>
- কাজানে পোল্যান্ডকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে কলম্বিয়া।
- ৪০ মিনিটে কলম্বিয়াকে এগিয়ে নেন ইয়েরি মিনা।
- ৭০ মিনিটে স্কোরলাইন ২-০ করে ফেলেন রাদামেল ফ্যালকাও।
- মিনিট পাঁচেক পর পোল্যান্ডের জালে আরও একটি গোল দেন হুয়ান কুয়াদ্রাদো।
কর্নার কিক নেওয়ার আগে দুহাতে কাজানে উপস্থিতি ১৬ হাজার কলম্বিয়ান দর্শকের দিকে হামেস রদ্রিগেজ ইঙ্গিত দিলেন—আওয়াজ তুলুন, উৎসাহ দিন। তখনো যে গোলের দেখা পায়নি কলম্বিয়া। ম্যাচটা হারলেই বিদায়, কলম্বিয়াকে জিততেই হবে। শেষ পর্যন্ত কলম্বিয়াই জিতেছে। শুধু জেতেইনি পোল্যান্ডকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে। লন্ডভন্ড করেছে লেভানডফস্কিদের স্বপ্ন! বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে পোল্যান্ডের।
আক্রমণ পোল্যান্ডই আগে শুরু করেছিল। ম্যাচের শুরুতে হাই প্রেসিং ফুটবলে ভিন্ন কিছুর আভাস দিয়েছিল পোলিশরা। কিন্তু ছন্দটা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি তারা। দ্রুতই খেলায় ফেরে কলম্বিয়া। প্রথমার্ধের সময় যত গড়িয়েছে, ততই ডানা মেলতে শুরু করে তারা। ছন্দময় ফুটবলে গতি বাড়ায়। জাঁকিয়ে বসে পোলিশদের ওপর। হোসে প্যাকারম্যানের অভিজ্ঞ চোখে পোলিশ রক্ষণের ডান প্রান্তে একটা ফাটল ধরা পড়ে। এই ফাটলটাই ভীষণ কাজে লাগিয়েছে কলম্বিয়া।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে বারবার কলম্বিয়া বক্সে ঢুকেছে ডান প্রান্ত থেকে। বিশেষ করে হুয়ান কুয়াদ্রাদো বেশ কবার চেষ্টা করেছেন, কাজ হয়নি। অবশেষে দৃশ্যপটে হামেস রদ্রিগেজ। রদ্রিগেজের মাপা ক্রসে এ বছরের শুরুতে বার্সেলোনায় নাম লেখানো ইয়েরি মিনা মাথা ছোঁয়াতেই ৪০ মিনিটে এগিয়ে যায় কলম্বিয়া। কাজানের গ্যালারিতে হলুদের ঢেউ, আর সেই ঢেউয়ে শুধু আনন্দের সুর।
তাদের এই আনন্দ বজায় থেকেছে ম্যাচের একেবারে শেষ পর্যন্ত। দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধ করবে কী, পোল্যান্ডকে দাঁড়াতেই দেয়নি কলম্বিয়া। মাঠজুড়ে নান্দনিক ফুটবলের ফুল ফুটিয়েছেন রদ্রিগেজরা। ৭০ মিনিটে হুয়ান কিন্তেরোর বাড়িয়ে দেওয়া বলে কী অসাধারণ ফিনিশিং ফ্যালকাওয়ের। যেন জ্যামিতিক সূত্র মেনে আগুয়ান পোলিশ গোল রক্ষককে হার মানিয়েছেন কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড। বিশ্বকাপে ফ্যালকাওয়ের প্রথম গোল, বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস তাঁর তো হবেই। মিনিট পাঁচেক পর কুয়াদ্রাদোর গোলটাও কি কম সুন্দর! রদ্রিগেজের বাড়িয়ে দেওয়া লম্বা পাসটা কী দারুণভাবে জড়িয়ে দিলেন জালে।
ভেঙে পড়া পোল্যান্ড এই ম্যাচে আর ফিরবে কী করে, শেষ মুহূর্তে কলম্বিয়ানদের আক্রমণ ঠেকাতেই ব্যস্ত থাকতে হলো। পোল্যান্ডের বড় ভরসা লেভানডফস্কি আজ যেন বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাসিন্দা! ফ্যালকাওরা যখন একেকটা গোল দিচ্ছিলেন, বায়ার্ন তারকার অসহায় আর হতাশামাখা মুখ বলে দিচ্ছিল, কাজানে তাঁরা নেমেছে শুধু হলুদ ঢেউ দেখতে!