>কোস্টারিকার সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করেছে সুইজারল্যান্ড। সুইসদের হয়ে গোল করেন ব্লেরিম জেমাইলি ও ইয়োসিফ দ্রমিচ। কোস্টারিকার পক্ষে গোল করেন কেন্ডাল ওয়াস্টন।
সুইজারল্যান্ড ড্র করলেই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত। আর কোস্টারিকার জয়টা হতে পারত একটা সান্ত্বনা। তবে ম্যাড়ম্যাড়ে এই খেলায় ড্র-ই জুটেছে কোস্টারিকার কপালে। আর এই ড্র দিয়েই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করেছে সুইজারল্যান্ড। দ্বিতীয় রাউন্ডে সুইসদের প্রতিপক্ষ ইউরোপের আরেক দেশ সুইডেন। পুরো ম্যাচে বলার মতো কোনো চমক না থাকলেও জয়-পরাজয়ের দোলাচলে দুলেছে দুই দলই। প্রথমার্ধে জেমাইলির গোলে এগিয়ে যায় সুইজারল্যান্ড। দ্বিতীয়ার্ধে এসে সুইসদের সমতায় ফেরান ওয়াস্টন। এরপর ম্যাচের ভাগ্য ড্রয়ের দিকেই এগোচ্ছিল। ৮৮ মিনিটে এসে ইয়োসিফ দ্রমিচের গোলে এগিয়ে যায় সুইজারল্যান্ড। তখন আফসোস হচ্ছিল; ‘জয় না হোক ড্রটাও পেল না কোস্টারিকা!’ ৯০ মিনিট শেষ। যোগ হওয়া সময়ে এসে অধিনায়ক ব্রায়ান রুইজের পেনাল্টি মিস। নাটকীয় এক মুহূর্ত। পেনাল্টি শট ক্রসবারে লেগে সুইজারল্যান্ডের গোলরক্ষক ইয়ান সমারের পিঠে লেগে জালে জড়ালে সমতায় ফেরে কোস্টারিকা। এটাকে কী বলবেন? পেনাল্টি মিসকে দুর্ভাগ্য বললে আত্মঘাতী গোলকে কোস্টারিকার জন্য সৌভাগ্যই তো বলতে হবে। অন্তত ড্র নিয়ে বিশ্বকাপ শেষ করতে পেরেছে তারা।
মাঝমাঠে দখল নিয়ে খেলা শুরু করে কোস্টারিকা। অন্যদিকে সুইজারল্যান্ডের মনোযোগ ছিল আক্রমণে। প্রতি–আক্রমণে উঠে এসে সুইসদের দুর্গে বারবার ভয় ধরিয়ে দেয় কোস্টারিকা। সুইজারল্যান্ডের আক্রমণও ছিল গোছালো। তবে ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শাকিরিদের শটগুলো লক্ষ্যভ্রষ্টই হয় বেশির ভাগ। ৩ মিনিটের মাথায় শাকিরির নিচু ক্রসে পা লাগালে গোল পেত সুইজারল্যান্ড। কিন্তু ফরোয়ার্ড মারিও গাভরানোভিচ সেই কাজটাই করতে পারলেন না। মিনিট দুয়েক পর প্রতি–আক্রমণে উঠে আসে কোস্টারিকানরা। দ্রুতগতিতে সুইজারল্যান্ডের ডি–বক্সে ঢুকে পড়েন কোস্টারিকান ফরোয়ার্ড জোয়েল ক্যাম্পবেল। সতীর্থ ব্রায়ান রুইজকে বল বাড়িয়ে দেন। তবে কোস্টারিকার সমন্বিত এই আক্রমণে বাধা হয়ে দাঁড়ান সুইস ডিফেন্ডার রিকার্ডো রদ্রিগেজ। এই এসি মিলান তারকার বাধাতেই গোলবঞ্চিত হয় কোস্টারিকা। তখন অবশ্য পেনাল্টির জোর দাবি জানিয়েছিলেন কোস্টারিকার খেলোয়াড়েরা। সাত মিনিটে এসে আবারও আক্রমণে কোস্টারিকা। এবার বাধা হয়ে দাঁড়ান সুইস গোলরক্ষক ইয়ান সমারের। এত এত আক্রমণের পরেও প্রথম গোলটি করে সুইজারল্যান্ডই। ৩১তম মিনিটে ব্লেরিম জেমাইলির অসাধারণ গোলে এগিয়ে যায় সুইজারল্যান্ড। আক্রমণে উঠে আসা সুইস ডিফেন্ডার স্টিফেন লিখটস্টেইনারের দুর্দান্ত ক্রস থেকে হেড করেন ফরোয়ার্ড ব্রিল এমবোলো। এমবোলো চাইলে নিজেই গোলমুখ বরাবর হেড করতে পারতেন। তবে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা জেমাইলির কাছে বল দেওয়াটাই নিরাপদ মনে হয়েছে তাঁর কাছে। জেমাইলিও ভুল করেননি। বুলেটগতির ভলি থেকে বল জালে জড়ান জেমাইলি। প্রথমার্ধ ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই মাঠ ছাড়ে সুইজারল্যান্ড।
দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কিছুক্ষণ আক্রমণ পাল্টা–আক্রমণে খেলা চলে। প্রতি–আক্রমণে উঠে আসা কোস্টারিকাকে তখন ভয়ই পাচ্ছিল সুইজারল্যান্ড। গোলমুখে তাদের একের পর এক শট সুইসদের বুকে কাঁপন তোলে। কোস্টারিকার প্রতি–আক্রমণ শেষ পর্যন্ত কাজে আসে। ৫৬তম মিনিটে কেন্ডাল ওয়াস্টনের গোলে সমতায় ফেরে অস্কার রামিরেজের শিষ্যরা। ক্যাম্পবেলের কর্নার থেকে হেডে গোল করেন ওয়াস্টন। এরপর গোল ব্যবধান বাড়িয়ে জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে সুইজারল্যান্ড। ৭৭তম মিনিটে এমবোলো শিশুসুলভ ওই মিস না করলে তখনই গোল পেত সুইজারল্যান্ড। তবে ম্যাচ শেষের মিনিট দু-এক আগে (৮৮তম মিনিটে) ইয়োসিফ দ্রমিচের গোলে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় সুইজারল্যান্ড।
কিন্তু রাশিয়া একেবারে খালি হাতে ফেরাতে চায়নি কোস্টারিকাকে। যোগ হওয়া সময়ে পেনাল্টি পায় কোস্টারিকা। সেটা মিস হতে হতেও হয়নি। ব্রায়ান রুইজের পেনাল্টি শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসার মুহূর্তে সুইস গোলরক্ষক ইয়ান সমারের পিঠে লেগে গোললাইন অতিক্রম করে। ২-২ গোলের সমতায় শেষ হয় খেলা।