সেই একই দৃশ্য। যে দৃশ্যটা একই সঙ্গে আর্জেন্টিনা ও বার্সেলোনা–সমর্থকদের জন্য বড় বেদনার! যে দৃশ্য প্রায় ফিরিয়ে আনেন লিওনেল মেসি। আজও আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ফিরিয়ে এনেছেন। পেনাল্টি স্পটে বলটি বসিয়েছেন, মাথা নিচু করে কিছু একটা ভেবেছেন। গোল করাটা যাঁর কাছে ‘মুড়ি-মুড়কি’, সেই মেসিই কিনা পেনাল্টি স্পটের বাধায় এসে হোঁচট খান! খেলেন আজও। হাতছাড়া করলেন আর্জেন্টিনাকে জেতানোর সুবর্ণ সুযোগ।
২৩ মিনিটে ফিনবোগাসনের গোলে সমতায় ফেরার পর আইসল্যান্ডের ভীষণ রক্ষণাত্মক কৌশলে আর্জেন্টিনার কাছে একটি গোল পাওয়া হয়ে গেল পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ। এই ‘দুর্মূল্যের বাজারে’ ৬৪ মিনিটে কী সুযোগটাই না পেলেন মেসি। কাল স্পেনের বিপক্ষে তীব্র স্নায়ুচাপে ঠান্ডা মাথায় কী দুর্দান্ত ফ্রিকিক নিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। কিন্তু মেসি ঠিক উল্টো, স্নায়ুর সঙ্গে পেরে উঠলেন না। পারলেন না জেঁকে বসা চাপটার সঙ্গে পেরে উঠতে। মেসির বাঁ পায়ের শটটা আগেই বুঝে ফেললেন আইসল্যান্ড গোলরক্ষক হামেস হলডারসন। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ফিরিয়ে দিলেন সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলারের পেনাল্টি!
হতে পারেন সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার। কিন্তু এই একটা জায়গায় মেসি বরাবরই পিছিয়ে। ক্যারিয়ারে এই পর্যন্ত ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে ৭৯টি সফল পেনাল্টি নিয়েছেন ঠিকই, তবে মেসি ব্যর্থও হয়েছেন ২৪ বার! প্রায় ২৪ শতাংশ ব্যর্থতা! সর্বশেষ ৭ পেনাল্টির মিস করেছেন চারটিই! আর যা-ই হোক, পেনাল্টি মেসির সবচেয়ে শক্তির জায়গা নয়, এটা আর্জেন্টাইন অধিনায়কের পাঁড় ভক্তরাও মেনে নেবেন। এত এত মিস চোখে বিঁধে আছে, নিন্দুকেরা এখন তাঁকে লিওনেল ‘মিসি’ নামে ডাকলেও ডাকতে পারে!
সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ, পেনাল্টি মিস, ফ্রিকিকগুলো আছড়ে পড়েছে প্রতিপক্ষের দেয়ালে, নয়তো পোস্টে হাওয়া লেগে বেরিয়ে গেছে। মেসি দ্রুতই ভুলিয়ে দিচ্ছেন, প্রায় একার কাঁধে চাপিয়ে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে তুলেছেন। প্রথম ম্যাচে এমন শুরু, পেনাল্টি মিসের পুরোনো রোগ...মেসি পারবেন এই চাপ থেকে বেরিয়ে আসতে?