বার্সার নতুন সভাপতি হোয়ান লাপোর্তাকে বিশ্বাস করেন রিয়াল সভাপতি।
বার্সার নতুন সভাপতি হোয়ান লাপোর্তাকে বিশ্বাস করেন রিয়াল সভাপতি।

লাপোর্তা পিঠে ছুরি মারবেন, বিশ্বাস করেন না পেরেজ

কী এক সুপার লিগ এল! এর এক ধাক্কাতেই বাঘ আর মহিষ মিলে পাশাপাশি এক ঘাটে পানি খাওয়া শুরু করে দিয়েছে!

ফুটবলভক্তদের মনে এমন ধারণার জন্ম নিতেই পারে। নেবে না-ই বা কেন? আজীবন যে রিয়াল-বার্সাকে মাঠ ও মাঠের বাইরের লড়াইয়ে সবাই গুঁতোগুঁতি করতে দেখেছে, সে বার্সা-রিয়ালই এখন যেন জনম জনমের দুই ভাই, একমন-একপ্রাণ!

অন্তত ইউরোপিয়ান সুপার লিগ এই দুই আজন্ম শত্রুকে এক কাতারে নিয়ে এসেছে। যেখানে ‘বিদ্রোহী’ লিগে নাম লেখানো ১২ ক্লাবের মধ্যে ৮ দলই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মাফ চেয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিল, সেখানে এখনো স্রোতের বিরুদ্ধে রিয়াল-বার্সা সুপার লিগের পক্ষে দাঁড় বাইছে কেন?

ফ্লোরেন্তিনো পেরেজেরও ধকল যাচ্ছে বেশ। ভদ্রলোকের বয়স ৭৪ পেরিয়েছে, এই বয়সে সুপার লিগ নিয়ে সাক্ষাৎকার দিয়ে কূল পাচ্ছেন না। এবং প্রত্যেক সাক্ষাৎকারেই সুপার লিগ নামের নতুন কিছু সৃষ্টির আশায় ভদ্রলোক যে কতটা উদ্গ্রীব, সেটা বেশ ভালোই বোঝা যাচ্ছে।

আট ক্লাব সরে দাঁড়ালেও পেরেজ এখনো এই প্রকল্পের ব্যর্থতা মানতে রাজি নন। এমনই এক সাক্ষাৎকারে আবারও রিয়াল-বার্সার দহরম-মহরমের বিষয়টা ফুটে এল। এবার তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম স্পোর্ত।

পেরেজ নিঃসন্দেহ, বাকি আট দলের মালিক বা সভাপতিদের মতো লাপোর্তা অন্তত ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করবেন না তাঁর সঙ্গে। এই প্রতিকূল পরিস্থিতি দুজন পাড়ি দেবেন হাতে হাত ধরে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। মাঝে গুঞ্জন উঠেছিল, লাপোর্তাই সুপার লিগের ঘোষণা আসার আগে স্প্যানিশ লা লিগার সভাপতি হাভিয়ের তেবাসকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন এই বিদ্রোহী লিগের ব্যাপারে।

পরে তেবাস জানিয়ে দেন উয়েফার প্রধান সেফেরিনকে। যার কারণে উয়েফাও আগে থেকে সুপার লিগের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় পেয়ে যান। ফলাফল তো দেখাই যাচ্ছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আট দলের পিছু হটা।

রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ।

এমন কোনো গুঞ্জন স্বীকার করতে একদমই রাজি হননি পেরেজ। লাপোর্তার প্রতি তাঁর এতই বিশ্বাস! এএস-কে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, লাপোর্তা এমনটা করতেই পারেন না, ‘সত্যি বলতে কি, আমি এসব বিশ্বাস করি না। লাপোর্তা খুব ভালোভাবেই জানে, এখনকার পরিস্থিতিতে ফুটবলের প্রতি মানুষের টান ফিরিয়ে আনার জন্য, লাভের মুখ দেখার জন্য সুপার লিগই সবচেয়ে বড় সমাধান। এখনকার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যেমন, সে পরিস্থিতিতে শ্বাস নেওয়ারও জো নেই।’

যথারীতি এই সাক্ষাৎকারেও সুপার লিগের ব্যর্থতা মানতে রাজি হননি পেরেজ, ‘প্রকল্পটা এখনো আছে, প্রকল্পে যারা যারা নাম লিখিয়েছিল, তারাও আছে। আমরা শুধু নিজেদের কয়েক সপ্তাহ সময় দিয়েছি আরও চিন্তাভাবনা করার জন্য, পরিস্থিতি ঠান্ডা হওয়ার জন্য।’

পেরেজের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় কি না, সময়ই বলে দেবে!