আজ বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১০টায় ম্যানচেস্টার ডার্বি
‘ফার্গি টাইম’, স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়া এক শব্দ। ফার্গুসনের ব্যক্তিত্বের কারণে ম্যাচের যোগ করা সময়ে হয় বাড়তি সময় পেত ইউনাইটেড; অথবা দল কোনো না–কোনো ভাবে ম্যাচের ফল দলের জন্য ইতিবাচক করে ফেলতেন খেলোয়াড়েরা। অনেক দিন পর দুধের স্বাদে ঘোল মেটানোর মতো করে তেমন একটা স্বাদ পেয়েছে রেড ডেভিলসরা। জুভেন্টাসকে তাদের মাঠে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে তারা। সেটাও ম্যাচের শেষ ৫ মিনিটে দুই গোল করে।
ইউরোপিয়ান ফুটবলে পিছিয়ে পড়ার পর ইউনাইটেডের এভাবে শেষ মুহূর্তে জেতার স্মৃতিতে ধুলো জমেছে। ১৯৯৯ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালেই শেষ এমন কিছু হয়েছিল। সেই হারানো স্মৃতি ফেরার পর ইউনাইটেড সমর্থকেরা আরেকটি স্বাদ ফিরে পেতে চাইছেন। প্রতিপক্ষকে গোল বন্যায় ভাসানোর স্বাদ। ফার্গুসনের যুগে দলগুলিকে ছিঁড়েখুঁড়ে ফেলার যে আনন্দ পেত রেড ডেভিলরা সেটা যে আর পাচ্ছে না তারা।
একসময় ইপসউইচকে ৯-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়া কিংবা নটিংহাম ফরেস্টকে তাদেরই মাঠে ৮ গোল দেওয়ার কীর্তি গড়েছে ইউনাইটেড। আর্সেনালকেও ৮-২ গোলে হারানোর ঘটনাটি মাত্র ৭ বছরের পুরোনো। বর্তমানে সে দলই প্রিমিয়ার লিগে সাড়ে পাঁচ বছর ধরে প্রতিপক্ষকে কখনো ৫ গোল দিতে পারেনি, ভাবা যায়! আরও পরিষ্কারভাবে বললে, ফার্গুসন চলে যাওয়ার পর থেকেই ইউনাইটেডের গোলবন্যার দিন শেষ হয়ে গেছে। এ সময়েই ম্যানচেস্টার সিটি ২১ বার প্রতিপক্ষকে ম্যাচে ৫ বা এর বেশি গোল দিয়েছে। লিভারপুল এমন কাণ্ড করেছে ১২ বার। টটেনহাম কিংবা আর্সেনালও কম যায়নি। দুই লন্ডন প্রতিবেশী কাজটা করেছে ৯ ও ৮ বার। সার্জিও আগুয়েরো নিজেই তো একা এ কাজটা করেছেন। ২০১৫ সালে নিউক্যাসলের বিপক্ষে ২০ মিনিটের মধ্যে ৫ গোল দিয়েছিলেন সিটি ফরোয়ার্ড।
অথচ প্রিমিয়ার লিগের শুরু থেকেই প্রতিপক্ষকে গোলে ভাসানোর দায়িত্বটা নিজেদের কাঁধে যেচে নিয়েছিল ইউনাইটেড। গত শতকের শেষ দশকে লিগে ১৬ বার ম্যাচে অন্তত ৫ গোল দিয়েছে ইউনাইটেড। একমাত্র লিভারপুল এ কাজে তাদের ধারেকাছে ছিল (১২বার)। এ শতাব্দীতেও নিজেদের প্রাধান্য ধরে রেখেছে ইউনাইটেড। ফার্গুসনের অধীনে (২০০০ থেকে ২০১৩ সাল) ২৮ বার এ কাজ করেছে তারা। আর্সেনালও অবশ্য এ কাজে সিদ্ধহস্ত হয়ে উঠেছিল এ সময়ে। আর্সেন ওয়েঙ্গারের দলও এ সময় প্রতিপক্ষকে অন্তত ৫ গোল দিয়েছে ২৮ বার। রোমান আব্রামোভিচের ছোঁয়ায় পরাশক্তিতে রূপ নেওয়া চেলসি এ কাজ করেছে ২৩ বার। এরপরই ছিল লিভারপুল (১৫) ও সিটি (১৪)।
সেই ইউনাইটেড এখন আর প্রতিপক্ষকে গোল বন্যায় ভাসায় না। সর্বশেষ ইউনাইটেড এক ম্যাচে ৫ গোল করেছিল ২০১৩ সালে। ফার্গুসনের অধীনে দলের শেষ ম্যাচে! ওয়েস্টব্রমের বিপক্ষে ৫-৫ স্কোরলাইনের সে অবিশ্বাস্য ম্যাচের স্মৃতি ইউনাইটেডের জন্য সান্ত্বনা হয়ে আছে। সাড়ে পাঁচ বছর পুরোনো সে ম্যাচের রেকর্ড যে আজও হচ্ছে না, এটা প্রায় নিশ্চিত। একে তো সিটির মাঠে পেপ গার্দিওলার বিপক্ষে নামবে ইউনাইটেড। তার ওপর দলটির দায়িত্বে আছেন মরিনহো। যার অধীনে লিগে এ মৌসুমে ১১ ম্যাচে মাত্র ১৯ গোল করেছে ইউনাইটেড। উল্টো সিটির পাঁচ গোলের রেকর্ড আরও এক ম্যাচ বাড়ে কি না সে আলোচনা চলছে!