টমাস মুলার বলেছেন, ‘জার্ড মুলার আর তাঁর গোল ছাড়া বর্তমান অবস্থায় বায়ার্ন মিউনিখ আসতেই পারত না। বায়ার্নের এখন যে ভালো অবস্থা, এটা তাঁর গোলের জন্যই।’