ঢাক ঢাক গুঁড় গুড় করতে করতে অবশেষে এসেই গেল ইউরোপিয়ান সুপার লিগ। কাল এই লিগ চালুর ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপের ১২টি বড় ক্লাব। উয়েফার চোখ রাঙানি উপেক্ষা করেই নিজেদের মধ্যে খেলতে চায় তারা। ইউরোপের ছোট ক্লাবগুলোকে বাদ দিয়ে বড় বড় ক্লাবগুলোর মধ্যে এই প্রতিযোগিতার ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরেছেন সুপার লিগের প্রথম সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন, রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি!
উয়েফাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কাল ১২টি ক্লাব একযোগে নতুন প্রতিযোগিতা চালুর ঘোষণা দেয়। স্পেন থেকে রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও আতলেটিকো মাদ্রিদ। ইংল্যান্ড থেকে লিভারপুল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি, আর্সেনাল ও টটেনহাম। ইতালি থেকে রয়েছে ইন্টার মিলান, এসি মিলান এবং জুভেন্টাস। আলাদা দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে ‘হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে’ ভিত্তিতে খেলবে এসব ক্লাব। দর্শকেরা প্রতি মৌসুমেই তো বড় ক্লাবগুলোর মুখোমুখি হওয়া দেখতে চান। চ্যাম্পিয়নস লিগ সেই দাবি পুরোপুরি মেটাতে পারছে কোথায়! এর সঙ্গে আর্থিক বিষয়টিও মাথায় রেখে নতুন এই লিগ চালু করা হবে—যদিও উয়েফা কিংবা ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের বোর্ডগুলো বিষয়টি মোটেও ভালো চোখে দেখছে না। এই সুপার লিগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্লাব ও খেলোয়াড়দের নিষিদ্ধ করার চোখ রাঙানি দিয়েছে উয়েফা।
এদিকে সুপার লিগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে প্রতিযোগিতাটির ইতিবাচক দিক নিয়ে কথা বলেছেন পেরেজ, ‘আমরা ফুটবলের সব পর্যায়েই সাহায্য করব এবং খেলাটির যে অবস্থানে থাকা উচিত সেখানে পৌঁছে দেব। ফুটবল একমাত্র বৈশ্বিক খেলা যেখানে ভক্তসংখ্যা চার শ কোটি বেশি। বড় ক্লাব হিসেবে তাদের চাহিদার প্রতি সাড়া দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।’ সুপার লিগে পেরেজ সহসভাপতি হিসেবে পাচ্ছেন জুভেন্টাসের সভাপতি আন্দ্রেয়া আগনেল্লিকে। জুভেন্টাস সভাপতির যুক্তি, ‘আমাদের ১২টি প্রতিষ্ঠাতা ক্লাবের বিশ্বজুড়ে কয়েক শ কোটি সমর্থক আছে, ট্রফিসংখ্যা ৯৯টি। এই ক্রান্তিকালীন সময়ে আমরা ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতা সংস্কার করেছি, অদূর ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে খেলাটিকে একটি টেকসই জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। এতে ভক্ত থেকে অপেশাদার খেলোয়াড়েরাও নিয়মিত বড় ম্যাচ দেখার মাধ্যমে ফুটবলের প্রতি ভালোবাসার খোরাক মেটাতে পারবেন।’
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের যুগ্ম-মালিক জোয়েল গ্লেজারও ইউরোপিয়ান সুপার লিগের পক্ষে। বিবিসি তাঁর উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে, ‘মৌসুমজুড়ে বিশ্বের সেরা ক্লাব ও খেলোয়াড়দের নিয়মিত লড়াইয়ের মাধ্যমে ইউরোপিয়ান ফুটবলে নতুন এক অধ্যায় চালু করবে সুপার লিগ। বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা, আর্থিক সমর্থন পাবে সবাই।’