কমিউনিটি শিল্ডকে বলা হয় মৌসুমের প্রথম ম্যাচ। এ ম্যাচ দিয়েই ইংলিশ ফুটবলের মৌসুম শুরু হয়। সে হিসেবে ২০২০-২১ মৌসুমের শুরুটা ভালোই হলো আর্সেনালের জন্য। একটা ট্রফি জিতে মৌসুম শুরু করল তারা। প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলকে টাইব্রেকারে হারিয়ে কমিউনিটি শিল্ডের শিরোপা জিতে নিয়েছে তারা।
প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন দল ও এফএ কাপ জয়ী দলের মধ্যে আয়োজিত হয় ম্যাচটা। দুই শিরোপাই যদি এক দল জেতে, তখন লিগের রানার্সআপ দলটা খেলে ম্যাচটি। গত মৌসুমেও ম্যানচেস্টার সিটির কাছে এভাবে পেনাল্টিতে হেরে কমিউনিটি শিল্ডের শিরোপা খুইয়েছিল আর্সেনাল। এবারও তাই হলো। লিভারপুলের কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ আশাবাদী হতে পারেন এই ভেবে যে, মৌসুমের শুরুতে কমিউনিটি শিল্ডের শিরোপা হারলেও মৌসুম শেষে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপাটা লিভারপুলের কাছেই গিয়েছিল ৩০ বছর পর। এবার সেটার পুনরাবৃত্তি হয় কিনা, কে জানে!
এদিকে ২৮ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় শিরোপা জিতল আর্সেনাল। গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে দায়িত্ব নেওয়ার পর কোচ মিকেল আরতেতা যে দলটাকে বেশ ভালোভাবেই গুছিয়ে নিয়েছেন, তাঁর জ্বলন্ত প্রমাণ দেখা গেল কালকেও। এর আগে এফএ কাপের ফাইনালে লন্ডনের আরেক পরাশক্তি চেলসিকে হারিয়েছিল তারা। এ দিনও ম্যাচের শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিল আর্সেনাল।
১২ মিনিটে গ্যাবনিজ স্ট্রাইকার ও দলের অধিনায়ক পিয়েরে এমেরিক অবামেয়াং ডান পায়ের এক দৃষ্টিনন্দন শটে এগিয়ে দেন দলকে। গোলের আগে তরুণ উইঙ্গার বুকায়ো সাকার সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়াটা চোখে পড়েছে দারুণভাবে। দলের নিয়মিত রাইটব্যাক ট্রেন্ট অ্যালেক্সান্ডার-আরনল্ডের জায়গায় এদিন আনকোরা নিকো উইলিয়ামসকে নামিয়েছিলেন ক্লপ, নিকো ঠিকমতো সামলাতে পারেননি অবামেয়াংকে, সে দিক থেকেই গোলটা হয়েছে।
এর পর বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও গোলের সুযোগ হারিয়েছে দুই দল। বাঁ দিক থেকে লেফটব্যাক অ্যান্ডি রবার্টসনের বেশ কিছু মাপা ক্রসে গোল করতে পারেননি মোহাম্মদ সালাহ, ভার্জিল ফন ডাইকরা। ডিবক্সের মধ্যে বল পেয়েও আর্সেনাল গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজের গায়ে মেরেছেন সাদিও মানে। ওদিকে দূরপাল্লার বেশ কিছু শটে লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি এডি এনকেতিয়াহ, বুকায়ো সাকারা।
অবশেষে বদলি হিসেবে মাঠে নামা জাপানি উইঙ্গার তাকুমি মিনামিনো লিভারপুল সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটান, ডি-বক্সে সালাহর সঙ্গে দুর্দান্ত বোঝাপড়ায় গোল করে দলকে সমতায় ফেরান ৭৩ মিনিটে। লিভারপুলের জার্সি গায়ে মিনামিনোর এটাই প্রথম গোল। গত জানুয়ারিতে তিনি লিভারপুলে যোগ দেন।
গত মৌসুমের পেনাল্টি শুটআউটে ডাচ তারকা মিডফিল্ডার জর্জিনিও ভাইনালদামের পেনাল্টি মিসের কারণে শিরোপা হারিয়েছিল লিভারপুল, সে কথা ভেবেই কি না, ম্যাচের একদম শেষ দিকে তাঁর জায়গায় মাঠে নামানো হয় তরুণ ইংলিশ স্ট্রাইকার রিয়ান ব্রুস্টারকে। ব্রুস্টার স্ট্রাইকার, গোলমুখে বেশ নিখুঁত লক্ষ্যভেদ করতে পারেন দেখে কোচ ক্লপ ভেবেছিলেন, পেনাল্টিতে ভাইনালদামের জায়গায় ব্রুস্টার কার্যকরী হবেন।
কিন্তু কীসের কি! পেনাল্টিতে সালাহ, ফাবিনহো, মিনামিনো, জোন্স গোল করলেও ব্রুস্টার মারেন পোস্টে।
ওদিকে আর্সেনালের হয়ে পাঁচ শটেই গোল করেন রিস নেলসন, এইনসলি মেইটল্যান্ড নাইলস, ডেভিড লুইজ, সেড্রিক সোয়ারেস ও পিয়েরে এমেরিক অবামেয়াং। আর তাতেই শিরোপা নিশ্চিত হয় আর্সেনালের।