>আজ বেলজিয়ামের বিপক্ষে জিতলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে ইংল্যান্ড। তবে এই গ্রুপ থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন না হওয়াই ভালো। গ্রুপ রানার্সআপ হলেই বরং সুবিধা বেশি। এ নিয়ে ইংলিশ মিডিয়ায় বেশ কিছুদিন ধরেই নানা সমীকরণ
১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর আর কখনো বিশ্বকাপ জেতেনি ইংল্যান্ড। সেমিফাইনালেই উঠতে পেরেছে কেবল একবার, ১৯৯০ বিশ্বকাপে। এরপর প্রতি বিশ্বকাপেই ব্রিটিশ মিডিয়া ইংল্যান্ডকে নিয়ে হইচই করলেও ফলাফল মেলেনি। এবার তাদের নিয়ে তেমন উচ্চবাচ্য শোনা যায়নি। অথচ রাশিয়ায় মনমাতানো ফুটবলই খেলছে ইংল্যান্ড। তিউনিসিয়া ও পানামাকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনাও জাগিয়েছে। আজ শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষ বিশ্বকাপের কালো ঘোড়া বেলজিয়াম।
এখন পর্যন্ত যা সমীকরণ, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলেই বরং নকআউটে তুলনামূলক কঠিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এ কারণে ইংল্যান্ড-বেলজিয়াম দুই দলই রানার্সআপ হতে চাইতে পারে। বাকি গ্রুপগুলোতে যখন দাঁত কামড়ানো লড়াই চলছে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে শেষ ম্যাচ জেতার; একেবারেই ভিন্ন ছবি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের শেষ অঙ্কে। এই ম্যাচে হারলেই বরং লাভ।
শুধু হেরে যাওয়া নয়, এই ম্যাচে ইচ্ছা করে হলুদ কার্ড দেখারও একটা সমীকরণ এসে দাঁড়িয়েছে। জি গ্রুপে ইংল্যান্ড-বেলজিয়াম দুই দলের পয়েন্ট সমান। গোল ব্যবধান সমান। গোল করার আর গোল খাওয়ার সংখ্যাও সমান! আজ ইংল্যান্ড-বেলজিয়াম ম্যাচটা ড্র হলে, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নির্ধারিত হবে হলুদ কার্ডের সংখ্যায়! যে কম হলুদ কার্ড দেখেছে, সে-ই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। এবার ইংল্যান্ড হলুদ কার্ড দেখেছে দুটি, বেলজিয়াম তিনটি। কোনো কোনো ইংলিশ মিডিয়ায় লেখালেখি হচ্ছে, ইংল্যান্ডের উচিত হবে হিসাব করে হলুদ কার্ড দেখা! যেন ম্যাচ ড্র হলেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে না হয়।
ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেট অবশ্য এসব হিসাব-নিকাশ উড়িয়ে দিয়েছেন। পরের রাউন্ডে ইংল্যান্ড সহজ প্রতিপক্ষ পাবে কি না, এমন ভাবনাই নাকি তাঁর হিসাবে নেই, ‘বিশ্বকাপে সহজ প্রতিপক্ষ বলে কিছু নেই। বিশ্বকাপ জিততে হলে আপনাকে যেকোনো দলকে হারানোর ক্ষমতা ও মানসিকতা থাকতে হবে। আমরাও এর ব্যতিক্রম নই। আমরা দ্বিতীয় পর্বে উঠেছি, তাতে আমি খুশি। সামনে যে-ই আসুক, তাদের হারানোর জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’
দলকে জয়ের ধারায় রাখার সুবিধাকেই বরং বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন সাউথগেট। এ কারণে ইংল্যান্ড সব সময়ই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলবে বলে মন্তব্য তাঁর, ‘আমরা বিশ্বকাপে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে চাই। দেখাতে চাই, যেকোনো দলকে হারানোর সামর্থ্য আমাদের আছে। আমরা কাউকে ভয় পাচ্ছি না।’
সাউথগেট নিজের এই আত্মবিশ্বাস ইংল্যান্ডের পুরো দলের মধ্যেই ছড়িয়ে দিয়েছেন। যেটিকে পুঁজি করে ৪২ বছরের বিশ্বকাপ শিরোপা-খরা কাটানোর স্বপ্ন দেখছে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় রাউন্ডে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ হতে পারে সেনেগাল, জাপান কিংবা কলম্বিয়া। অবশ্য ইংল্যান্ড এখন পর্যন্ত খেলেছেই পানামা-তিউনিসিয়ার বিপক্ষে। আজই বোঝা যাবে তাদের আসল শক্তি কতটা। এই ম্যাচটা হেলায় হারতে চাইবেন না সাউথগেট।