আজ জেদ্দায় বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় মুখোমুখি হবে রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালের সুবাদে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে এই প্রথম ইউরোপের বাইরে অনুষ্ঠিত হবে কোনো মাদ্রিদ ডার্বি
জিনেদিন জিদান নিজেই স্বীকার করেছেন, জেদ্দায় আজ রাত ৯টায় ফাইনালে খেলার সুযোগ পাওয়াটা ভাগ্যের ব্যাপার। ভ্যালেন্সিয়াকে অনায়াসে ৩-১ হারানোর পর ভাগ্যের প্রসঙ্গ আসার কথা নয়। কিন্তু জিদানের এমন বিনয়ের কারণ আছে। কারণ, স্প্যানিশ সুপার কাপের পুরোনো নিয়মানুযায়ী আজ ফাইনালে থাকার কথা ছিল কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন ভ্যালেন্সিয়া ও লা লিগা চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনার। কিন্তু নতুন নিয়মে সেমিফাইনালে দুই দলই বিদায় নিয়েছে। আর সৌদি আরবে প্রথম স্প্যানিশ সুপার কাপ রূপ নিয়েছে মাদ্রিদ ডার্বিতে।
রিয়ালের প্রতিপক্ষ অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ফাইনাল যাত্রা সহজ ছিল না। বার্সেলোনার বিপক্ষে ৮১ মিনিট পর্যন্ত ২-১ গোলে পিছিয়ে থাকা সিমিওনের দল শেষের চমকে মাঠ ছেড়েছে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে। ২০১৬ সালের পর এই প্রথম বার্সেলোনাকে হারাতে পারল অ্যাটলেটিকো। ফলে আজকের ম্যাচে কাউকেই এগিয়ে রাখা যাচ্ছে না।
স্প্যানিশ সুপার কাপে সর্বশেষ মুখোমুখি লড়াইয়ে জয় পেয়েছে অ্যাটলেটিকো। দুই লেগের সে ম্যাচে ২-১ ব্যবধানে আনচেলত্তির ইউরোপ সেরা দলকে হারিয়েছিল সিমিওনের দল। এমনকি সর্বশেষ যে ফাইনালে দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল, সেবারও শেষ হাসি লাল সাদাদের। ২০১৮ ইউরোপিয়ান সুপার কাপে রিয়ালকে অতিরিক্ত সময়ে ৪-২ গোলে হারিয়েছিল অ্যাটলেটিকো। তবে রিয়ালের ডাগ আউটে জিদানের উপস্থিতি রিয়ালের সাহস বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই কোচের অধীনে এখনো যে কোনো ফাইনাল হারেনি লস ব্লাঙ্কোরা।
গত দু বছরে দুই দলের পরিসংখ্যানও আলাদা করতে দিচ্ছে না কাউকে। পাঁচবার মুখোমুখি হয়ে দুই দলই পেয়েছে একটি করে জয়। বাকি তিনবারই ম্যাচ শেষ হয়েছে সমতায়। আজকের ম্যাচ নিয়ে তাই বাড়তি উত্তেজনা বোধ করছেন সিমিওনে, ‘লা লিগায় আমরা যে সব ম্যাচ খেলি তার সঙ্গে এ ম্যাচের কোনো তুলনা হয় না। এখানে শুধু একটি ফলই পাওয়া সম্ভব এবং একবার হারলে আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই। আগামীকালের ম্যাচটি আমাদের জন্য খুব ভালো সুযোগ।’
এত আয়োজন করে স্প্যানিশ সুপার কাপ নিজেদের দেশে আয়োজন করার পেছনে সৌদি আরবের একটি লক্ষ্যই কাজ করছিল। আর তা হলো নিজেদের মাঠে একটি বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচ দেখা। প্রথমবার অন্তত সে ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে না। জিদান অবশ্য অ্যাটলেটিকোকেই বার্সেলোনার সম্মান দিচ্ছেন, ‘ওরা এমন এক দল যারা সব সময় তাদের শক্তি দেখিয়েছে। তারা রক্ষণে ভালো, কিন্তু আক্রমণেও ভালো। বার্সেলোনা ও অ্যাটলেটিকো দুই দলই কঠিন প্রতিপক্ষ। ফলে আমাদের সব সময় ভালো খেলতেই হবে।’
আজকের ম্যাচে দুই দলের প্রত্যাশিত একাদশ অবশ্য আগ্রহ বাড়াচ্ছে। আক্রমণের তিন প্রথম পছন্দকে ছাড়া সুপার কাপে এসেছেন জিদান। সে কারণে সেমিফাইনালে পাঁচ মিডফিল্ডার নিয়ে নেমেছেন এবং খেলা নিয়ন্ত্রণ করে ম্যাচ বের করে এনেছেন। আজও সেটাই হওয়ার সম্ভাবনা। শুধু পাঁচ মিডফিল্ডারের মধ্যে মদরিচের বদলে হামেসকে নামানোর সম্ভাবনা দেখছেন অনেক সাংবাদিক। আর আক্রমণে ইয়োভিচ নিজের কাজটা ভালোভাবে করলেও তাঁর জায়গায় রদ্রিগোকে দেখার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশ্লেষকেরা। আগের ম্যাচে বদলি নামা মার্সেলোর আজও একাদশে থাকার সম্ভাবনা কম।
রিয়ালের সম্ভাব্য একাদশ: কোর্তোয়া, কারভাহাল, রামোস, ভারানে, মেন্দি, ক্রুস, কাসেমিরো, ভালভার্দে, ইসকো, মদরিচ, ইয়োভিচ।
চোট ঝামেলা বাঁধিয়েছে অ্যাটলেটিকো দলেও। লেমার ও ডিয়েগো কস্ত অবশ্য যে ফর্মের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তাতে আজ সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু গত ম্যাচে নেমে খেলা বদলে দেওয়া কোকে চোট পেয়েছেন। ফলে আগের ম্যাচের মূল একাদশকেই হয়তো নামাতে হবে সিমিওনেকে।
অ্যাটলেটিকোর সম্ভাব্য একাদশ: অবলাক, ট্রিপিয়ার, হিমিনেজ, ফেলিপে, লোদি, থমাস, হেরেরা, সাউল, কোরেয়া, ফেলিক্স, মোরাতা