তিন ক্লাবকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্দার সেফেরিনের
তিন ক্লাবকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্দার সেফেরিনের

ইউরোপিয়ান সুপার লিগ

রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও জুভেন্টাসের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ তুলে নিল উয়েফা

উয়েফা কি তাহলে হার মেনে নিল? নাকি অযথা ঘাড়ের ওপর ঝামেলা রাখার দায় থেকে মুক্তি চাইল?

ইউরোপিয়ান সুপার লিগ নিয়ে মেতে ওঠায় রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও জুভেন্টাসকে কড়া শাস্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল ইউনিয়ন অব ইউরোপিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (উয়েফা)। প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্পে থাকা নয়টি ক্লাবকে আর্থিক শাস্তি দিয়েছিল তারা। আর এখনো সুপার লিগের স্বপ্ন দেখা তিন ক্লাবকে আরও বড় শাস্তি দিতে চেয়েছিল ইউরোপ অঞ্চলের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবও উঠেছিল। দলগুলোকে তাদের নিজ নিজ দেশের লিগেও শাস্তি বা অবনমন করানো যায় কি না, তেমন আলোচনাও তোলার একটা চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তিন ক্লাবও বসে থাকেনি , উয়েফার এভাবে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা কেন অবৈধ হবে না, সেটা জানতে চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠিয়ে দিয়েছিল সংস্থাটির বিরুদ্ধে। সে নাটকে নতুন কিছু যোগ হলো। তিন ক্লাবের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিয়েছে উয়েফা।

জুভেন্টাস চেয়ারম্যান আন্দ্রেয়া আনিয়েল্লি (বাঁয়ে), রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ (মাঝে) ও বার্সেলোনা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা - সুপার লিগের তিন মূল হোতা

উয়েফা এখনো সুপার লিগের বিরুদ্ধে এবং এখনো ক্লাবগুলোকে শাস্তি দেওয়ার ইচ্ছা তাদের। কিন্তু তিন ক্লাবের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও, সেসব মামলা প্রত্যাহার করে নিতে হচ্ছে তাদের। মাদ্রিদের মার্কেন্টাইল আদালতের বিচারক ম্যানুয়েল রুইজ দে লারা গত সপ্তাহে উয়েফাকে পাঁচ দিনের মধ্যে সব মামলা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন। আদালতের ইচ্ছাকে সম্মান দেখিয়ে মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছে উয়েফা।

পেরেজ সুপার লিগের ব্যাপারে হাল ছাড়েননি এখনো

উয়েফা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আজ উয়েফার নিরপেক্ষ আপিল বিভাগের পাঠানো চিঠিটা গুরুত্ব দিয়ে দেখেছে উয়েফা। সেখানে বার্সেলোনা, জুভেন্টাস ও রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে তথাকথিত ‘সুপার লিগ–এর সংশ্লিষ্টতার জন্য উয়েফার আইনি কাঠামোর সম্ভাব্য লঙ্ঘনের জন্য যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা শুরু হয়েছিল, সেটা পক্ষপাতিত্ব না করে বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে।’

সুপার লিগের ঘোষণায় রিয়াল মাদ্রিদ, জুভেন্টাস ও বার্সেলোনা ছাড়াও আতলেতিকো মাদ্রিদ, ইন্টার মিলান, এসি মিলান, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি ও টটেনহাম ছিল। কিন্তু এই লিগের ঘোষণা আসার পরই ফুটবল সংশ্লিষ্ট সবাই ও সমর্থকদের ক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠার পর পিছু হটে বাকি নয় ক্লাব।

বার্সেলোনা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তাও সুপার লিগ চালু করার ব্যাপারে উয়েফার সিদ্ধান্তের বিরোধী

গত মে মাসে সুপার লিগের বাকি নয় দলকে ১ কোটি ৫০ লাখ ইউরো জরিমানা করেছিল উয়েফা। এ ছাড়াও উয়েফার প্রতিযোগিতা থেকে এই মৌসুমে ক্লাবগুলোর প্রাপ্ত আয়ের ৫ শতাংশ কেটে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

গতকাল সোমবার উয়েফা সব আইনি ব্যবস্থা তুলে নেওয়ার ফলে নয় ক্লাবকে আর জরিমানা দিতে হবে না বলে জানিয়েছে স্কাই নিউজ। তবে নতুন করে কোনো বিদ্রোহী লিগ চালুর চেষ্টা করা হলে বা ইউরোপিয়ান সুপার লিগ আবার জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করলে আবার আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে উয়েফা।