>আইসল্যান্ডের বিপক্ষে পেনাল্টি মিস করেছেন, ১১টি শট নিয়েও গোল পাননি। হয়েছেন সমালোচিতও। আজ সবকিছুর জবাব দেবেন মেসি?
লুইজি জিজি রিভা এখন কী করছেন, কে জানে!
এই বছর দুয়েক আগেও ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। গুগলে খুঁজে যতটুকু বোঝা গেল, আপাতত পুরোপুরি অবসরজীবন কাটাচ্ছেন ৭৩ পেরোনো কিংবদন্তি ইতালিয়ান স্ট্রাইকার। তা অবসরে থাকলেও তো ফুটবলের খোঁজখবর রাখার কথা ইতালির জার্সি গায়ে সর্বোচ্চ গোলদাতার (৪২ ম্যাচে ৩৫ গোল)। আর বিশ্বকাপ যেহেতু চলছে, সুযোগ পেলে ম্যাচও হয়তো দেখছেন ইতালিয়ান স্ট্রাইকারদের জন্য চিরকালীন মানদণ্ড হয়ে যাওয়া জিজি রিভা। নাকি ইতালি এবার বিশ্বকাপে নেই বলে বিশ্বকাপ থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছেন! ইতালি না থাকার পরেও যে তাঁর কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন লিওনেল মেসি, সেটা কি জানেন রিভা?
কীভাবে মনে করালেন, সেটিও তাহলে বলে ফেলা যাক। এবার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার প্রথম ম্যাচটায় আইসল্যান্ডের গোলমুখে মোট ১১টি শট নিয়েছেন মেসি, লক্ষ্যে পৌঁছায়নি একটাও! বিশ্বকাপের এক ম্যাচে গোলমুখে সবচেয়ে বেশি শট নিয়ে গোল না পাওয়ার কীর্তিটা রিভার। ১৯৭০ বিশ্বকাপে ইসরায়েলের জালের দিকে ইতালিয়ান স্ট্রাইকার ১৩টি শট নিয়েছিলেন, গোল পাননি একটিতেও। এরপর বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচে রিভার চেয়ে বেশি শট নিয়ে গোলহীন থাকেননি আর কেউ।
আর্জেন্টিনার প্রথম ম্যাচে কোন খেলোয়াড়ের কী পরিসংখ্যান, তা জানতে তাঁর নামের ওপর ক্লিক করুন
ইসরায়েলের বিপক্ষে ওই ম্যাচের পর রিভার সমালোচনা হয়েছিল অনেক। এখন হচ্ছে মেসিরও। ওই সমালোচনার জবাব রিভা কীভাবে দিয়েছিলেন, জানেন? মেক্সিকোর বিপক্ষে ঠিক পরের ম্যাচটাতেই জোড়া গোল করে। মেসির পরের ম্যাচটা আজ, ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে। আজ কি রিভা হবেন মেসি?
আর্জেন্টিনা নিশ্চয়ই মনে-প্রাণে চাইছে—প্রশ্নটার উত্তর ‘হ্যাঁ’ হোক। শুধু চাওয়া নয়, অধিনায়কের ওপর যে তাঁর সতীর্থদের আস্থা আছে শতভাগ, সেটাও গত কয়েক দিনে বলছেন অনেকে। ডিফেন্ডার ক্রিস্টিয়ান আনসালদি যেমন বলছেন, ‘মেসি কী করতে পারে, সেটা আমরা সবাই জানি। সে শুধু মাঠেই বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় নয়, মাঠের বাইরেও বিশ্বসেরা।’
মাঠের বাইরের মেসির ওপর এত আস্থারও একটা ব্যাখ্যা আছে। আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটা না জেতার অনেক কারণ। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণটা হচ্ছে মেসির পেনাল্টি মিস করা। ম্যাচ শেষে মেসিও অন্য সব কারণ না খুঁজে নিজের ব্যর্থতাকেই বড় করে দেখেছেন। ১-১ ড্রয়ের দায়টা নিজের কাঁধে নিয়ে সতীর্থদের শান্ত থাকতে বলেছেন। পরের ম্যাচটা জেতার জন্য নিজের সবটুকু উজাড় করে দেওয়ার কথা বলেছেন। তাই তো আরেক আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার গ্যাব্রিয়েল মারকাদো মেসির সেদিনের পেনাল্টি মিসটাকে বড় করে দেখতেই রাজি নন, ‘ও এর আগে হাজারটা পেনাল্টি নিয়েছে এবং হাজারটা গোল করেছে। সুতরাং সে একটা পেনাল্টি মিসের পর এটা নিয়ে কথার বলার আমি কে!’
আর সতীর্থরা তো জানেনই, শুধু তাঁদের সামর্থ্য দিয়ে বিশ্বকাপ জেতাটা কঠিন। জিততে হলে মেসিকে লাগবে। নইলে কি আর পাওলো দিবালা বলেন, ‘মেসির চেয়ে বেশি আর কেউ মনে হয় না এটা (বিশ্বকাপ) চায়। আমরা সবাই ওকে সাহায্য করতে এসেছি। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় আমাদের দলে, সেই সুযোগটা আমাদের নিতে হবে। ওর কোনো বিকল্প নেই। শুধু আর্জেন্টিনা দলে না, বিশ্বের যেকোনো দলেই।’
এই যে এত আস্থা, এত বিশ্বাস, এর প্রতিদান দিতে হলেও আজ মেসিকে রিভা হতেই হবে!