ভেনেজুয়েলাকে সমতায় ফেরানো গোলের পর রোনালাদ হার্নান্দেজ (ডানে)।
ভেনেজুয়েলাকে সমতায় ফেরানো গোলের পর রোনালাদ হার্নান্দেজ (ডানে)।

কোপা আমেরিকা

শেষের রোমাঞ্চে ভেনেজুয়েলা-ইকুয়েডর ম্যাচ ড্র

রাতের ঘুম বিসর্জন দিয়ে ভেনেজুয়েলা-ইকুয়েডর ম্যাচটি দেখতে যারা টেলিভিশনের সামনে বসেছেন, প্রথম দিকে কিছুটা হলেও বিরক্ত হওয়ার কথা। বেশির ভাগ সময়ই যে টেবিল টেনিসের দর্শকদের মতো চোখ এ পাশ-ওপাশ করতে হয়েছে। ইকুয়েডর নিজেদের সীমান্ত থেকে একবার বল ভেনেজুয়েলার সীমান্তে পাঠায় তো ভেনেজুয়েলা সেই বল ওপর প্রান্তে দেয়! এলোমেলো ফুটবলের এই ম্যাচে অবশ্য ব্যক্তিগত কিছু নৈপুন্যের ঝলকও দেখা গেছে। শেষ দিকে এসে অবশ্য কিছু রোমাঞ্চও ছড়িয়েছে ম্যাচটি। সেই রোমাঞ্চের শেষ হয়েছে ২-২ গোলের ড্রয়ে।

প্রথম ৫ মিনিটে বেশ কয়েকটি আক্রমণ করে ইকুয়েডর অবশ্য ভালো খেলার ইঙ্গিত দিয়েছিল। কিন্তু সে ধারাটা তারা খুব বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি। ম্যাচে প্রায় ৭০ শতাংশ বলের দখল রেখেও বারবারই প্রতিপক্ষের রক্ষণে গিয়ে খেই হারিয়েছেন ভালেন্সিয়া-কাম্পানারা। ভালেন্সিয়া গোলকিপারকে একা পেয়েও বল মেরেছেন বাইরে। কাম্পানা সহজ সুযোগ পেয়ে বল মেরেছেন প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারকে লক্ষ্য করে!

যোগ করা সময়ের ১ মিনিটে সমতায় ফেরার পর ভেনেজুয়েলার খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস।

শেষ পর্যন্ত অবশ্য ইকুয়েডর গোলের দেখা পায় ৩৯ মিনিটে। সেই গোলটিও আসে অনেকটা এলোমেলোভাবেই! বাঁ প্রান্ত থেকে স্তুপিনানের ফ্রি-কিকে হেড করেন কাম্পানা। সেই হেড গিয়ে পড়ে কাইসেডোর মাথায়। সেখান থেকে জটলার মধ্যে বল পেয়ে যান আরবোলেদো। তাঁর শট ভেনেজুয়েলার এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে আসে প্রেসিয়াডোর কাছে। খূব কাছ থেকে বল জালে জড়ান তিনি। ভেনেজুয়েলার খেলোয়াড়েরা অফসাইডের আবেদন করলে রেফারি ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোলের সিদ্ধান্তই বহাল রাখেন।

দ্বিতীয়ার্ধেও ভেনেজুয়েলার রক্ষণে চাপ তৈরি করে খেলতে থাকে ইকুয়েডর। কিন্তু খেলার ধারার বিপরীতে ভেনেজুয়েলা গোল শোধ করে ৫১ মিনিটে। মার্তিনেজের ক্রস থেকে দুর্দান্ত গোলটি করেন এডসন কাস্তিল্লো। এরপর লম্বা সময় ধরে আবার সেই এলোমেলো ফুটবল। এর মধ্যেই ৭১ মিনিটে দুর্দান্ত এক প্রতি আক্রমণ থেকে ইকুয়েডরকে এগিয়ে দেওয়া গোলটি করেন গঞ্জালো প্লাতা।

ইকুয়েডরের দ্বিতীয় গোলটি করার পর প্লাতার উচ্ছ্বাস।

৬৮ মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন প্লাতা। প্রথম বল পেয়েছেন ৭০ মিনিট পেরিয়ে। নিজেদের বক্সের ডিক ওপরে বল পেয়ে ভৌঁ দৌড় লাগান প্লাতা। গতিতে ভেনেজুয়েলার দু-তিনজন খেলোয়াড়কে পেছনে ফেলে তিনি পৌঁছে যান প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে। কিন্তু বল মারেন সোজা গোলকিপারের গায়ে। কিন্তু ফিরে আসা বল আরেকজন খেলোয়াড়ের পা হয়ে তাঁর পায়েই পরে। এবার ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে জড়ান তিনি।

ইকুয়েডরের যখন জয়োচ্ছ্বাসের আয়োজন সাজাচ্ছিল, সমতাসূচক গোল করে বসে ভেনেজুয়েলা। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে কাস্তিল্লোর ক্রস থেকে দুর্দান্ত এক হেডে গোলটি করেছেন ৭৭ মিনিটে বদলি হিসেব নামা রোনালদ হার্নান্দেজ।