গতকাল স্তাদ দে ফ্রান্সে অনেকেই ছিলেন। জিনেদিন জিদান, আবিদাল, রাউল গঞ্জালেজ, অলিভার কান, কাকা, কাফু—তালিকাটা চাইলেই আরও অনেক লম্বা করা যাবে। বর্তমান খেলোয়াড়দের মধ্যে মেসুত ওজিলও ছিলেন। অনেকে ভেবেছিলেন আরেকজনকে দেখা যাবে, কিলিয়ান এমবাপ্পে। প্যারিসে চ্যাম্পিয়নস লিগের খেলা হচ্ছে। ঘরের মাঠে নিজের প্রিয় দল খেলছে, এমনিতেই যাওয়ার আগ্রহ থাকে। আর এই মৌসুমে দলবদলে রিয়ালকে প্রত্যাখ্যান করার কারণ ব্যাখ্যার পর বলেছিলেন ফাইনালে রিয়ালের এক নম্বর সমর্থক হবেন তিনিই।
কাল অবশ্য মাঠে দেখা যায়নি এমবাপ্পেকে। মাঠে না গেলেও টিভির পর্দায় নিশ্চয়ই খেলা দেখেছেন। দেখেছেন কীভাবে তাঁর বাড়ির উঠান থেকে লিভারপুলকে ১-০ গোলে হারিয়ে আরেকটি চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি নিয়ে যাচ্ছে রিয়াল। যেটা গত পাঁচ বছরে বহু চেষ্টাতেও করতে পারেননি পিএসজিতে। কিছুটা হলেও ঈর্ষা নিশ্চয়ই হয়েছে। স্টিভেন জেরার্ডের অন্তত সেটাই মনে হচ্ছে।
এক বছর ধরে চলা নাটকীয় দলবদলের শেষ হয়েছে এমবাপ্পের পিএসজিতে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্তে। রিয়ালকে নিজের স্বপ্নের ক্লাব বলার পরও এমবাপ্পের এমন সিদ্ধান্তের ফুটবলীয় ব্যাখ্যা কেউ দাঁড় করাতে পারেননি। এমবাপ্পে বলেছেন, নিজের ঘরে থাকতে চান, সেখানে ইতিহাস গড়তে যান। এই যুক্তির বাইরে আর্থিক দিকটা আর খোলাসা করে বলেননি এমবাপ্পে। বাজারে গুঞ্জন পিএসজির সঙ্গে তিন বছরের নতুন চুক্তি করায় বোনাস হিসেবে ৩০ কোটি ইউরো এবং বাৎসরিক বেতন কর বাদেই ১০ কোটি ইউরো (মতান্তরে ১৫ কোটি) পাবেন এমবাপ্পে।
গতকাল বিটি স্পোর্টের হয়ে ম্যাচ বিশ্লেষণ করতে স্তাদ দে ফ্রান্সে ছিলেন জেরার্ড। লিভারপুল কিংবদন্তি ফাইনাল শেষে ম্যাচ বিশ্লেষণে আচমকা এমবাপ্পে প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন, ‘সে এখন নিশ্চয়ই চিন্তা করছে, আমি আগের চেয়ে বেশ ধনী! কিন্তু ফুটবলীয় দিক থেকে, আমার মনে হয় আজ (গতকাল) রাতে সে যদি ম্যাচটা দেখে থাকে, চুপচাপ বসে ভাববে, “আমি ১৪টি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছি এমন এক ক্লাবে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছি”, এবং তারা আবার ফিরে আসবে কারণ, তারা সেরা খেলোয়াড়দেরই দলে টানছে।’
এমবাপ্পেকে দলে টানতে ব্যর্থ হলেও রিয়ালের সাফল্যযাত্রা যে সহসা থামছে না, সেটা কাল রাতেই বোঝা গেছে। জেরার্ডের ধারণা, রিয়াল তাদের ট্রফি কেবিনেটে ভিড় আরও বাড়াবে, ‘ওরা জানে কীভাবে কী করতে হয়। ওদের মধ্যে জেতার সেই দাবি আছে, ওরা আরও অনেক কিছু জিতবে।’
এ কারণেই রিয়াল মাদ্রিদকে কীভাবে এমবাপ্পে ফিরিয়ে দিলেন, সেটা মাথায় আসছে না জেরার্ডের, ‘ওদের খেলোয়াড় টানার সেই ক্ষমতা আছে, তাই না? বিশ্বজুড়ে এই খেলায় ওরা পরাশক্তি, ওদের খেলোয়াড় টানার সে ক্ষমতা আছে। খেলোয়াড় কেনার ব্যাপারে রিয়াল মাদ্রিদের যে শক্তি, তারা যখন আপনাকে ডাকে, ৯৯ ভাগ সময়ই আপনি যাবেন।’
জেরার্ড নিজে কিন্তু দুবার রিয়ালের ডাক উপেক্ষা করেছেন। তবে তাঁর ক্ষেত্রে লিভারপুলের প্রতি ভালোবাসাটাই মূল কারণ ছিল।