ইংল্যান্ডের সাইডবেঞ্চ দুর্দান্ত
ইংল্যান্ডের সাইডবেঞ্চ দুর্দান্ত

‘সাইড বেঞ্চে’ রাখলেও সাউথগেটের চিন্তায় ভালোভাবেই আছেন সাঞ্চো-গ্রিলিশরা

ইংল্যান্ডের কোনো বড় টুর্নামেন্ট জেতা মানেই নাকি ‘ফুটবলের ঘরে ফেরা’। ইংলিশরা যেহেতু খেলাটির ‘জনক’ হিসেবে নিজেদের দাবি করে, তাই কথাটি তাদের আবেগ থেকে উৎসারিত, এটা বলাই যায়। যদি তা-ই হয়, তাহলে ফুটবলের ‘ঘরে ফেরা’র পথের দৈর্ঘ্য আরও সংক্ষিপ্ত হয়ে এসেছে। ইউরোতে গ্যারেথ সাউথগেটের ছেলেরা শেষ চারে পৌঁছে গেছে। আর এ সাফল্যে কোচ ‘দলীয় সংহতি’কেই বড় করে দেখছেন।

সাইডবেঞ্চের তারকারাও সাউথগেটের চিন্তায় আছেন।

ইংল্যান্ড কাল ইউরোর সেমিতে উঠছে ইউক্রেনকে ৪-০ গোলে হারিয়ে। হ্যারি কেইন দুই গোল করেছেন, বাকি দুটি গোল হ্যারি ম্যাগুয়ার আর জর্ডান হেন্ডারসনের। এমন এক জয়ের পর কোচ তো খুশি হবেনই। তবে সাউথগেট নিজেকে বেশ খানিকটা সংযত রাখছেন। তিন বছর আগেও ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে উঠেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ৩-১ গোলে হেরে স্বপ্নযাত্রার সমাপ্তি ঘটেছিল তাদের। এবার ইউরোতেও ঠিক একই জায়গায় দাঁড়িয়ে সাউথগেট। তাঁর কায়মন প্রার্থনা থাকবে ২০১৮ সালের পুনরাবৃত্তি যেন ইউরোতে না হয়। এবার সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ গোটা টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফুটবল খেলে সকলের মন জয় করা ডেনমার্ক।

দলীয় সংহতির প্রশংসা সাউথগেটের মুখে।

আপাতত ইংল্যান্ড কোচ তাঁর দলের প্রশংসাটাই করছেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ইউরোতে দুর্দান্ত খেলেছি। কেবল প্রথম একাদশের খেলোয়াড়েরাই নয়, সাইড বেঞ্চের খেলোয়াড়েরাও সুযোগ মতো পারফর্ম করছে। তারা একইভাবে দলের এগিয়ে চলার গতিটা ধরে রাখছে।’

ইংলিশ বেঞ্চের সুনাম দুর্দান্ত। এ নিয়ে সাউথগেটের সমালোচনাও আছে। সমালোচকেরা মনে করেন, দারুণ সব খেলোয়াড়কে বেঞ্চে বসিয়ে রেখে কোচ ঠিক করছেন না। জেসন মাউন্ট, ফিল ফডেন, জ্যাক গ্রিলিশ, মার্কাস রাশফোর্ড, জাডন সাঞ্চো—প্রতিশ্রুতিশীল সব তরুণ ইংল্যান্ডের বেঞ্চে বসে সময় কাটাচ্ছেন।

ব্যাপারটি নিয়ে সাউথগেট আছেন মধুর সমস্যায়, ‘আমি আসলে চিন্তা করছি আমার বেঞ্চে যেসব খেলোয়াড় আছে তাদের নিয়ে। তারা সবাই আমাদের দলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আমরা যে সাফল্য তুলে আনছি, সবকিছুরই অংশ তারা। সবাইকে খুশি রাখাটা খুবই কঠিন একটা কাজ। কিন্তু দারুণ ব্যাপারটা হচ্ছে, যারা যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও দলের স্বার্থে খেলার সুযোগ পাচ্ছে না, তাদের ত্যাগ।’

দল ইউরোর সেমিফাইনালে উঠেছে, সে জন্য সাউথগেট কৃতিত্ব দিচ্ছেন সবাইকে। কৃতিত্ব দিচ্ছেন দলীয় সংহতিকে, ‘দলীয় সংহতির কারণেই আমরা এ পর্যায়ে এসেছি। অবশ্যই দলের খেলোয়াড়দের মান একটা বড় ব্যাপার, গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আমি একটা ব্যাপার দেখছি, এবারের ইউরোয় বড় বড় দল বিদায় নিয়েছে কেবল দলীয় সংহতির অভাবে। তাদের দলে ভালো ভালো খেলোয়াড় ছিল, কিন্তু দলে ঐক্য ছিল না।’

দাপ দেখিয়েই ইউরোর সেমিতে ইংল্যান্ড

সেমিতে ডেনমার্ক ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ। সে ম্যাচ নিয়ে সাউথগেট ভাবা শুরু করে দিয়েছেন ইউক্রেনের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল শেষ করেই, ‘আমরা জানি, ডেনমার্ক কতটা ভালো দল। তারা যে দুর্দান্ত একটা দল, সেটি তারা এ টুর্নামেন্টে প্রমাণ করেছে। ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের ঘটনাটি তাদের আবেগের চূড়ায় তুলে দিয়েছে। ম্যাচটা দারুণ হবে, ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের অবশ্য এমন ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ডেনমার্কের চেয়ে বেশি। সুতরাং, বুধবার রাতে সেই অভিজ্ঞতাটাই আমরা কাজে লাগাতে চাইব।’