প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ

লড়াইটা এবার বিদেশি কোচদেরও

প্রিমিয়ার লিগে বিদেশি কোচরাই আছেন বড় দলগুলোর দায়িত্বে। স্থানীয় কোনো কোচের দলই লিগে ফেবারিট নয়।

শফিকুল ইসলাম, সাইফুল বারী
শফিকুল ইসলাম, সাইফুল বারী

প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ মানে ১২ ক্লাবের লড়াই। ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া এবারের লিগে সেই লড়াইয়ের মধ্যে থাকবে আরেকটা লড়াই। লিগ শিরোপা জয়ের লড়াইটা যে এবার সাত বিদেশি কোচেরও! বলতে পারেন শিরোপার লড়াইয়ে থাকার মতো সব দলের কোচই এবার বিদেশি।

অন্যান্যবার লিগ শিরোপার লড়াইয়ে বিদেশি কোচদের সঙ্গে স্থানীয় কোচদেরই প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকে। কিন্তু সব বড় দলের কোচই বিদেশি বলে এবার যেন লড়াইটা বিদেশি বনাম বিদেশি! গত বছর সাধারণ মানের দল শেখ জামাল ধানমন্ডিকে রানার্সআপ করা শফিকুল ইসলাম এবার কোনো ক্লাবের দায়িত্বেই নেই। তাঁর জায়গায় স্প্যানিশ কোচ নিয়েছে শেখ জামাল। গতবার সেরা চারে থাকা অন্য তিন দল বসুন্ধরা কিংস, আবাহনী লিমিটেড ও সাইফ স্পোর্টিং বিদেশি কোচদেরই বহাল রেখেছে।

কাগজ–কলমের শক্তিমত্তায় এবার এগিয়ে স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোনের বসুন্ধরা, পর্তুগিজ মারিও লেমোসের আবাহনী, আর্জেন্টাইন দিয়েগো আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানির সাইফ স্পোর্টিং ও হুয়ান ম্যানুয়েল মার্টিনেজের শেখ জামাল। স্থানীয় কোচের অধীনে থাকা দলগুলোর মধ্যে সাইফুল বারীর শেখ রাসেলের কথা বলা যায়। কিন্তু মৌসুমের প্রথম দুই টুর্নামেন্টে শেখ রাসেল সেমিফাইনালে যেতে না পারায় তাদের নিয়ে আশাবাদী নন ক্লাবটির সমর্থকেরাই।

বিদেশি কোচদের প্রতি আমাদের একটা মোহ আছে। সাধারণ মানের বিদেশি কোচের ওপরও ক্লাবগুলো আস্থা রাখে। খারাপ ফল হলেও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে পারে না চুক্তিসংক্রান্ত কারণে।
শফিকুল ইসলাম, জাতীয় দলের সাবেক কোচ

তবে এবার কোনো দলেরই দায়িত্বে না থাকা শফিকুল ইসলাম কিছুটা হলেও আশা দেখছেন সাইফুল বারীর দলটাকে নিয়ে, ‘টিটু (সাইফুল বারী) ও মিন্টু (জুলফিকার মাহমুদ) যেভাবে কাজ করছে, তাতে শেখ রাসেল সেরা তিনে থাকার মতো দল।’

এর বাইরে লিগ শিরোপার লড়াইটা যে এবার বিদেশি কোচদের মধ্যেই হতে যাচ্ছে, সেটা একপ্রকার নিশ্চিত করেই বলা যায়। মৌসুমের প্রথম দুই টুর্নামেন্টেই লেমোসের আবাহনী শিরোপা জিতে সে আভাসই দিয়েছে। অবশ্য গত চারটি লিগ শিরোপাই জিতেছেন বিদেশি কোচরা। সেটাই স্বাভাবিক। কারণ, বড় দলগুলো বিদেশি কোচদের ওপরই আস্থা রাখে। শফিকুল ইসলাম বলছিলেন, ‘বিদেশি কোচদের প্রতি আমাদের একটা মোহ আছে। সাধারণ মানের বিদেশি কোচের ওপরও ক্লাবগুলো আস্থা রাখে। খারাপ ফল হলেও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে পারে না চুক্তিসংক্রান্ত কারণে। কিন্তু স্থানীয় কোচরা একটু খারাপ করলেই সমস্যা।’

বিদেশিরা ভালো করছে বলেই হয়তো তাদের নেওয়া হচ্ছে। এখানে হয়তো আমরা কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছি। তবে দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনে শুধু কোচ নয়, খেলোয়াড়দের অবদানই বেশি।
সাইফুল বারী, কোচ, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র

সাইফুল বারী অবশ্য বিষয়টাকে একটু অন্যভাবেই দেখছেন, ‘বিদেশিরা ভালো করছে বলেই হয়তো তাদের নেওয়া হচ্ছে। এখানে হয়তো আমরা কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছি। তবে দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনে শুধু কোচ নয়, খেলোয়াড়দের অবদানই বেশি।’

সর্বশেষ দুটি লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরার কোচ অস্কার ব্রুজোন অবশ্য লিগটাকে কোনোভাবেই কোচদের লড়াই বলতে রাজি নন, ‘আসলে লড়াইটা কোচদের মধ্যে হয় না, হয় ক্লাবের মধ্যে। ক্লাবের সামর্থ্যের ওপরই নির্ভর করে কোচের সাফল্য।’

হয়তো এ কারণেই এবার হিসাবের বাইরে চলে গেছেন দেশের অন্যতম সেরা কোচ মারুফুল হক। তাঁর দল চট্টগ্রাম আবাহনী এবার এতটাই খর্ব শক্তির দল গড়েছে যে মারুফুলকে দেখেই চিনতে হচ্ছে ক্লাবটিকে।