>রোমার সঙ্গে মৌখিক চুক্তির পরেও বার্সেলোনার হয়ে সাক্ষর করেছেন ম্যালকম। বার্সেলোনা কীভাবে ম্যালকমকে ছিনিয়ে নিল, তাই বলেছেন রোমার স্পোর্টিং ডিরেক্টর রবার্তো মঞ্চি।
কথাবার্তা সবকিছু চূড়ান্ত, শুধুমাত্র কাগজপত্রে সাক্ষর করা বাকি, বিমানবন্দরে রোমা সমর্থকরাও বরণডালা সাজিয়ে অপেক্ষায়। কিন্তু কোথায় ম্যালকম, তাঁর আসার কোনো নাম-গন্ধ নেই! বলতে গেলে রোমার মুখের খাবার (ম্যালকম) এভাবেই ছিনিয়ে নিয়েছে বার্সেলোনা। কাজটা খুব একটা সহজ ছিল না। এই কঠিন কাজটাই কীভাবে হয়েছে তা বর্ণনা করেছেন রোমার স্পোর্টিং ডিরেক্টর রবার্তো মঞ্চি।
রবার্তো মঞ্চি ব্যাপারটা জানালেন রোমার অফিশিয়াল ওয়েবসাইটেই, ‘ম্যালকমের বিষয়টা বলা হয়তো সহজ, কিন্তু বোঝানো অনেক কঠিন। আমরা সবদিক দিয়ে ম্যালকমের মতোই একজন খেলোয়াড়কেই খুঁজছিলাম।’
মঞ্চি বলেন, ‘আমরা বোর্দো এবং ম্যালকমের এজেন্টের সঙ্গে এক সপ্তাহ ধরে কথাবার্তা চালিয়েছি। তিন-চার দিন আলোচনার পর সোমবার ইতালিয়ান সময় বিকাল ৫টার দিকে শেষ কথা হলো, ক্লাব তাঁর চুক্তির অঙ্ক নির্ধারণ করে আর স্বাস্থ্য পরীক্ষার অনুমতিও দেয়। সোমবার রাত ৯টার এক ফ্লাইটে রওনা হয়ে রাত ১১টায় ম্যালকমের রোমে পৌঁছানোর কথা ছিল। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বোর্দো প্রেসিডেন্ট স্টিফেন মার্টিন ফোন করে বলেন, এই দলবদল নিয়ে একটি অফিশিয়াল বিবৃতি দিলে ভালো হয়, অনেক কানাঘুষা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন নিয়মের কারণে সেটি আমাদের জন্য ভালো হতো না, পরে তারাই এক টুইটে চুক্তির কথা জানিয়ে দেয়।’
ম্যালকমের দলবদল নিয়ে পরবর্তী ঘটনাগুলো মঞ্চির ভাষায়, ‘আমরাও তখন একইভাবে আমাদের অ্যাকাউন্ট থেকেও টুইট করলাম। সবকিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু টুইটের আধ ঘণ্টা পরে জানতে পারলাম বার্সেলোনাও ম্যালকমের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে। হ্যাঁ, ম্যালকমের ব্যাপারে আগে থেকে অনেকে ক্লাবেরই আগ্রহ ছিল, যার মধ্যে বার্সেলোনাও ছিল। যে কারণে কাজটা দ্রুত করতে চাচ্ছিলাম এবং করেও ফেলেছিলাম প্রায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর ম্যালকমের প্রতিনিধি আমাকে ফোনে জানাল যে বোর্দো থেকে ম্যালকমের রোমে আসার অনুমতি বাতিল করা হয়েছে।’
ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারের প্রতিনিধির কথা শুনেই মার্টিনকে ফোন করেন মঞ্চি, ‘মার্টিনকে ফোন করলে তিনি বললেন, বার্সেলোনা থেকে আমাদের (রোমা) তুলনায় আরও আকর্ষণীয় প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে; যদি আমরা টাকার অঙ্ক না বাড়াই তবে ওঁকে (ম্যালকম) পাচ্ছি না। আমি তাঁকে বলি আমাদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং তাঁদের উচিত এটা সম্মান করা। তিনি পাল্টা বললেন, যেহেতু লিখিত কোনো চুক্তি হয়নি সেহেতু কোনো কিছুই চূড়ান্ত নয়।’
মঞ্চি এরপর ঘটনাটা রোমা সভাপতিকে জানান। তাঁর ভাষায়, ‘আমি তৎক্ষণাৎ ক্লাব প্রেসিডেন্টকে কথাটি জানাই। তিনি বললেন, প্রয়োজনে বার্সেলোনার চেয়ে বেশি টাকা দিয়ে হলেও কিনতে। আমার তাতে সায় ছিল না। কিন্তু প্রেসিডেন্ট এ কাজটাই করতে বললেন। বোর্দো প্রেসিডেন্টকে কথাটা জানানোর পর তিনি বললেন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দিতে। আমরা সবকিছু করে রাত ১১টার দিকে পাঠিয়ে দিলাম। বোর্দো প্রেসিডেন্ট জানালেন, সবকিছু ঠিক থাকলে মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে কাগজপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হবে আর সেদিন সন্ধ্যায় ম্যালকম রোমে যাবে। কিন্তু আজ (মঙ্গলবার) সকালে ম্যালকমের প্রতিনিধি ফার্নান্দো গার্সিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানলাম যে দুপুর ১২টায় বোর্দো প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় পর সবকিছু নিশ্চিত হবে।’
পরের ঘটনাগুলো মঞ্চি জানিয়েছেন এভাবে, ‘এর পর আমি জানতে পারলাম বোর্দো আরও বেশি টাকা চাচ্ছে, কারণ বার্সেলোনা আরও বেশি টাকা দিতে চাচ্ছিল। আমি বললাম যথেষ্ট হয়েছে, আমরা আর এই দলবদলে থাকতে চাই না। গতকাল নতুন অফার দিয়েছিলাম কারণ আমাদের প্রেসিডেন্ট চাচ্ছিলেন চেষ্টা করে দেখতে। কিন্তু এভাবে কোনো খেলোয়াড় কিনতে আমরা আগ্রহী না। এভাবেই আমাদের দিক থেকে ম্যালকমের ব্যাপারটার সমাপ্তি ঘটল। এ ব্যাপারে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায় কিনা সেটা দেখছি আমরা। এটা সত্যি যে কোনোপ্রকার আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি। কিন্তু দুই পক্ষের মধ্যে অনেক কথাবার্তা চালাচালি হয়েছে, সেগুলো বিবেচনা করা যেতে পারে।’