আবাহনীর ম্যানেজার হয়েও জাতীয় দলের ম্যানেজার তিনি। সত্যজিৎ দাস রুপুর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে স্বার্থের সংঘাতের। নেপালের বিপক্ষে আমর্জনীয় ভুল করা গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলকে দলভুক্ত করতে তাঁর ভূমিকা ছিল বলেই অভিযোগ উঠেছে সর্বত্র। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক পুরো বিষয়টিই অস্বীকার করেছেন
সত্যজিৎ দাস রুপুকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেজায় সমালোচনা। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সাফ সুজুকি কাপে বাংলাদেশ দল গঠনে হস্তক্ষেপের। এশিয়ান গেমসে দারুণ পারফর্ম করা গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানাকে সাইড বেঞ্চে বসিয়ে শহীদুল আলম সোহেলকে খেলানো, জাতীয় দলের খেলোয়াড় নির্বাচনে আবাহনী লিমিটেডের খেলোয়াড়দের প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগের তির ছুটে যাচ্ছে তাঁর দিকে। তবে রুপু দাবি করেছেন, দল গঠন ও একাদশ নির্বাচনেও শতভাগ ভূমিকা ছিল ইংলিশ কোচ জেমি ডের।
প্রথম আলো অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন, ‘সাফে দল গঠনে আমার কোনো ভূমিকাই নেই। কোচ জেমি ডে পুরোপুরি স্বাধীনভাবে কাজ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এসব নিয়ে কথা বলছেন। আমাকে দোষারোপ করছেন। কিন্তু তাঁরা আসলে না জেনে, না বুঝে এসব বলছেন। দল গঠন তো দূরের কথা, একাদশ নির্বাচনেও আমার কোনো ভূমিকা ছিল না।’
এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের স্মরণকালের সেরা সাফল্যের অন্যতম কারিগর ছিলেন গোলরক্ষক আশরাফুল রানা। তাঁকে সাফে না খেলানো নিয়ে আগে থেকেই একটা প্রশ্ন ছিল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে শহীদুল আলম সোহেলের কারণে দূরপাল্লার শটে আকস্মিক গোল খেয়ে যাওয়ায় সেই প্রশ্নটাকে জোরালো করেছিল। আর কাল তো সোহেল রীতিমতো খলনায়ক হয়ে গেলেন হাস্যকর এক ভুলের কারণে। প্রশ্নটা উঠল তীব্রতর হয়ে। বাংলাদেশ কি তার সেরা গোলরক্ষকে ছাড়াই খেলেছে?
রুপুর দাবি অন্য রকম, ‘সোহেল এশিয়ান গেমসে ছিল না—এটা ঠিক। কিন্তু সে ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে ছুটি নিয়েছিল। কোচ জেমি ওর জন্য অনুশীলনের সূচি বানিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন। এশিয়াডের পর জেমিই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওকে নেন। সাফে খেলানোর সিদ্ধান্তটাও তাঁর।’ রুপু বাংলাদেশের বিদায়ে পুরোপুরি সোহেলকে দোষারোপ করতে চান না, ‘সোহেল যে গোলটি খেয়েছে, সেটি অমার্জনী। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এমন গোল খাওয়া রীতিমতো অপরাধ। কিন্তু বাংলাদেশ প্রথম গোল খায় ৩২ মিনিটের সময়। তারপরও খেলায় ফেরার জন্য প্রায় এক ঘণ্টা সময় আমাদের হাতে ছিল। আমাদের ফরোয়ার্ডরা মোটেও ভালো খেলেনি। গোলের সুযোগ আমরা তৈরি করতে পারিনি। তবে এটা ঠিক, গোলটি খাওয়ার আগে আমরা ভালো খেলছিলাম। নেপালের ওপর চাপও তৈরি করেছিলাম।’
তিনি নিজে বাফুফের অন্যতম সদস্য, ঘরোয়া ফুটবলে তিনি আবাহনী লিমিটেডের ম্যানেজার, সেই সঙ্গে জাতীয় দলেরও। রুপুর বিরুদ্ধে মূল সমালোচনাটা হচ্ছে, তিনি আবাহনীর ম্যানেজারের পদে থেকেই জাতীয় দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন। এতে স্বার্থের সংঘাত হওয়ার শঙ্কা থাকে না কি? জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক এ ব্যাপারে নিজের যুক্তি দিয়েছেন, ‘বাংলাদেশের ফুটবলে কোনো ক্লাবের সঙ্গে জড়িত নেই, এমন ম্যানেজার আপনি কোথায় পাবেন! অতীতেও এমন অনেকেই জাতীয় দলের ম্যানেজার হয়েছেন, যাঁরা বিভিন্ন ক্লাবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। আমি কেবল এটিই বলতে চাই, জাতীয় দলের ম্যানেজার হিসেবে আমি যেকোনো প্রকার পিছুটান, রাগ-অনুরাগের ঊর্ধ্বে উঠেই কাজ করি।’