>গত আগস্টেই থিম্পুতে ভারতের কাছে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবলের শিরোপা খোয়ানোর হতাশা ভুলতে চায় অনূর্ধ্ব-১৮ মেয়েদের দল।
আগের মাসেই ভুটানের মাটিতে স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পুড়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। ১৮ আগস্ট সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবলের ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে যায় মারিয়া মান্দারা। মাঝে পেরিয়ে গেছে ৪৮ দিন। থিম্পুর সেই চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামেই আজ আরেকটি ফাইনালে খেলবে বাংলাদেশ। এবার প্রথম সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ টুর্নামেন্টের ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নেপাল। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাতটায় শুরু হবে খেলা।
সব কটি ম্যাচ জিতেই ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে দিয়েছে ২৩ গোল। এই নেপালকে হারিয়েই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। নেপাল ৩ ম্যাচে করেছে ১৪ গোল। নেপালের একমাত্র পরাজয় বাংলাদেশের বিপক্ষে। নেপালের সঙ্গে বয়সভিত্তিক ফুটবলে বাংলাদেশের সাফল্য শতভাগ। ২০১৭ সালে ঢাকায় অনূর্ধ্ব-১৫ সাফে ৬-০ গোলে হারায় নেপালকে, একই টুর্নামেন্টে গত আগস্টে ভুটানে হারায় ৩-০ গোলে। এর আগে কাজাখস্তানে ২০১৬ এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালকে হারায় ১৪-০ গোলে, নেপালে ২০১৫ সালে হারায় ১-০ গোলে। ২ অক্টোবর সর্বশেষ সাক্ষাতেও জেতে ২-১ গোলে।
অবশ্য অতীতের পরিসংখ্যানে খুব একটা আগ্রহী নন বাংলাদেশের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। তাঁর চোখে স্বপ্ন এখন একটাই, ভুটান থেকে ট্রফি নিয়ে ফেরা, ‘গত মাসে এখান থেকে আমাদের মেয়েরা ট্রফি নিয়ে ফিরতে পারেনি। ওটা মেয়েদের মনে আছে। ওই ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বের প্রথম রাউন্ডে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এখানেও চ্যাম্পিয়ন হতে চাই আমরা।’
টুর্নামেন্টে একটু একটু করে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন ট্রফিটা হাতছোঁয়া দূরত্বে। মেয়েরা আত্মবিশ্বাসী বলেই দারুণ আশাবাদী কোচ, ‘ভুটানে আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল ফাইনালে ওঠা। লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। এখন ফাইনালটা জিততে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টাই থাকবে।’
গ্রুপ পর্বে নেপালের সঙ্গে জিতলেও শেষ মিনিটে গোল খেয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে নেপালের আক্রমণে বলতে গেলে দিশেহারা হয়ে পড়ে কৃষ্ণা-সানজিদারা। নেপালের বিপক্ষে দলকে আজ তাই দারুণভাবে সতর্ক করে দিচ্ছেন ছোটন, ‘নেপাল যথেষ্ট শক্তিশালী দল। ওদের একটুও খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। ভারতের সঙ্গে ওরা ভালো খেলেই জিতেছে। তবে মেয়েরা সাম্প্রতিক সময়ে যেমন ফুটবল খেলছে, তেমনটা খেলতে পারলে আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব।’
দলের আক্রমণভাগের সেরা অস্ত্র সিরাত জাহান স্বপ্না নেপাল ম্যাচে পাওয়া হাঁটুর চোট কাটিয়ে উঠেছেন। বাংলাদেশের জন্য স্বস্তির খবর। টুর্নামেন্টের ৮ গোল করা স্বপ্নাকে সেমিফাইনালে রাখা হয় বিশ্রামে। তবে আজ তাঁর একাদশে থাকাটা নিশ্চিত করেছেন কোচ, ‘স্বপ্না আমাদের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। ও গতি দিয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণে এবার আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কোনো ঝুঁকি নিতে চাইনি বলেই সেমিফাইনালে ওকে খেলাইনি। কাল (আজ) আশা করি পুরো ফিট স্বপ্নাকে পাওয়া যাবে। এই দলের অন্য খেলোয়াড়দের মধ্যেও উনিশ-বিশ ব্যবধান। আশা করি সবাই ভালো খেলবে।’
গত বছর ডিসেম্বরে ঢাকায় মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার বয়সভিত্তিক ফুটবলের আরেকটি মাহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে থাকা মোসুমী-সানজিদাদের উৎসাহ দিতে এরই মধ্যে ভুটান পৌঁছেছেন বাফুফের মহিলা কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ। শুধু বাফুফের এই কর্মকর্তাকে নয়, পুরো দেশবাসীকেই নিশ্চয় হতাশা উপহার দেবে না মেয়েরা।